শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করার লক্ষ্য নিয়ে তিনদিনের সফরে চীন গেছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি চীনের প্রাচীন শহর শিয়ানে পৌঁছান বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-র হোমটাউন শিয়ান থেকেই চীন সফর শুরু করছেন মোদী। শিয়ানে মোদীর উপস্থিতি একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। কারণ এখানে মোদীকে স্বাগত জানিয়ে চীনা সরকার নিজেদের প্রটোকল ভেঙেছেন।
২০১৪ সালে শি-র ভারত সফরের সময়ও মোদীর নিজ রাজ্য গুজরাট দিয়ে সফর শুরু করেছিলেন চীনা প্রেসিডেন্ট। এবার মোদীর সফরেও একই ধরনের আয়োজন করে চীন নিজেদের আন্তরিকতা ও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কতোটা গুরুত্ব দিচ্ছে তারা তা তুলে ধরা হল বলে মনে করছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্র দৈনিক চায়নার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী মোদী পৌঁছানোর পর তাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের অভ্যর্থনা দেয়া হবে। শানশি প্রদেশের রাজধানী শিয়ানে থাকাকালে পুরোটা সময় তাকে সঙ্গ দেবেন প্রেসিডেন্ট শি। বেইজিংয়ের বাইরে কোনো বিদেশি অতিথিকে চীনা নেতার সঙ্গ দেওয়াটা এক বিরল ঘটনা।
বৃহস্পতিবার বিকেলে শিয়ানে মোদী ও শি শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকে মিলিত হবেন। এছাড়া দুনেতা শানশির বিখ্যাত বন্য হংস প্যাগোডায় যাবেন ও টেরাকোটা যোদ্ধাদের প্রদর্শনী দেখবেন। বন্য হংস প্যাগোডাটি চীনের খ্যাতনামা বৌদ্ধ ভিক্ষু শুয়ান ঝ্যাং-র ভারত যাত্রা উপলক্ষে ৬৪৫ খ্রিস্টাব্দে তৈরি করা হয়েছিল। ভিক্ষু শুয়ান প্রাচীন সিল্ক রোড ধরে ভারতে এসেছিলেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোদী চীনের রাজধানী বেইজিং উদ্দেশে রওয়ানা হবেন। শুক্রবার বেইজিংয়ে চীনা নেতাদের সঙ্গে মোদীর আনুষ্ঠানিক বৈঠক শুরু হবে। বেইজিং থেকে চীনের প্রধান বাণিজ্যিক নগরী সাংহাই যাবেন মোদী। মোদীর এ সফরে দুদেশের মধ্যে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলারের ২০টি বাণিজ্য চুক্তি সই হবে বলে আশা করছে দুপক্ষ।
দুদেশের দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বাণিজ্য ঘাটতি গুরুত্ব পাবে বলে এনডিটিভিকে জানিয়েছে কয়েকটি সূত্র। ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৪৮ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলার। বাণিজ্য ঘাটতি ছাড়াও চীনের উচ্চাভিলাসী সিল্ক রোড প্রকল্প নিয়েও দুদেশের মধ্যে আলোচনা হবে।
তবে দুদেশের মধ্যে দীর্ঘকাল ধরে চলে আসা বিরোধের উৎস সীমান্ত নিয়ে মোদীর এ সফরে বড় ধরনের কোনো অগ্রগতি হবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। এর মধ্যে চীনের নাগরিকদের জন্য ভারত ই-ভিসার ঘোষণা দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।