শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০১:৩৫

রাজনীতিতে শিশুদের ব্যবহার নিষিদ্ধ আইন সংসদে উত্থাপিত

রাজনীতিতে শিশুদের ব্যবহার নিষিদ্ধ আইন সংসদে উত্থাপিত

 

 

 

 

 

 

 

 

 

স্বদেশ জুড়ে ডেস্ক: রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে শিশুদের ব্যবহার বন্ধ করতে সংসদে উত্থাপিত আইনে ‘শিশু বিল-২০১৩’ তে সুনির্দিষ্ট বিধান সংযোজনের প্রস্তাব দিয়েছে সংসদীয় কমিটি। বুধবার সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ‘শিশু বিল-২০১৩’ নিয়ে এ আলোচনা হয়।

শিশু বিল-২০১৩’  আইন সংযোজনের মূল কারণ, গত ৫ মে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা অবরোধ এবং মতিঝিলের সমাবেশে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিশুদের জমায়েত করা হয়। অভিযোগ আছে, বিভিন্ন কওমী মাদ্রাসার শিক্ষকরা ছাত্রদের ভয় দেখিয়ে ঢাকায় জমায়েত করে। এছাড়া মাদ্রাসা, এতিমখানাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিশু নির্যাতন এবং শিশু পাচার বন্ধে বিধান রাখারও প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। শিশুদের কল্যাণ, সুরক্ষা ও অধিকার নিশ্চিত করতে গত ৩০ এপ্রিল ‘শিশু বিল-২০১৩’ সংসদে উত্থাপিত হয়। পরে এটি পরীক্ষা করে সংসদে রিপোর্ট দেয়ার জন্য সংসদীয়ে কমিটিতে পাঠানো হয়।
প্রস্তাবিত আইনে প্রত্যেক থানায় একটি করে শিশু ডেস্ক গঠন করার কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রত্যেক থানায় উপ-পরিদর্শক পদমর্যাদার একজনকে শিশু বিষয়ক পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে। বিলে আলাদা শিশু আদালত প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করে বলা হয়েছে, আইনের সাথে সংঘাতে জড়িত শিশু বা আইনের সংস্পর্শে আসা শিশু কোন মামলায় জড়িত থাকলে, যেকোন আইনের অধীনেই হোক না কেন, ওই মামলা বিচারের এখতিয়ার কেবল শিশু-আদালতের থাকবে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, “সময়ের বির্বতর্ন শিশুর সুরক্ষা, অধিকার উন্নয়ন ও বিকাশের বহুমাত্রিকতা, আন্তর্জাতিক প্রবণতা বিবেচনায় ‘শিশু আইন-১৯৭৪’ যুগোপযোগী করা প্রয়োজন। এই বিধান লঙ্ঘন করলে এক বছর কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের শাস্তি দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। শিশু পাচার বন্ধে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক গুরুত্ব বাড়ানোর প্রস্তাব রেখেছে সংসদীয় কমিটি।

প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, শিশু আদালত ওই আদালতে শিশুর প্রথম উপস্থিতির তারিখ থেকে ৩৬০ দিনের মধ্যে বিচার শেষ করতে হবে। তবে প্রয়োজনে আরও ৬০ দিন সময় বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। বিলে শিশু অপরাধী ও প্রাপ্ত বয়স্ক অপরাধীকে একসঙ্গে কোনো অপরাধের দায়ে চার্জশিট না দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া যেকোনো মামলায় শিশুকে অবশ্যই জামিন দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে।

বিলে বলা হয়েছে, কোন শিশুকে মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া যাবে না। আরো বলা হয়েছে, নয় বছরের নিচের কোনো শিশুকে কোনো অবস্থাতেই গ্রেপ্তার বা আটক রাখা যাবে না। নয় বছরের বেশি কোন শিশুকে গ্রেপ্তার বা আটক করা হলে হাতকড়া বা কোমরে দড়ি পরানো যাবে না। প্রস্তাবিত আইনের অধীন শিশুদের সুরক্ষা দিতে প্রত্যেক জেলা-উপজেলা-মেট্রোপলিটন এলাকায় প্রবেশন কর্মকর্তা নিয়োগের বিধান রাখা হয়েছে। এই আইনের অধীন বিচারাধীন কোন মামলা বা বিচার কার্যক্রম সম্পর্কে প্রিন্ট বা ইলেকট্রনিক মিডিয়া বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে শিশুর স্বার্থের পরিপন্থী হয় এমন কোনো প্রতিবেদন, ছবি বা তথ্য প্রকাশ করা যাবে না, যার দ্বারা শিশুটিকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে শনাক্ত করা যায়।

সংসদীয় কমিটির বৈঠক সম্পর্কিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সংসদে উত্থাপিত বিলে শিশুদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার বন্ধে কোনো বিধান ছিল না। এই বিধান বিলে রাখার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। মাদ্রাসা, এতিমখানাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিশুরা নানারকম নির্যাতনের শিকার হয়। এগুলো বন্ধ করতেও প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।  কমিটিতে উত্থাপিত বিষয়গুলো সংযোজন করে আগামী ৫ জুন কমিটির বৈঠকে বিলটি আবার উত্থাপন করা হবে।

 




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024