শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: শুরু হলো ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দ। নতুন বছরের এই নবীন প্রভাতে আমাদের অগণিত পাঠক, লেখক, এজেন্ট, বিজ্ঞাপনদাতা ও শুভানুধ্যায়ীর প্রতি রইল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
নতুন বছরের শুরুতে আমরা স্বভাবত নতুন আশায় উদ্দীপিত হই। সেই সঙ্গে পেছন ফিরে তাকানোর সুযোগও আসে। গত বছর মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার-প্রক্রিয়ার উৎসাহব্যঞ্জক অগ্রগতি হয়েছে: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মতিউর রহমান নিজামী, মীর কাসেম আলী, এ টি এম আজহারুল ইসলামসহ ছয় অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ দণ্ডের রায় ঘোষিত হয়েছে; আপিল বিভাগে নিষ্পত্তি হয়েছে দুজনের মামলা—তাঁদের একজনের ফাঁসি, অন্যজনের আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায় হয়েছে। এই বিচারের মাধ্যমে ইতিহাসের কলঙ্কমোচনের প্রক্রিয়ায় এসব রায় নিঃসন্দেহে বড় অগ্রগতি।
সদ্য বিগত বছরটিতে শিক্ষা ক্ষেত্রে ধারাবাহিক অগ্রগতি অব্যাহত থেকেছে। অবশ্য একই সঙ্গে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস ও শিক্ষার মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অন্যদিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বেড়েছে, বেড়েছে খাদ্য উৎপাদন। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ পোলিওমুক্ত হয়েছে; দেশি চিকিৎসকেরা দেশেই অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনে প্রথমবারের মতো সাফল্য অর্জন করেছেন; এ দেশের বিজ্ঞানীরা মহিষের পূর্ণাঙ্গ জীবনরহস্য উন্মোচন করেছেন।
এসব সাফল্যের বিপরীতে নারায়ণগঞ্জে চাঞ্চল্যকর সাত খুনের ঘটনা এবং অপহরণ, গুম ও খুনের বাড়াবাড়ি লক্ষ করা গেছে বছরজুড়ে। সুশাসন বাড়েনি, রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও হতাশাব্যঞ্জক হয়ে উঠেছে। বিশেষত ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত একতরফা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক বিকাশ ভীষণভাবে ব্যাহত হয়েছে। প্রধান বিরোধী দল ও তার মিত্রদের সংবিধানপ্রদত্ত গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক অধিকার হরণ এবং তাদের চূড়ান্তভাবে কোণঠাসা করতে সরকার আইনের অপপ্রয়োগ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও দলীয় পেশিশক্তি ব্যবহার করেছে।
চলমান অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সব পক্ষের পরিপূর্ণ অংশগ্রহণের ভিত্তিতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের অনুকূল পরিবেশ তৈরির বিকল্প নেই। আমরা আশা করি, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক নেতৃত্বের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। ২০১৫ সালে বাংলাদেশের সব মানুষের শান্তি ও সমৃদ্ধি ফিরে আসুক।