জালাল আহমদ: সিলেট বিভাগসহ সারা দেশে একের পর এক হরতাল-অবরোধের কারণে মৌলভীবাজারের রাবার বাগানে উৎপাদিত শতকোটি টাকা মূল্যের প্রায় ২ হাজার টন কাঁচামাল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অবরোধের কারণে পরিবহন সংকটে ঢাকার মিরপুরে বনশিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশনের বিক্রয় কেন্দ্রে পাঠাতে না পারায় রাবারের কাঁচামাল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
অনেক বাগানে তরল কাঁচামাল সংরক্ষণের পাত্র পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় কাঁচামাল সংরক্ষণও সম্ভব হচ্ছে না। সময়মতো প্রক্রিয়াজাত করে রাবার উৎপাদন করা না গেলে কাঁচামালগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশংকা করছেন রাবার বাগানের সাথে সংশ্লিষ্টরা।
বনবিভাগ সূত্র জানায়, মৌলভীবাজার জেলায় প্রায় ১৪ হাজার একর জায়গায় রাবার চাষ হয়। বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশনের ৪টি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন ৮টি বাগান থেকে প্রতিবছর প্রায় ২০ লাখ কেজি রাবার সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। বছরের নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত হচ্ছে রাবার সংগ্রহের উৎকৃষ্ট সময়।
কিন্তু চলমান একের পর এক হরতাল-অবরোধের কারণে প্রায় দুই মাসের উৎপাদিত রাবার বাগানে আটকা পড়ে আছে। পরিবহন ও ক্রেতা সংকটের কারণে কাঁচামাল (রাবার গাছের কষ বা লেটেঙ্গ) বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে বাগান মালিকরা কাঁচামাল নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। আর্থিক সংকটে অনেক বাগান মালিক কর্মচারীদের বেতন পরিশোধেও হিমশিম খাচ্ছেন।
বনশিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশন শ্রীমঙ্গলের সহ-ব্যবস্থাপক (মাঠ) মাহমুদা জেসমিন জানান, পরিবহন সংকটের কারণে রাবারের কাঁচামালগুলো ঢাকায় পাঠানো যাচ্ছে না। গোডাউনও ইতোমধ্যে ভরে গেছে। এভাবে কাঁচামাল পড়ে থাকলে নষ্ট হতে পারে। তিনি আরও জানান, তাদের আওতাধীন ভাটেরা, রুপাইছড়া, সাতগাঁও ও শাহজিবাজার রাবার বাগানে এখন কাঁচামালের স্ত‚প শুধু বাড়ছেই। ভাটেরা রাবার বাগানে এখন প্রায় ২০০ টন রাবারের কাঁচামাল মজুদ রয়েছে। কিন্তু বিক্রি করা যাচ্ছে না।
রাজনগর টি-এস্টেটের অ্যাগ্রো প্রসেস ইন্ডাস্ট্রির রাবার প্রকল্পের ব্যবস্থাপক বজলুর রশীদ জানান, আমাদের প্রায় ১০-১২ মেট্রিক টন রাবারের কষ নষ্ট হবার পথে। প্রতি কেজি কষের বাজারমূল্য ৬০ টাকা। রাবার গাছ থেকে কষ সংগ্রহের পর চার-পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে প্রক্রিয়াজাত করতে হয়। কিন্তু বাগানে প্রক্রিয়াজাতকরণের ব্যবস্থা না থাকায় এবং কাঁচামাল ঢাকায় পাঠাতে না পারায় এগুলো নষ্ট হবার উপক্রম।