শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: অনুমতি না পেলেও ৫ই জানুয়ারি বিএনপি রাজধানীতে সমাবেশ করবে বিএনপি। সন্ধ্যায় নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কেক কাটা অনুষ্ঠানে দলটির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ এ কথা জানান।
তিনি বলেন, একব্যক্তির স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ৫ই জানুয়ারি সরকার তামাশার নির্বাচন করে গণতন্ত্রকে কবরস্থ করেছে। এখন তারা বলছে ৫ই জানুয়ারি ওই তামাশার নির্বাচনের বর্ষপূর্তি উদযাপন করবে। আমরা গণতন্ত্র হত্যার ওই দিনটিতে ঢাকায় জনসভার অনুমতি চেয়ে পুলিশের কাছে ইতোমধ্যেই আবেদন করেছি। আমাদের নেতারা আজ মহানগর পুলিশ দপ্তরে গিয়েছিলেন।
তারা (পুলিশ) বলেছে, জনসভার অনুমতি দেবে না। আমরা স্পষ্টভাষায় বলে দিতে চাই, ৫ জানুয়ারি আমাদের কর্মসূচি করতেই হবে। এই লক্ষ্য নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। দলের প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদিন ফারুকের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল জনসভার বিষয়ে কথা বলতে বিকালে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে যান। কমিশনারকে না পেয়ে তারা সহকারী কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেন। ফারুক সাংবাদিকদের বলেন, নতুন পুলিশ কমিশনার গোপালগঞ্জ গেছেন। নতুন কমিশনার এলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানা যাবে।
পুলিশ কর্মকর্তা আমাদেরকে নতুন কমিশনারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছেন। বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অথবা নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে জনসভা করতে পুলিশের অনুমতি চেয়েছে। বিএনপির নেতারা গোপনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার বক্তব্য অপপ্রচার বলে উড়িয়ে দেন রিজভী। রিজভী বলেন, জনগণকে বিভ্রান্ত করতে তিনি ওইরকম মিথ্যাচার করছেন।
আমরা জানি, এদেশের হাটে-বন্দর-গ্রামে-গঞ্জের মানুষজন জানে, আওয়ামী লীগের নেতারা বিদেশে পাড়ি জমাতে না কি বিমানের টিকেট কেটে রেখেছে। ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও রাকসুর সাবেক ভিপি রিজভী নির্দলীয় সরকারের দাবিতে খালেদা জিয়া ডাকে আন্দোলনের জন্য সংগঠনটির নেতা-কর্মীদের প্রস্তুত থাকতে বলেন। ছাত্রদলের বর্তমান নেতা-কর্মীদের নিয়ে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটেন রিজভী। সংগঠনের সাবেক নেতা শিরিন সুলতানা, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল
এসময় উপস্থিত ছিলেন। ছাত্রদলের দুদিনের কর্মসূচির মধ্যে শুক্রবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশও ছিল। কিন্তু ২৯ ডিসেম্বর পুলিশের অনুমতি পাওয়ার পর প্রস্তুতির জন্য সময় যথেষ্ট নয় জানিয়ে সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের দিন ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ আখ্যা দিয়ে সারাদেশে সমাবেশ ও কালো পতাকা মিছিলের কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি। অন্যদিকে ওই দিনটি ‘সংবিধান ও গণতন্ত্র রক্ষা দিবস’ হিসেবে পালনের ঘোষণা দিয়ে রাজপথে সেদিন যে কোনো নাশকতা মোকাবেলার ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
এদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার সাত দফা প্রস্তাব আওয়ামী লীগ নেতারা প্রত্যাখ্যান করায় কিছু যায় আসে না।তিনি বলেন, ‘প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানে আশ্চর্যের কিছু নেই। কারণ আওয়ামী লীগ জন্মলগ্ন থেকেই শান্তিপূর্ণ রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। তারা একনায়কতন্ত্রে বিশ্বাসী, খুনি-লুটেরার দল।’শুক্রবার সকালে ছাত্রদলের ৩৬তম প্রতিষব্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের মঈন খান এসব কথা বলেন।
মঈন খান বলেন, ‘অনুমতি দিক বা না দিক ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষে বিএনপি রাজপথে থাকবে। আমাদের যা করণীয় তাই করবে।’ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসানসহ সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ের কয়েক হাজার নেতাকর্মী এ সময় জিয়ার মাজারে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন।গত ১৪ নভেম্বর কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের আংশিক কমিটি দেয়া হয়। নতুন কমিটি গঠনের পর জিয়ার মাজারে এটাই প্রথম শ্রদ্ধা।এ সময় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ উপস্থিত ছিলে