শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:২৭

কে হচ্ছেন সিলেটের নতুন মেয়র, জল্পনা

কে হচ্ছেন সিলেটের নতুন মেয়র, জল্পনা

ওয়েছ খছরু: স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় চাইলেই বরখাস্ত হতে পারেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। কারান্তরীণ হওয়ার পর আরিফুল হক মেয়র পদ হারাচ্ছেন কিনা-এ নিয়ে বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে সিলেটে। একই সঙ্গে কে হচ্ছেন নতুন মেয়র- এ নিয়েও শুরু হয়েছে জল্পনা।

তবে, গতকাল কারান্তরীণ হওয়ার আগেই মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করতে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র-২ অ্যাডভোকেট সালেহ আহমদকে নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। এ নিয়ে বিকালে অ্যাডভোকেট সালেহ আহমদ সহ কয়েকজন কাউন্সিলর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবিবের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি হওয়ার কারণে গতকাল সকালে হবিগঞ্জের মুখ্য হাকিম আদালতে হাজির হন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেয়ার পর সিলেট সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। এই জল্পনার মধ্যেই সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবিবের কাছে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর নির্দেশনাপত্র নিয়ে হাজির হন প্যানেল মেয়র-২ এডভোকেট সালেহ আহমদ। এ সময় তার সঙ্গে রেজওয়ান আহমদ, আবদুল মুহিত জাভেদ সহ কয়েকজন কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন। তারা সেখানে গিয়ে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশনাপত্র দেখান। এবং ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব দিতে অনুরোধ জানান। কিন্তু প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তাদের কথায় কর্ণপাত করেননি।

সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, নিয়ম অনুযায়ী মেয়র কারান্তরীণ হলে বিষয়টি জানিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে অবহিতপত্র দেবেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। পরবর্তীতে মন্ত্রণালয়ের দেয়া দিকনির্দেশনা অনুযায়ী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। আর মন্ত্রণালয় চাইলে কারান্তরীণ মেয়রকে বরখাস্ত করতে পারবে। তবে, সেটি কেবল মন্ত্রণালয়েরই এখতিয়ার। গতকাল বিকালে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা

এনামুল হাবিবও সে কথা উল্লেখ করে বলেন, মেয়র কারান্তরীণ হওয়ার কাগজপত্র এখনও তার হাতে এসে পৌঁছেনি। আদালতের কাগজপত্র হাতে পেলে তিনি মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি জানাবেন। এবং মন্ত্রণালয় চাইলে মেয়রকে বরখাস্ত করতে পারবেন। তিনি জানান, মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর দেয়া নির্দেশনাপত্র নিয়ে প্যানেল মেয়র-২ অ্যাডভোকেট সালেহ আহমদ তার কাছে এসেছিলেন। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মতো কাজ করা হবে। সিলেট সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে। ভারপ্রাপ্ত মেয়র নিয়ে প্যানেল মেয়র-১ রেজাউল হাসান কয়েস লোদির দ্বন্দ্বের বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছিলো। তবে, হাইকোর্ট থেকে শেষ পর্যন্ত রেজাউল হাসান কয়েস লোদি তার রিট পিটিশন আবেদনটি প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। আর সিলেট সিটি করপোরেশনের মাসিক সভায় প্যানেল মেয়র-১ এর উপর কাউন্সিলরদের অনাস্থার প্রস্তাবটি এখনও গৃহীত হয়নি।

সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, মন্ত্রণালয় কারান্তরীণ মেয়রকে বরখাস্ত কিংবা বরখাস্ত না করেই প্যানেল মেয়র থেকে ভারপ্রাপ্ত মেয়র নিয়োগের নির্দেশনা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে প্যানেল মেয়র থেকে ভারপ্রাপ্ত মেয়র নিয়োগ করা হতে পারে। তবে, এখানে প্রশাসক নিয়োগের কোন সম্ভাবনা নেই। সিলেট সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র-১ রেজাউল হাসান কয়েস লোদি গতকাল মানবজমিনকে জানিয়েছেন, ভারপ্রাপ্ত মেয়র নিয়ে করপোরেশনে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করা ঠিক নয়। এখানে কারও ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার কিছুই নেই। সবার উচিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া। আইন অনুযায়ী যে নির্দেশনা আসবে সেটি পালন করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। একই কথা বলেছেন আরেক প্যানেল মেয়র অ্যাডভোকেট রোকশানা বেগম শাহনাজ।

তিনিও জানিয়েছেন, আইন মতো কাজ করা উচিত। আইনের বাইরে কেউ নয়। সুতরাং সিলেট সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র নিয়োগের বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের উপর ন্যস্ত থাক। ওদিকে, কারান্তরীণ হওয়ার আগে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী চলতি দায়িত্ব পালনে প্যানেল মেয়র-২ এডভোকেট সালেহ আহমদকে নির্দেশনাপত্র দিয়ে গেছেন। এই নির্দেশনাপত্র পেয়ে গতকাল প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গেছেন তিনি। তবে, সন্ধ্যা পর্যন্ত সে ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত আসেনি। প্যানেল মেয়র সালেহ আহমদ

গতকাল বিকালে মানবজমিনকে জানান, মেয়রের অনুপস্থিতিতে চলতি দায়িত্ব পালনে তাকে অনুমতি দিয়ে গেছেন। আর সেই নির্দেশনাপত্র নিয়ে তিনি প্রধান নির্বাহীর কাছে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, মেয়রের পত্র অনুযায়ী তিনি হবেন সিলেট সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র। অতীতেও তিনি মেয়রের নির্দেশনাপত্র পেয়ে অতীতেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

এদিকে, সিলেট সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র দ্বন্দ্বের কারণে আগে থেকেই বিভক্ত হয়ে আছেন কাউন্সিলররা। এর মধ্যে এক অংশ রয়েছেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর পক্ষে ও অন্য অংশ রয়েছে প্যানেল মেয়র-১ রেজাউল হাসান কয়েস লোদির পক্ষে। এ নিয়ে কয়েক দিন আগে নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে কয়েস লোদির পক্ষে বৈঠক হয়েছে।




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024