আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাসের হুমকি মোকাবেলায় সন্ত্রাসবিরোধী নতুন কৌশলের অংশ হিসেবে নাগরিকত্ব আইন কঠোর করবে অস্ট্রেলিয়া। রোববার সিডনির একটি ক্যাফেতে ডিসেম্বরের প্রাণঘাতী জিম্মি ঘটনার প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে দেয়া ভাষণে দেশটির প্রধানমন্ত্রী টনি অ্যাবোট এ ঘোষণা দেন।
বিবিসি বলছে, সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত দ্বৈত নাগরিকদের নাগরিকত্ব স্থগিত এমনকি বাতিল হতে পারে বলে রাজধানী ক্যানবেরায় পুলিশ সদরদপ্তরে দেয়া ভাষণে ঘোষণা দিয়েছেন অ্যাবোট।
অপরদিকে অস্ট্রেলিয়ায় জন্মগ্রহকারী নাগরিকরা সন্ত্রাসবিরোধী কোনো আইন ভাঙলে রাষ্ট্রীয় কিছু সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, “অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করা ব্যক্তির নাগরিকত্ব হারানোর বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত। অস্ট্রেলিয়ার সামরিক বাহিনী যখন আফগানিস্তান ও ইরাকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, তখন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর হয়ে অস্ত্র ধরা আমাদের দেশেরই বিরুদ্ধতা করা। বিষয়টিকে এভাবেই দেখতে হবে।”
“সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের কিছু নাগরিক সুবিধা স্থগিত করার বিষয়টি পরীক্ষা করছি আমরা। এগুলোর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া ছাড়ার বা অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে আসার ব্যাপারে বিধিনিষেধ আরোপ করার বিষয়টি থাকতে পারে।”
“বিদেশে অস্ট্রেলীয় দূতাবাসের সেবা পাওয়ার বিষয়ে বিধিনিষেধ আরোপসহ কল্যাণমূলক ভাতাও স্থগিত হতে পারে,” বলেন তিনি।
“দেশে ও বিদেশে, সন্ত্রাসের হুমকি বেড়েই চলেছে, আর এদের সঙ্গে লড়াই করাও দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছে। সিরিয়া ও ইরাকের অধিকাংশ এলাকায় নতুন একটি অন্ধকার যুগ গেড়ে বসছে, এর প্রমাণ টেলিভিশনে দেখে ও সংবাদপত্র পড়ে আমরা পেয়েছি। ধর্মের নামে শিরশ্ছেদ, ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ এবং যৌন ক্রীতদাসত্ব দেখছি আমরা।”
ব্যক্তি স্বাধীনতা ও সমাজের নিরাপত্তার সীমাটি অস্ট্রেলিয়ার পুনর্বিবেচনা করে দেখা উচিত বলেও সতর্ক করেন তিনি।
অস্ট্রেলিয়া ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তা হুমকির মুখোমুখি হচ্ছে, বিশেষ করে ইসলামপন্থি উগ্রবাদীদের দিক থেকে, এসব সতর্কতা দেশটির কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে জানিয়ে আসছিলেন।
বহু অস্ট্রেলীয় নাগরিক ইরাক ও সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট’র (আইএস) হয়ে লড়াই করছেন, এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে এসেছেন বলে বিশেষভাবে উল্লেখ করেছিলেন তারা।
কিন্তু দেশটির নাগরিকত্ব আইন, সংবিধানে স্বীকৃত ব্যক্তি স্বাধীনতা ইত্যাদি কারণে সতর্কতা সত্বেও অনেক নিরাপত্তা পদক্ষেপ নিতে পারেনি দেশটির কর্তৃপক্ষ।