শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: নির্দলীয় সরকারের অধীনে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপি-জামায়াত জোটের শীর্ষ একজন পরামর্শক বলেছেন, শেখ হাসিনাকে রেখেও নির্বাচনে যেতে পারে খালেদা জিয়া নেতৃত্বাধীন দলটি।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী মেনে নিয়ে নির্বাচন হতে তো সমস্যা নেই, কিন্তু তাকে রাষ্ট্রীয় সকল সুযোগ-সুবিধা নেওয়া বন্ধ করতে হবে। নিয়ম মানতে হবে। নির্দলীয় সরকারের দাবিতে বিরোধীদের টানা অবরোধের ভেতর বিএনপির নীতিনির্ধারকদের মধ্যে প্রভাব সৃষ্টি করতে পারেন, এমন এক ব্যক্তির এই প্রস্তাব কৌতূহলের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রবীণ এই অধ্যাপক তার প্রস্তাব তুলে ধরে বলেন, এমন উপায়ে নির্বাচন সম্ভব। শ্রীলঙ্কায় সম্প্রতি যে নির্বাচন হয়েছে, তাতে দেশটির প্রেসিডেন্ট মাহিন্দ রাজাপাকসেকে ক্ষমতায় রেখেই নির্বাচন হয়েছে এবং তাতে অন্যান্য রাজনৈতিক দলও অংশ নিয়েছে।
তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কায় তো এই উদাহরণ হয়েছেই মাত্র। ভারতের নির্বাচনে দেখেন, মনমোহন সিংকে প্রধানমন্ত্রী রেখেই দেশটিতে নির্বাচন হয়েছে। আমি বিএনপির লোক হিসাবে এইসব কথা বলছি না, একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হিসাবে বলছি। বিএনপি সমর্থক পেশাজীবীদের সংগঠন শত নাগরিক এর আহ্বায়ক অধ্যাপক এমাজউদ্দীন সোমবার একটি বাংলা দৈনিককে সাক্ষাৎকার দিয়ে বলেন, হাসিনাকে রেখেও বিএনপি নির্বাচনে যেতে পারে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এই প্রস্তাবে একটা তবে আছে। সেটা হল নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী আর স্বাধীন হতে হবে। এই নির্বাচন কমিশন দিয়ে সেটা হবে না। সেনাবাহিনীকে স্বাধীন ভূমিকা পালন করতে হবে। এই প্রস্তাব মতে কবে নাগাদ নির্বাচন চান- প্রশ্ন করা হলে এমাজউদ্দীন বলেন, গত নির্বাচন তো গণমানুষের অংশগ্রহণের নির্বাচন ছিল না, এইটা ছিল একেবারেই এক তরফা। যে ১৫৩ জন নির্বাচনে অংশ নিয়েছে, তাদের লজ্জা থাকলে তো তারা পদত্যাগ করত।
আমি মনে করি, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করা, যাতে সমাজ এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে শান্তি, স্থিতিশীলতা ফেরত আসে। শেখ হাসিনার সরকারের পদত্যাগ চেয়ে গত নির্বাচনের আগে বিএনপি-জামায়াত জোট টানা অবরোধ চালায়, তাতে বহু মানুষ নিহত হয়। হাসিনার পদত্যাগ ছাড়া কোনো কিছুই মানবে না জানিয়ে সরকারের আপসরফার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে নির্বাচন প্রতিহতের কর্মসূচি দেয় তারা। বিএনপির বর্জনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ওই নির্বাচন করে ফেলে। তার এক বছর পর এখন আবার নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনে বিএনপি।