আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। পার্লামেন্টের মানবাধিকারবিষয়ক সাব-কমিটি বলেছে, সংলাপের মধ্য দিয়ে চলমান সংকট নিরসনের আগ্রহ বাংলাদেশের বড় দুই দলের মধ্যে লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনাকালে সাব-কমিটির সদস্যরা তাদের উদ্বেগের কথা জানান।
এই কমিটির সদস্যরাই সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করে ব্রাসেলস ফিরে গেছেন। বাংলাদেশ সফরকালে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মানবাধিকারবিষয়ক প্রতিনিধি দলটি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করে। এ ছাড়া প্রতিনিধি দলটি সুশীল সমাজ, মানবাধিকার কমিশন ও ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে। বাংলাদেশ সফরের অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচনার জন্যই মূলত এ বৈঠক। বৈঠকে প্রতিনিধি দলটি জানায়, তারা বাংলাদেশে স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে কথা বলে যে টুকু বুঝেছে তা হল- দু’পক্ষের মধ্যে সমঝোতার কোনো সুযোগ তারা দেখছে না। তারা জানান, বিবদমান পক্ষগুলো খুবই অনমনীয় অবস্থানে।
ঢাকায় কেউ কেউ তাদের জানিয়েছেন, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে না। যদি এভাবে চলতে থাকে পরিস্থিতি একপর্যায়ে ‘গৃহযুদ্ধে’ রূপ নিতে পারে। বৈঠকে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বলেন, চলমান সহিংসতা বন্ধে দেশটির সব পক্ষকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সাব-কমিটির প্রতিনিধি দলটি ১৬ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি বালাদেশ সফর করে। এদিকে বাংলাদেশ সফরকালেই সামগ্রিক মূল্যায়নের ভিত্তিতে ১৯ ফেব্রুয়ারি একটি বিবৃতি দেয় ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এ প্রতিনিধি দল।
ওই বিবৃতিতে সহিংসতা বন্ধ এবং রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সিভিল সোসাইটি ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বানে সাড়া দিতে আহ্বান জানায়। একই সঙ্গে জোরপূর্বক গুম করে ফেলা, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তারা। মূলত শ্রম অধিকার, শিশু, নারী ও সংখ্যালঘু অধিকার বিষয়ে সফর করতে আসে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মানবাধিকারবিষয়ক এ প্রতিনিধি দল। কিন্তু প্রতিনিধি দলটি দেশের সহিংস রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে সিভিল ও রাজনৈতিক অধিকারের প্রতিও বিশেষ দৃষ্টি দেয়। বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠকও করেছে প্রতিনিধি দলটি।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টে ইউরোপীয় পিপলস পার্টির এমপি রুমানিয়ার রাজনীতিবিদ ক্রিস্টিয়ান ড্যান প্রেদার নেতৃত্বে মানবাধিকারসংক্রান্ত উপকমিটির এ প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করে। প্রতিনিধি দলের অপর দুই সদস্য হলেন- সোসালিস্ট ও ডেমোক্রেটদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্সের এমপি জোসেফ উইডেনহোলজার এবং ইউরোপিয়ান কনজারভেটিভ ও রিফর্মিস্ট গ্রুপের ক্যারল কারাস্কি।