সুইডেনের স্টকহোমে অভিবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে ক্রমান্বয়ে দাঙ্গা অব্যাহত রয়েছে। অভিবাসী অধ্যুষিত এলাকাসহ অন্যান্য এলাকাগুলোতেও গত ৫ দিন ধরে অসংখ্য গাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে। শান্ত জাতি ও শান্ত দেশ হিসেবে বিশ্বের কাছে সুইডেনের যে ভাবমূর্তি ছিল এ ঘটনায় তা অনেকটাই ম্লান হয়ে যেতে বসেছে এখন।
স্টকহোম পুলিশের মুখপাত্র কেল লিন্ডগ্রেন বলেছেন, মঙ্গলবার রাতে ৩০টি গাড়িতে অগ্নি সংযোগ করা হয়েছে।অগ্নি সংযোগ করা হয়েছে স্কুল, দোকানপাট, পুলিশ স্টেশনে। উচ্ছৃঙ্খল তরুণ এবং অপরাধীরাই এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি। পুলিশের হাতে এ মাসের শুরুতে ৬৯ বছর বয়সী এক ব্যক্তি নিহত হওয়ার সূত্র ধরে এ সহিংসতার সূত্রপাত।
অভিযোগ রয়েছে, পুলিশ কুপিয়ে তাকে হত্যার মাধ্যমে সহিংসতার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকেও সবাইকে সহিংসতা থেকে নিবৃত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতভর স্কটহোমের ৭০টি স্থানে বিক্ষুব্ধ তরুণরা গাড়িতে অগ্নি সংযোগ করেছে। তিনটি স্কুলে আগুন দেয়া হয়েছে। এসব স্থানে দায়িত্ব পালন করেছেন অগ্নিনির্বাপকরা।
সুইডেনে বসবাসকারীদের মধ্যে শতকরা ১৫ ভাগই হলো অভিবাসী। তাদেরকে আত্তীকরণ করা নিয়ে বিতর্কও চলছে। শরণার্থী বিষয়ক নীতি গ্রহণের আগে যেসব অভিবাসী সেখানে গিয়েছেন তাদের বেশির ভাগই সেখানকার ভাষা শিক্ষা ও চাকরি পাওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিন্তু তারা তা না পেয়ে দাঙ্গায় জড়িয়ে পড়েছে।
ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সুইডেনে জীবনযাত্রার মান সবচেয়ে ভাল হলেও সরকার সেখানকার তরুণ প্রজন্মের বেকারত্ব এবং দারিদ্র মোকাবিলায় ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এর ফলে সবচেয়ে বেশি গক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেখানকার অভিবাসী সমপ্রদায়। সুইডেনের মোট জনগোষ্ঠীর ১৫ ভাগই বিদেশী বংশোদভূত। এদের মধ্যে বেকারত্বের হার ১৬ ভাগ। আর সুইডেনের জনগোষ্ঠীর মধ্যে এ হার মাত্র ৬ শতাংশ।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী ফ্রেডরিক রেইনফেল্থের শান্ত থাকার আহ্বান সত্ত্বেও স্কুলে হামলা করা হয়েছে। আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে বিভিন্ন বিতানে দোকানে। সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রশ্নে বিশেষ খ্যাতি সম্পন্ন ইউরোপের সবচেয়ে ধনী দেশের রাজধানীতে এ ধরনের সহিংসতা সুইডেনের তরুণ প্রজন্মের বেকারত্ব এবং অভিবাসীদের সমস্যা মোকাবিলা করার বিষয়টি নিয়ে এখন বিতর্ক উস্কে দিয়েছে।
সূত্র: বার্তা সংস্থা এএফপি।
Leave a Reply