নিউজ ডেস্ক: সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত বসে থেকেও এক ভ্যান ফুলকপি বিক্রি করতে পারছেনা কৃষক সোনামিয়া। বেলা গড়িয়ে গেলেও কপিগুলি বিক্রি না হওয়ায় রেগে গিয়ে কপিগুলি রাস্তার ধারে ফেলে দিয়ে চলে যাবেন বলেও ভাবছেন তিনি।
যে দামেই হোক কপিগুলি বিক্রি করা গেলে তাও খরচের কিছু পয়সা উঠত। তাই রাগকে দমিয়ে রেখেই অপেক্ষার প্রহর গোণা। যদি কোন ক্রেতা পাওয়া যায়। সকালে বগুড়ার মহাস্থানের পাইকারি সবজি বাজারে গিয়ে চাষী সোনামিয়ার সাথে কথা বললে তার ক্ষোভ এভাবেই প্রকাশ করেন।
সোনামিয়া বলেন, গত কয়েকদিন থেকে গাড়ি চলাচলে সমস্যা হওয়ায় তাদের উৎপাদিত ফসলের দাম অনেক কমে এসেছে। এরমধ্যে অবরোধের কারণে দাম আরো কমেছে। এখন পাইকাররা বগুড়ার বাহিরে মাল নিয়ে যেতে পারছেনা। তাই তারাও আর এসব সবজি কিনছেনা। আবার এগুলো রাখার মতোও না। পঁচে যাবে। গত ২/৩ দিন আগে প্রতিমণ ফুলকপি বিক্রি হয়েছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা দরে। মঙ্গলবার সেটি ৫০ টাকা মণে নেমে এসেছে। তাও ক্রেতা নেই। তাই মনে হচ্ছে এগুলি রাস্তার ধারে ফেলে দিয়ে চলে যাই।
রাজনৈতিক অস্থিরতার পাশাপাশি বিএনপির ডাকা সারা দেশে অবরোধে এমনই প্রভাব পড়েছে বগুড়ার সবজি বাজারে। বগুড়ার পাইকারি বাজারে কৃষকের উৎপাদিত ফসলের দাম নেমে এসেছে অর্ধেকে। উৎপাদিত ফসলের সঠিক দাম না পেয়ে কৃষকরাও পড়েছে বিপাকে।
মহাস্থান হাটে আলুচাষী ইব্রাহীম জানান, গত দুইদিন আগে এই হাটে ৫শ’ টাকা মণ দরে আলু বিক্রি করেছে। বাজারে আজ সেই আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ টাকা মণ দরে। এখন বাজারে যে দাম পাওয়া যাচ্ছে তাতে কৃষকের খরচ উঠবে না। ২৮ মণ আলু এনেছি। এখন পর্যন্ত বিক্রি হয়নি। বাজারে ১০ গাড়ি মাল কেনার মত পাইকার আছে। কিন্তু অবরোধের কারণে মাল নিয়ে যেতে পারছে না বলে কিনছে না।
এ অবস্থা চললে আমাদের পথে বসতে হবে। আগাম জাতের আলু চাষ করেছি কিছু লাভের আশায়। এখন যে অবস্থা তাতে লাভতো দূরেই থাক খরচ উঠবে না। একই অবস্থা এ বাজারে ওঠা অন্যান্য সবজির ক্ষেত্রেও। বেগুন বিক্রেতা কাবিল জানান, গত দুদিন আগে যে বেগুন ৬শ’ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছি, আজ সেটি ২শ’ টাকা মণ দরে বিক্রি করতে হচ্ছে।
বাজারে আসা সবজি চাষীরা বলেন, “রাজনৈতিক দলের নেতারা তাদের স্বার্থে একটি করে কর্মসূচি দিয়ে আমাদেরকে বিপদে ফেলে দিচ্ছেন। অবরোধের কারণে আজ ফসলের দাম না পেয়ে আমাদের ক্ষতি হচ্ছে। কৃষকের ক্ষতি হয় এমন কর্মসূচি দেয়া থেকে বিরত থাকার জন্য সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি অনুরোধ জানান চাষীরা।”