আবহাওয়া ডেস্ক: বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় মহাসেন উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে সরে বাংলাদেশ উপকূলের ৮০০ কিলোমিটারের মধ্যে চলে আসায় বুধবার সকালে চট্রগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ঘূর্ণিঝড় মহাসেন ধেয়ে আসায় সতর্কতা হিসেবে চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দর বিকাল থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে কক্সবাজার বিমানবন্দর ও চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের কাজ।
সতর্কতার অংশ হিসেবে বন্দরের জেটিতে জাহাজ থেকে পণ্য ওঠানো নামানোর কাজও বন্ধের পাশাপাশি জেটিতে থাকা জাহাজগুলো সমুদ্রে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ৭ নম্বর বিপদ সংকেত জারির পর দুপুরে জরুরি বৈঠক ডেকেছে ঘূর্ণিঝড় মোকবেলায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গঠিত সমন্বিত কমিটি। সতর্কতা হিসেবে চট্রগ্রাম নগরীর উপকূলীয় এলাকায় জনসাধারণকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার জন্য প্রশাসনের উদ্যোগে মাইকিং চলছে।
বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’কে ঘিরে কক্সবাজার উপকূলজুড়ে মানুষজনের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মহাসেন বর্তমানে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮১৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিম অবস্থান করেছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। মঙ্গলবার হালকা ও মাঝারী বৃষ্টিপাত হলেও আজ বৃষ্টি হচ্ছেনা। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। কক্সবাজার সমূদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুশিয়ারী সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। বিপদ সংকেত বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে বেড়েছে উদ্বেগ-উৎকন্ঠাও।
কক্সবাজার জেলা সদরসহ উপকূলীয় এলাকায় বসবাসকারীদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে দুপুর সাড়ে ১২ টায় দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিশেষ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সকাল ১১টার দিকে জেলা সদরের সকল বিদ্যালয়গুলোতে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এসব বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে। দুপুর ২ টা থেকে আশ্রয় কেন্দ্র মানুষ সরিয়ে নেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। তাদেরকে আশ্রয়কেন্দ্র ও স্থানীয় বিদ্যালয়গুলোতে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্থানীয় জনসাধারণকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা সদর ও উপজেলাগুলোতে মাইকিং করা হচ্ছে।
খোজ নিযে জানা যায়, জেলা সদরের সমিতি পাড়া, নাজিরার টেক নুনিয়ার ছড়া, পশ্চিম কুতুবদিয়া পাড়া, খুরুশকুল গোমাতলী, পোকখালীসহ মহেশখালী, কুতুবদিয়া, চকরিয়া, পেকুয়া, উখিয়া ও টেকনাফের উপকূলীয় এলাকার লোকজনদেরকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। কক্সবাজারের ৫৩৭টি আশ্রয় কেন্দ্র এবং ৫৩৪টি স্কুল আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে জেলাব্যাপী প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আশ্রয়ের প্রয়োজন হলে সঙ্গে সঙ্গে তা খুলে দেওয়া হবে। আগে, চলমান এবং পরবর্তী পর্যায়ে সহায়তার জন্য প্রস্তত রয়েছে জেলার সব স্বেচ্ছাসেবক। বিমান উঠানামা বন্ধ রেখে সম্ভাব্য দূর্যোগ মোকাবেলার অংশ হিসাবে কক্সবাজার বিমান বন্দরের সার্বিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
Leave a Reply