আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশে আটকে পড়া পাকিস্তানিদের দায়িত্ব পাকিস্তান নেবে না বলে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর অনেক পাকিস্তানি বাংলাদেশে আটকা পড়েন। জাতিগত পরিচয়ে তাদের অধিকাংশই বিহারি। সোমবার (৩০ মার্চ) বাংলাদেশে আটকে পড়া পাকিস্তানিদের স্বদেশে প্রত্যাবাসনের জন্য গঠিত কমিটির এ বিষয়ক একটি আবেদনের শুনানি শুরু করেছেন পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট।
এ শুনানিতে দেশটির সরকারের পক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সোহেল মাহমুদ জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে ৪০ থেকে ৫০ লাখ আটকে পড়া পাকিস্তানি বসবাস করছেন। ‘এই মানুষগুলোর দায়-দায়িত্ব শুধুই বাংলাদেশের’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে আটকে পড়া পাকিস্তানি-বিহারিদের অধিকাংশই আর পাকিস্তানে ফিরে আসতে চান না। এ ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৭৪ সালের ৯ এপ্রিল পাকিস্তান, ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে যুদ্ধবন্দি এবং আটকে পড়া বেসামরিক নাগরিকদের স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সম্পন্ন হয়। আর এ চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে, বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট অবাঙালিদের নাগরিকত্ব বিষয়ে আদেশ দেওয়ার আগে পর্যন্ত প্রায় এক লাখ সত্তর হাজার পাকিস্তানি নাগরিক সেদেশে ফিরে গেছেন।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই প্রতিবেদনের সঙ্গে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের ২০০৩ এবং ২০০৮ সালের এ বিষয়ক রায়ের কপি সংযুক্ত করে জানিয়েছে, এ রায়গুলোতেও বিহারিদের বাংলাদেশের নাগরিক বলে মেনে নেওয়া হয়েছে এবং ভোটাধিকারের ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও বাংলাদেশে বসবাসরত বিহারিদের অনেকেই গত দু’টো সংসদ নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন এবং বাংলাদেশের পাসপোর্ট বহন করছেন বলে দাবি করেছে ওই প্রতিবেদন। যদিও এ প্রতিবেদন প্রকাশের আগে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, বাংলাদেশে আটকে পড়া পকিস্তানিদের ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করছে।