শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:০৬

নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির

নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির

নিউজ ডেস্ক: দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলা অবরোধে অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার। কাঁচাপণ্যের উৎপাদন ও সরবরাহে সঙ্কট দেখা দিয়েছে। পিয়াজ, আলুসহ বেশ কিছু পণ্যের দামও বেড়েছে। কয়েক সপ্তাহ আগেও যে মুরগির দাম ছিল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, তা এখন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। একইভাবে প্রতি কেজি দেশী পিয়াজের দাম ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। তা বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। খুচরা পর্যায়ে পিয়াজের দাম গিয়ে ঠেকেছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়।

এছাড়া ১০ টাকার আলু বিক্রি হচ্ছে ১৬ টাকায়। বিষয়টি সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর হিসাবেও উঠে এসেছে। সংস্থাটি দাবি করেছে, রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজারে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকায়। একইভাবে দেশী পিয়াজ ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা আগের মাসে ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা।

তবে খুচরা বাজারে ৬০ টাকা কেজিতেও দেশী পিয়াজ বিক্রি করতে দেখা গেছে। লাল মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়। কাওরান বাজারের ব্যবসায়ী মো. সেলিম উদ্দিন জানান, গত সপ্তাহের তুলনায় ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ৩০ টাকা। আগে দৈনিক ১৫০০ মুরগি এলেও বর্তমানে আসছে মাত্র ৭০০টি।

মুরগি উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় এমনটি হয়েছে বলে জানান তিনি। যোগাযোগ করা হলে জুরাইন কাঁচাবাজারের পিয়াজ বিক্রেতা আমিনুল হক জানান, দেশী পিয়াজের সঙ্কট। সে কারণে প্রতিকেজি ভাল মানের পিয়াজ ৬০ টাকা দরে বিক্রি করছি। চাহিদার তুলনায় মোকামে সামান্য পিয়াজ পাওয়া যায়। পণ্য সঙ্কটের কারণে দাম চড়া বলে জানান তিনি। টিসিবি’র তথ্যে আরও দেখা যায়, আমদানিকৃত পিয়াজ ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টিসিবি’র হিসাবে এক বছরে আমদানিকৃত পিয়াজে ৬৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ ও দেশী পিয়াজে ৮৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ দাম বেড়েছে।

এ প্রসঙ্গে পিয়াজ পাইকারি ব্যবসায়ী ও আমদানিকারক মো. গোলাম মাওলা বলেন, হরতাল ও অবরোধের কারণে ব্যবসায়ীরা পিয়াজ আনতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। আবার ঝুঁকি নিয়ে আমদানি করলেও সময়মতো তা আনা যাচ্ছে না। এ কারণে পিয়াজ আমদানি কমে গেছে। দেশী আগাম মওসুমের পিয়াজ শেষ পর্যায়ে। সংরক্ষণে রাখার পিয়াজ আসতে আরও সময় লাগবে। এ কারণে বাজারে ঘাটতি বেড়েছে। চাহিদা বেশি থাকায় দাম বেড়ে গেছে। এছাড়া পণ্যপরিবহন সমস্যা তো আছেই। পণ্য পরিবহনে ভাড়া বেড়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ভোমরা বন্দর থেকে এক ট্রাক পিয়াজ আনতে ৪৫ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হচ্ছে, যা আগে ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকায় আনা সম্ভব হয়েছে। আবার পচনশীল এ পণ্য নানা কারণে বন্দর থেকে নিয়ে আসতে দেরি হওয়ায় নষ্ট হচ্ছে।

এর ফলে পিয়াজের দাম বেশি পড়ছে। কাওরানবাজারের পিয়াজ ব্যবসায়ী জব্বার হোসেন বলেন, মোকাম থেকে যে দামে কিনছেন তার সঙ্গে ট্রাক ভাড়াসহ অন্যান্য খরচ হিসাব করেই পরে একটা নির্ধারিত দামে বিক্রি করার ইচ্ছ থাকলেও নানাবিধ কারণে ওই দাম আর বিক্রি করা যাচ্ছে না। সে কারণে দাম বার বার পরিবর্তন হচ্ছে। তিনি বলেন, লোকসান দিয়ে কেউ ব্যবসা করবেন না। মোকামে কম দামে বিক্রি হলে পাইকারিতেও দাম কমে যাবে। এছাড়া সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিটি কাঁচা পণ্যের দাম ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজির মধ্যে টমেটো প্রতিকেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৪০ টাকা, লাল শাকের আঁটি ৫ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, শিম ৩০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতি পিস ২০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ২০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ফুলকপি প্রতি পিস ৩০ টাকা, মটরশুঁটি প্রতিকেজি ৫০ টাকা, ঢেঁড়স প্রতিকেজি ৬০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, পুঁইশাক প্রতিকেজি ২০ টাকা, গাজর প্রতিকেজি ২০ টাকা, আলু ১৫ থেকে ১৬ টাকা ও ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৩২ থেকে ৪৮ টাকায়। চাল চিকন (মিনিটেক) বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৫২ টাকা, মিনিকেট আটাশ প্রতি কেজি ৪২ টাকা, আটাশ প্রতিকেজি ৪৫ টাকা ও মোটা চাল প্রতি কেজি ৩৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ময়দা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪৫ টাকা ও আটা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩৮ টাকা দরে।




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024