মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২৬

টাটকা রস: ভারতের পরাজয়ের ময়নাতদন্ত

টাটকা রস: ভারতের পরাজয়ের ময়নাতদন্ত

আহমেদ খান: অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেমিফাইনালে হেরে গেছে ভারত। এই হারের কারণ খুঁজছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ও সাধারণ জনগণ। রস+আলো এগিয়ে এসেছে কারণগুলো শনাক্তের জন্য।

.‘এ’ ফ্যাক্টর

‘এ’–তে আনুশকা, ‘এ’–তে আলিম দার

প্রথমজনের উপস্থিতি এবং দ্বিতীয়জনের অনুপস্থিতি ম্যাচে বড় একটা পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। বিরাট কোহলি মাঠে নামার পরই জায়ান্ট স্ক্রিনে আনুশকাকে দেখানো হয়। অত বড় পর্দায় মেকআপহীন আনুশকাকে দেখে কোহলি একটা বিরাট ধাক্কা খান। ভূত দেখার মতো চমকে ওঠেন। মেকআপের রাগ বলের ওপর ঝাড়তে যান কোহলি। কিন্তু ভুল শটের বিষয়টিও মেকআপ করতে পারেন না। ড্রেসিংরুমে ফিরে আসেন ক্যাচ দিয়ে। ফলে কোহলির উঠিয়ে দেওয়া ক্যাচ আর ঝুলে যাওয়া ম্যাচ থেকে কখনোই ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি টিম ইন্ডিয়া। আর ওই না পারার আরেকটি কারণ আম্পায়ার আলিম দার। তিনি থাকলে কোহলিসহ আরও অন্তত দুজন ব্যাটসম্যানের আউটে তিনি নো বল ডাকতেন। আর তাহলেই ম্যাচে ফিরে আসত টিম ইন্ডিয়া।

 

‘আর’-এ রুবেল,

‘আর’-এ রোহিত শর্মা

টিম ইন্ডিয়ার বোলারদের বেধড়ক পেটাচ্ছেন টেলএন্ডার মিচেল জনসন। কে বাঁচাবে টিম ইন্ডিয়াকে? তাদের কাছে নেই ইয়র্কমাস্টার রুবেল। একজন রুবেল মানে হলো ঝাঁকে ঝাঁকে জাটকার মতো ঝাঁকে ঝাঁকে ইয়র্কার। রুবেলের মতো ডেথ ওভার স্পেশালিস্ট না থাকার কারণেই টিম ইন্ডিয়াকে পঞ্চাশ রান বেশি দিতে হয়েছে। দলটির বোলারদের উচিত রুবেলের কাছে টিপস নিতে আসা। ওদিকে আরেক ‘আর’ রোহিত শর্মা সাধারণত কিস্তিতে আউট হয়ে অভ্যস্ত। প্রথম কিস্তিতে আউট হওয়াটা তিনি ধর্তব্যের মধ্যেই নেন না। বাংলাদেশের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচেও তা হয়েছে। দ্বিতীয় বা তৃতীয় কিস্তিতে যখন আম্পায়াররা রোহিতকে চক্ষুলজ্জায় আউট দিতে বাধ্য হন, ততক্ষণে তিনি সেঞ্চুরি করে বসেন। এই ম্যাচে আম্পায়াররা ভুলবশত রোহিতকে প্রথম কিস্তিতেই আউট দিয়ে দেন। টিম ইন্ডিয়ার মহান ব্যাটিং লাইনআপ এই ভুল মেনে নিতে পারেনি।

 

‘এম’-এ মাহমুদউল্লাহ

‘এম’-এ মুশফিক

ব্যাটিংয়ে প্রথমে তিন–চারটা উইকেট হারানোর পরও দলের রান কীভাবে ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে হয় তার ওপর পিএইচডি লাভ করেছেন মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিক। মাহমুদউল্লাহ হলেন রান–নায়ক। একবার রান করা শুরু করলে আর থামতে পারেন না। কেউ তাঁকে আউটও করতে পারে না। অন্যদিকে মুশফিক হলেন ছক্কাপটীয়সী। খেলতে খেলতে ঠাশঠুশ করে কখন যে তিনি ছক্কা হাঁকিয়ে বোলারের মেরুদণ্ড ভেঙে দেন, বোঝা যায় না। আফসোস, তাঁদের মতো একটা ব্যাটসম্যান ছিল না টিম ইন্ডিয়ার। যদি থাকত, তাহলে সেমিফাইনালটা তারা জিততে পারত।

‘এক্স’ ফ্যাক্টর

আর এই ম্যাচে ভারতের পরাজয়ের সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর ছিল বাংলাদেশের জনগণ। কোয়ার্টার ফাইনালে অনৈতিকভাবে বাংলাদেশকে পরাজিত করার পর এই জনগণ টিম ইন্ডিয়াকে সমর্থন করেনি; বরং ১৬ কোটি মানুষের সমর্থন ছিল অস্ট্রেলিয়ার প্রতি। অস্ট্রেলিয়া এর আগে কখনো এত বৃহৎ জনগোষ্ঠীর সমর্থন পায়নি। ওই সমর্থন পেয়ে তারা ছিল উজ্জীবিত। বাংলাদেশকে তারা নিরাশ করতে চায়নি।

 

‘সি’-এ ক্যাপ্টেন

বাংলাদেশ দলের ক্যাপ্টেন মাশরাফি বিন মুর্তজা মাঠে নামার আগে সবাইকে চাঙা রাখেন। কখনো বলেন, ‘ধরে দিবানি’, কখনো বলেন, ‘রক্তের শেষ বিন্দু দিয়ে খেলব’। ম্যাচ চলাকালে বোলারদের পিঠ চাপড়ে, ঘাড়ে হাত দিয়ে, বুকে বুক মিলিয়ে উজ্জীবিত রাখেন সবাইকে। সবার ভেতরের আগুনকে তিনি বের করে নিয়ে আসেন সুনিপুণভাবে। মাশরাফি হলেন ক্যাপ্টেন ফায়ার। অন্যদিকে টিম ইন্ডিয়ার ক্যাপ্টেন ধোনি হলেন ক্যাপ্টেন কুল। মাঠে যা–ই ঘটুক না কেন, তার মুখে উজবেকিস্তানি দার্শনিকতা। তিনি দৌড়ে বোলারের পিঠও চাপড়ে দেন না, মাথার চুলও এলোমেলো করে দেন না, শূন্যে লাফিয়ে বুকের সঙ্গে বুকও মেলান না। এসব ব্যাপার তিনি উঠিয়ে রাখেন বিজ্ঞাপনের জন্য। ফলে সেমিফাইনাল ম্যাচে টিম ইন্ডিয়ার খেলোয়াড়দের আগুনটা বেরিয়ে আসেনি। ইশ্, তাদের যদি মাশরাফির মতো ক্যাপ্টেন থাকত! তাহলে তারাও হয়তো অস্ট্রেলিয়াকে বলতে পারত, ‘ধরে দিবানি!’




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024