সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন একবারেই দোরগোড়ায়। আর মাত্র কয়েকদিন। প্রতিক্ষায় আছেন কে হচ্ছেন নতুন নগরপিতা। এরইমধ্যে সকল মেয়র প্রার্থী তাদের স্ব স্ব সম্পদের হিসাব দাখিল করেছেন নির্বাচন কমিশনে। সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ৭ মেয়র প্রার্থী নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া নিজের স্বাক্ষরকরা হলফনামায় এ সকল তথ্য উল্লেখ করেছেন যা নিম্নে তুলে ধরা হলো।
সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নিজের স্বাক্ষর করা হলফনামায় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সদ্য বিদায়ী মেয়র উদ্দন আহমদ কামরান ৫ কোটি ৬২ হাজার টাকার সম্পদের মালিক। তার বার্ষিক আয় সাড়ে ৪ লাখ টাকা। তিনি পেশায় বালু পাথর সরবরাহকারী ব্যবসায়ী উল্লেখ করেন। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান-এর শিক্ষাগত যোগ্যতায় এইচএসসি পাস। এরমধ্যে তিনি দলীয় পদ ত্যাগ করেছেন। তার বিরুদ্ধে বর্তমানে কোন ফৌজদারি মামলা নেই। অতীতে তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ৪টি ফৌজদারি মামলার সব ক’টিতে অব্যাহতি পেয়েছেন। পেশায় বালু ও পাথর সরবরাহকারী এই মেয়র প্রার্থী বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ৪ লাখ ৪৮ হাজার ৩৮৮ টাকা। তাছাড়া সাবেক মেয়র হিসাবে প্রাপ্ত সম্মানী ভাতা বাবদ মোট ১ লাখ ১ হাজার ৬০০ টাকা আছে। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজ নামে নগদ টাকা ১৪ লাখ, ব্যাংকে জমাকৃত ১ কোটি ৪২ লাখ ৯৫ হাজার ৯৫ টাকা রয়েছে। তাছাড়া ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার স্বর্ণ, ২ লাখ ৪৬ হাজার ৪শ’ টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও ৩ লাখ ৮৭ হাজার টাকার আসবাবপত্র রয়েছে। অপরদিকে অস্থাবর সম্পদের মধ্যে স্ত্রীর নামে নগদ ৬০ লাখ, ব্যাংকে জমাকৃত অর্থের মধ্যে ৯২ লাখ ৯৬ হাজার ২০৮ টাকা রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন কোম্পানির শোয়র বাবদ ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা, পোস্টাল, স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ বাবদ ১ কোটি ১৭ লাখ ১২ হাজার ৪৩০ টাকা, ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ১টি জিপ, ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার স্বর্ণ, ৩৫ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও ৬০ হাজার টাকার আসবাবপত্র রয়েছে। তাছাড়া নির্ভরশীলদের নামে ৮০ হাজার ৫৪০ টাকা রয়েছে। অপরদিকে স্থাবর সম্পদের মধ্যে কামরানের নিজ নামে অকৃষি জমি ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ১০ লাখ টাকার আবাসিক ভবন রয়েছে। স্ত্রীর নামে ২ লাখ ৯৭ হাজার ২৮৪ টাকাটা কৃষি জমি, ১৩ লাখ ৩৭ হাজার ৬৬৭ টাকার অকৃষি জমি, ৭৫ হাজার টাকার একটি টিনশেডের ঘর রয়েছে। কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণখেলাপি নন তিনি।
অপর মেয়র প্রার্থী ও সম্ভাব্য বিএনপি মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী স্বশিক্ষিত বলে উল্লেখ করেন হলফনামায়। আরিফের কৃষি খাতে বার্ষিক আয় ৫৩ হাজার ৩৪৭ টাকা, বাড়ি এপার্টমেন্ট ও দোকান ভাড়া বাবদ ২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ব্যবসা বাবদ ২৫ হাজার ও শেয়ার খাতে ৩ লাখ ১৩ হাজার ৫৯৯ টাকা রয়েছে। প্রার্থীর ওপর নির্ভরশীলদের আয় বাবদ ২৭ লাখ ৪৩ হাজার ৯৮ টাকা রয়েছে। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজ নামে নগদ ৪ লাখ ৮ হাজার ৯২৩ টাকা, পাউন্ড ৫২৩৭ ও ডলার বাবদ ৪০১২ রয়েছে। তাছাড়া ব্যাংকে জমাকৃত টাকা, শেয়ার, গাড়ি, স্বর্ণ, ইলেক্ট্রনিক ও আসবাবপত্র বাবদ ২ কোটি ৭৩ লাখ ১৫ হাজার ৩১৬ টাকা রয়েছে। এছাড়া স্ত্রীর নামে ২৬ লাখ ৯১ হাজার ৫০৪ টাকা মূল্যের সম্পদ আছে। নির্ভরশীলদের নামে ২৩ লাখ ৫০ হজার টাকা মূল্যের সম্পদ রয়েছে। স্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজ নামে ১৪.২৮ একর জমি, দালান ২টা, সেমিপাকা ৩টা, ৬০ লাখ টাকা মূল্যের ডেইরি ফার্ম রয়েছে। স্থাবরে স্ত্রীর নামে ০.০৮ দুই একর জমি ও ১টা সেমিপাকা দালান রয়েছে। নির্ভরশীলদের নামে ১টা ফ্লাট ও ০.১৫৭৪ একর জমি আছে। দায়-দেনা বাবদ ১ কোটি ৮৪ লাখ ৬৬ হাজার ৭৭ টাকা রয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ১ কোটি ৮৪ লাখ ৬৬ হাজার ৭৭ টাকা ঋণ নিয়েছেন তিনি।
আরেক মেয়র প্রার্থী ও সম্ভাব্য বিএনপি মেয়র প্রার্থী কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি এডভোকেট মো.সামসুজ্জামান জামান শিক্ষাগত যোগ্যতায় এলএলবি। পেশায় আইনজীবী এই মেয়র প্রার্থীর বার্ষিক আয় ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা। তাছাড়া অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ টাকা ২ লাখ ২৫ হাজারসহ বৈদেশিক মুদ্রার পরিমাণ প্রায় ১ লাখ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে ১ লাখ টাকার স্বর্ণ, ৪০ হাজার টাকা মূল্যের আসবাবপত্র রয়েছে। অপরদিকে স্থাবর সমপদের মধ্যে অকৃষি জমির পরিমাণ ১ কেদার ও ৪ কেদার পরিমাণ বাড়ি রয়েছে। তার বিরুদ্ধে ৯টি ফৌজদারি মামলার সবক’টি বিচারাধীন। জানা যায়, সর্বোচ্চ ৩৮ মামলা ছিলো তার বিরুদ্ধে।
মেয়র প্রার্থী হিসেবে বার্ষিক আয়ের দিক দিয়ে এগিয়ে মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি নাসিম হোসেনের শিক্ষাগত যোগ্যতায় এম কম। নাসিম হোসাইনের ঋণ চার কোটি টাকা। এই টাকা তিনি ব্যাংকের কাছে দায়বদ্ধ। পেশায় ব্যবসায়ী এই মেয়র প্রার্থীর বাড়ি, এপার্টমেন্ট ও দোকান ভাড়া বাবদ বার্ষিক আয় ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। তাছাড়া ব্যবসায় অংশীদারী আয় প্রায় ৯৯ লাখ ৪৪ হাজার ৯০০ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজ নামে নগদ টাকার পরিমাণ ৫০ হাজার টাকা, ব্যাংকে এফডিআর বাবদ ৫ লাখ টাকাসহ ১টি কার ও ৩টি মোটরসাইকেল রয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী ও আসবাবপত্র রয়েছে। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে স্ত্রীর নামে ৪২ হাজার ৭১৮ টাকা ও ১৩ ভরি স্বর্ণ রয়েছে। অপরদিকে স্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজ নামে ১৬৫ শতক কৃষি ও ০.৭৭ শতক অকৃষি জমি রয়েছে। ৩টি দলান কোঠাসহ ঢাকার উত্তরায় ১৩ লাখ ৬৪ হাজার টাকা মূল্যের ৫ কাটা জমি রয়েছে। তবে স্ত্রীর নামে কোন স্থাবর সম্পত্তি নেই। দায় দেনা বাবদ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ৪ কেটি ৯ লাখ ২৪ হাজার ৯০০ টাকা রয়েছে। পূবালী ব্যাংক ও এইচএসবিসি ব্যাংকের কাছ থেকে ৪ কোটি ৯ লাখ ২৪ হাজার ৯০৩ টাকার এই ঋণ নিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে কোন মামলা নেই। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা য়ায় নির্বাচন কমিশনের শর্ত মোতাবেক এই প্রার্থী অংশ নিতে পারছেন না।
বর্তমান কারাবন্দি জায়াতের মহানগর আমির এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের শিক্ষাগত যোগ্যতায় বিএ, এলএলবি। তার বিরুদ্ধে ২০টি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। এই মামলাগুলোর মধ্যে ১টির চার্জ গঠন ও ৫টি বিচারাধীন রয়েছে। বাকিগুলো এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। পেশায় আইনজীবী এই মেয়র প্রার্থীর বার্ষিক আয় ৩ লাখ টাকা। তাছাড়া অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজ নামে নগদ ৩ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা, বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা রয়েছে। তবে স্ত্রী ও নির্ভরশীলদের নামে কোন অস্থাবর সম্পদ নেই। স্থাবর সম্পদের মধ্যে কারও নামে কোন সম্পদের হিসাব হলফনামায় উল্লেখ করেননি তিনি।
মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুর কাইয়ুম জালালী পংকী এসএসসি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। পেশায় ব্যবসায়ী এই মেয়র প্রার্থীর বিরুদ্ধে বর্তমানে ১টি মামলা রয়েছে। মামলাটি উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত আছে। তাছাড়া বার্ষিক আয় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা রয়েছে। প্রার্থীর ওপর নির্ভরশীলদের আয় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা আছে। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজ নামে ১১ লাখ ৭০ হাজার টাকাসহ ৩০ ভরি স্বর্ণ, জিপ, মোটরসাইকেল, ইকেলক্ট্রনিক সামগ্রী ও আসবাবপত্র রয়েছে। স্ত্রীর নামে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকাসহ ১৫ ভরি স্বর্ণ, ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী ও আসবাবপত্র রয়েছে। অপরদিকে স্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজ নামে ০.৭৬৮১ একর জমি রয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে দায়-দেনা বা কোন খেলাপি ঋণ নেই। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা য়ায় নির্বাচন কমিশনের শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় এই প্রার্থী অংশ নিতে পারছেন না।
এসএসসি পরীক্ষার্থী বলে শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করেছেন ছালাহ উদ্দিন রিমন। ২ মামলার আসামী এবং দু’টি মামলাই আদালতে বিচারাধীন। রিমনের পেশা কিংবা ব্যবসা নেই। এমনকি তার আয়ের উৎস এবং বাৎসরিক আয় নেই। তবে অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নগদ ৪৫ হাজার টাকা। তার কোন স্থাবর সম্পদ নেই। অন্য দুই প্রার্থীর মতো তিনিও নির্বাচন করতে পারছেন না বলে জানা যায়।
সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও সিলেট জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম জানান, প্রার্থীদের নিজ স্বাক্ষর করা হলফনামা আমরা সংরক্ষণ করেছি। কোনো প্রার্থী তথ্য গোপন করলে এবং পরবর্তীতে তার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এবং প্রাথীতা প্রত্যাহার করা হবে।
আর এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়েরের বিরুদ্ধে ২০টি মামলা রয়েছে। শিক্ষাগত যোগ্যতার কলামে আরিফুল হক চৌধুরী নিজেকে দাবী করেছেন স্বশিক্ষিত। আবদুল কাইয়ূম জালালী পংকী এক মামলার আসামী। কোনো আয় নেই ছালাহ উদ্দিন রিমনের।
সিলেটের মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের বিএনপি নেতা জামানের বিরুদ্ধে ৯টি মামলা রয়েছে। এসব মামলার বেশির ভাগই হয়েছে বর্তমান আমলে। তিনি জামিনে আছেন। আর জামায়াত নেতা জুবায়েরের বিরুদ্ধে মামলা ২০টি। সিলেটের ৭ মেয়র প্রার্থীর নির্বাচনী হলফনামা থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
কামরান:
জুবায়ের:
আরিফ: মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি আরিফুল হক নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে হলফনামায় লিখেছেন ‘স্বশিক্ষিত’। মেয়র পদপ্রার্থী সাতজনের মধ্যে সবচেয়ে স্বল্পশিক্ষিত তিনি। পেশায় ব্যবসায়ী এই মেয়র পদপ্রার্থীর বিরুদ্ধে বর্তমানে ৩টি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। তবে মামলা ৩টি স্থগিত অবস্থায় আছে। অতীতে দায়েরকৃত ২টি ফৌজদারি মামলার মধ্যে ১টি থেকে আব্যহতি ও অপরটি থেকে নির্দোষ হিসেবে খালাস পেয়েছেন।
মহানগর আওয়ামীলীগ সভাপতি কামরান হলফনামায় উল্লেখ করেছেন তার বার্ষক আয় ১৫ লাখ ৪৯ হাজার ৯শ’ ৮৮ টাকা। অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে, নিজ নামে নগদ ১৪ লাখ ও স্ত্রীর নামে ৬০ লাখ টাকা, নিজ নামে ব্যাংকে ১ কোটি ৪২ লাখ ৯৫ টাকা ও স্ত্রীর নামে ৯২ লাখ ৯৬ হাজার ২শ’ ৮ টাকা জমা রয়েছে। স্ত্রীর নামে রয়েছে ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার। স্ত্রীর নামে ১ কোটি ১৭ লাখ ১২ হাজার ৪শ’ ৩০ টাকা ও সন্তানের নামে ৮০ হাজার ৫শ’ ৪০ টাকার সঞ্চয়পত্র রয়েছে। ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা দামের একটি জীপ রয়েছে স্ত্রীর নামে। নিজের রয়েছে দেড় লাখ টাকার ও স্ত্রীর রয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার স্বর্ণ ও অন্যান্য মূল্যবান ধাতু। নিজের নামে ২ লাখ ৪৬ হাজার ৪শ’ টাকা ও স্ত্রীর নামে রয়েছে ৩৫ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী। নিজ নামে ৩ লাখ ৮৭ হাজার টাকার ও স্ত্রীর নামে স্ত্রীর নামে রয়েছে ৬০ হাজার টাকার আসবাবপত্র। স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে, স্ত্রী নামে ২ লাখ ৯৭ হাজার ২শ’ ৮৪ টাকার কৃষি জমি, নিজ নামে উত্তারধীকার সত্রে প্রাপ্ত ১০ লাখ টাকার দামের দু’তলা দালান, স্ত্রীর নামে ৭৫ হাজার টাকার একটি টিনসেডের ঘর। ২০০৮ সালের ৪ আগস্ট অনুষ্ঠিত সিটি নির্বাচনের হলফনামায় কামরান উল্লেখ করেছিলেন তার ২ কোটি ২১ লাখ ৫২ হাজার ১শ’ ৭৭ টাকার সম্পদ রয়েছে। ৫ বছরের ব্যবধানে বর্তমানে সম্পদের পরিমাণ ৫ কোটি ৯৪ লাখ ৬০ হাজার ৪শ’ ৩৫ টাকা। সে হিসাবে গত ৫ বছরে তার ২ কোটি ৯৪ লাখ ৬০ হাজার ৪শ’ ৩৫ টাকার সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছে। কামরান নিজের পেশা হিসেবে বালু, পাথর সরবরাহকারী বলে উল্লেখ করেছেন। এইচ.এস.সি পাশ কামরান ৪ মামলার আসামী। তবে ৪ মামলা থেকে তিনি উচ্চ আদালতের রায়ে অব্যাহতি পেয়েছেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আফিকুল হক চৌধুরীর আয় ১১ লাখ ৮৩ হাজার ৫শ’ ৩৩ টাকা। নিজেকে স্বশিক্ষিত দাবী করা আরিফ ৫ মামলার আসামী। তবে তিনি ১ মামলায় খালাস, ১ মামলায় অব্যাহতিপ্রাপ্ত ও ৩ মামলা উচ্চ আদালতে স্থগিত রয়েছে। তার অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে, নিজ নামে নগদ ৪ লাখ ৮ হাজার ৯শ’ ২৩টাকা ও স্ত্রীর নামে ৫০ হাজার টাকা। নিজ নামে ৫ হাজার ২শ’ ৩৭ পাউন্ড, ৬ হাজার ১২ ইউএস ডলার। ব্যাংকে নিজ নামে ১ কোটি ৮৭ লাখ ৯৭ হাজার ৪শ’ ৪১ টাকা ও স্ত্রীর নামে ১ লাখ ২৭ হাজার ১শ’ ২৭ টাকা জমা রয়েছে। নিজ নামে রয়েছে ৬৫ লাখ ৩৬ হাজার ৬শ’ টাকা শেয়ার ও ১৩ লাখ ১৫ হাজার ২শ’ ৭৫ টাকার ঋণপত্র। স্ত্রীর নামে ২ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র। নিজ নামে ৩ লাখ ৮৬ হাজার টাকার কার, স্ত্রীর নামে ৫ লাখ ৭৫ হাজার কার ও ৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকা দামের পিকআপ রয়েছে। নিজ নামে ৩০ হাজার টাকা, স্ত্রীর নামে ১ লাখ ১২ হাজার টাকা ও মা-সন্তানের নামে ১৫ লাখ টাকার স্বর্ণ, মূল্যবান অলংকার রয়েছে। নিজ নামে দেড় লাখ টাকা, স্ত্রীর নামে ৪৫ হাজার ও মা-সন্তানের নামে ৫ লাখ টাকার রয়েছে ইলেকট্রনিক সামগ্রী। নিজ নামে ১ লাখ টাকার, স্ত্রীর নামে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৪শ’ ৫০ টাকা ও মা-সন্তানের নামে ৩ লাখ টাকার আসবাবপত্র রয়েছে। স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে, নিজ নামে ৮ দশমিক ৭৭ একর কৃষি ও ৫ দশমিক ৫১ একর অকৃষি জমি, স্ত্রীর নামে শূন্য দশমিক ৮ একর, মায়ের নামে শূন্য দশমিক ১২৭৪ শতক জমি রয়েছে। নিজ নামের দালান ২টি ও সেমিপাকা দালান ৩টি, স্ত্রীর নামে সেমিপাকা দালান ১টি, নিজ নামের ৬০ লাখ টাকার দামের ডেইরী ফার্ম, সন্তানের নামে ১টি ফ্ল্যাট রয়েছে। এছাড়াও পূবালী ব্যাংক লিঃ স্টেডিয়াম মার্কেট শাখায় ১ কোটি ৪৪ লাখ ১০ হাজার ৪শ’ ৩৯ টাকা, মার্ক প্রোপ্রার্টি ডেভেপমন্টে (জামানত বিহীন) ২৩ লাখ ও সিটি ব্যাংক লিঃ এ ১৭ লাখ ৫৫ হাজার ৬শ’ ৩৮ টাকা ঋণ রয়েছে। ব্যবসা হিসেবে মেসার্স সুরমা সিএনজি এন্ড ফিলিং স্টেশন, সিমেন্ট ডিলার, পাথারও বালু সরবরাহকারী ও আফছা হক চৌধুরী ডেইরী ফার্ম উল্লেখ করা হয়েছে। বিএনপির নেতা নাছিম হোসাইন কখনো মামলার আসামী হননি। এম.কম শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখকারী নাছিম বিভিন্ন ব্যবসায় সম্পৃক্ত। তার বার্ষিক আং ১ কোটি ৩ লাখ ৪ হাজার ৯শ’ টাকা। অস্থাবর সম্পদের রয়েছে, নিজ নামে নগদ ৫০ হাজার ও স্ত্রীর নামে ৪২ হাজার ৭শ’ ১৮ টাকা। বিভিন্ন কোম্পানীর শেয়ারের মধ্যে নিজ নামে রয়েছে প্রামীণ ফোন ১৫ হাজার, জিবিবি ১২৫টি, ডেসকো, ২৮ হাজার ৭শ’ ৫০টি, যমুনা ব্যাংক ১৬২টি ও সামিট ২৭ হাজার ৫শ’টি। পূবালী ব্যাংক স্টেডিয়াম শাখার রয়েছে ৫ লাখ টাকার আমানত। নিজ নামে ১টি কারও ৩টি মোটর সাইকেল, স্ত্রীর নামে ১৩ ভরি স্বর্ণ, নিজ নামে ১টি ডিপ ফ্রিজ, ১টি ফ্রিজ ও ১টি টিভি। রয়েছে ২ সেট সোফা ও ২টি খাটসহ ফার্নিচার। স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে, নিজ নামে ১৬৫ শতক জমি, ৭৭ শতক কৃষি জমি, ৪শ’ কৃষি জমি, ৪শ’ বর্গ ফুটের দোকান কোটা ৩টি, ৩হাজার বর্গফুটের এ্যাপার্টমেন্ট ও ১৮ হাজার ৯শ’ বর্গফুটের দালান রয়েছে। রাজধানী ঢাকার উত্তরায় যৌথমালিকানায় নিজ নামে ৫ কাটা জমি যার নিজ অংশের দাম ১৩ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। এছাড়াও পূবালী ব্যাংক স্টেডিয়াম শাখার (সি.সি লোন) ১ কোটি ৯৩ লাখ ৯৬ হাজার ৩শ’ ৫৩ টাকা, লিজ ফাইনেন্স এ ১লাখ ৩৯ হাজার ৩৪ টাকা, হাউস বিল্ডিং লোন ১ কোটি ৪৪ লাখ ৩০ হাজার ৪শ’ ৬৭ টাকা ও এইচ এস বি সি ব্যাংক সিলেট শাখায় ৬৯ লাখ ৫৯ হাজার ৪৯ টাকা ঋণ রয়েছে। বিএনপি নেতা আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকী ১ মামলার আসামী। তবে মামলাটি উচ্চ আদালত কর্তৃক স্থগিত। এসএসসি পাশ পংকীর আয় ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। তার রেস্টুরেন্ট, আবাসিক হোটেল, ঔষধসহ বিভিন্ন ব্যবসা রয়েছে। অবস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে, নিজের নগদ ৫০ হাজার ও স্ত্রীর ৫০ হাজার টাকা। নিজ নামে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ও স্ত্রীর নামে ৫০ হাজার টাকা ব্যাংকে জমা রয়েছে, নিজ নামে ১০ লাখ ও স্ত্রীর নামে রয়েছে আড়াই লাখ টাকার শেয়ার। নিজ নামে জীপ গাড়ী ও মোটর সাইকেল, উপহার হিসেবে প্রাপ্ত ৩০ ভরি স্বর্ণ, ২টি এসি, ৩টি টিভি, ২টি ফ্রিজ, ২টি কম্পিউটার, ৮টি ফ্যান, ৪টি খাট, ৩ সেট সোফা, ১০টি চেয়ার, ৩টি টেবিল রয়েছে। স্ত্রীর নামে রয়েছে ১৫ ভরি স্বর্ণ, ১টি ল্যাপটপ ও ওভেন, ২টি খাট, ১ সেট সোফা, ৮টি চেয়ার ও ২ টি খাট, ১ সেট সোফা, ৮টি চেয়ার ও ২টি টেবিল। স্থাপনের সম্পদের মধ্যে রয়েছে, নিজ নামে অকৃষি জমি শূন্য দশমিক ৩২ একর, দালান শূন্য দশমিক ২০৩১ একর, এ্যাপার্টমেন্ট শূন্য দশমিক ২৪৫০ একর। জামায়াত নেতা এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের ২০ মামলার আসামী। এর মধ্যে ৫টি বিচারাধীন, ১৫টি প্রাথমিক পর্যায়ে এবং সবগুলো মামলাই ২০১০ থেকে ২০১৩ সনে দায়েরকৃত। বিএএলএলবি শিক্ষাগত যোগ্যতার অধিকারী জুবায়ের আয় ৩ লাখ টাকা। পেশায় আইনজীবী জুবায়েরের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজ নামে নগদ ৩ লাখ ৩৭ হাজার ৫শ’ টাকা ও ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার। স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা এডভোকেট সামসুজ্জামান জামানের শিক্ষাগত যোগ্যতা এলএলবি পাশ। ৩৮ মামলার আসামী জামানের বিরুদ্ধে বর্তমানে ৯টি মামলা বিচারাধীন। বাকী ২৯ মামলায় তিনি খালাস পেয়েছেন। তার আয় ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা। অবস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে, নিজ নামে নগদ ২ লাখ ২৫ হাজার ও ১ লাখ টাকার বৈদেশিক মুদ্রা। রয়েছে ১ লাখ টাকার স্বর্ণ ও পাথর নির্মিত অলংকারাদি ২ ভরি। ৪০ হাজার টাকা মূল্যের টেলিভিশন, ল্যাপটপ, এয়ারকন্ডিশনার ও ফ্রিজ। রয়েছে ৬০ হাজার টাকা দামের আসবাবপত্র। সামসুজ্জামান জামানের কোনো স্থাবর সম্পত্তি নেই।
Leave a Reply