নিউজ ডেস্ক: যুক্তরাজ্য বিএনপির আসন্ন কমিটি নিয়ে অন্তরালে তোলপাড় চলছে । আসছে চমক। বিশেষ করে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারপার্সন তারেক রহমান গত ১২ মে লন্ডনে বিভিন্ন জোনাল কমিটির ৭৪ জন সভাপতি সম্পাদকের সাথে ভবিষ্যত নেতৃত্বের ব্যাপারে কথা বলার পর শুরু হয় নানা জল্পনা কল্পনা। কারা আসছেন যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতৃত্বে এমন আলোচনা এখন টক অব দ্যা কমিউননিটি।
বিএনপির নেতাকর্মীরা ছাড়াও স্থানীয় আওয়ামীলীগ থেকেও দেখার অপেক্ষা চলছে এবার বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান কাকে দেন যুক্তরাজ্য বিএনপির দায়িত্ব। গতবারের কমিটি গঠনের সময় কয়েকজন ছাড়া যুক্তরাজ্য বিএনপির অনেক নেতার সাথেই পরিচয় ছিল না বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের। আর এখনকার পরিস্থিতি ভিন্ন। এবারের কমিটিতে পদ-প্রত্যাশী সকল নেতার ব্যাপারেই ভালোভাবে অবগত আছেন তারেক রহমান। এ কারণেই এবার যোগ্যতর নেতাকেই নেতৃত্বে আনা হবে এখানে, এমন আশায় বুক বেধেঁছেন নেতাকর্মীরা।
তবে জানা গেছে, যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি পদে যুক্তরাজ্য বিএনপির দীর্ঘদিনের কান্ডারী ও সাবেক আহবায়ক এম এ মালেক আসছেন, এটা অনেকটা নিশ্চিত। নেতাকর্মীদের কাছে অতি জনপ্রিয় এম এ মালেক বিগত দিনে প্রবাসে সরকার বিরোধী আন্দোলনে ছিলেন সামনের সারিতে। এছাড়া লন্ডনে প্রধানমন্ত্রীর সফরের সময় বিক্ষোভ, ইউরোপজুড়ে বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রীদের সফরের সময়ও বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন মালেক। এরই ধারাবাহিকতায় বিএনপি হাইকমান্ড এবার এম এ মালেককে তার দীর্ঘদিনের ত্যাগের মুল্যায়ন হিসেবেই সভাপতি পদে আনছেন এমন আলোচনা এখন সর্বত্র। কমিটি এখনো ঘোষণা না হলেও এরই মধ্যে নেতাকর্মীরা ফুলেল শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন বর্ষীয়ান নেতা এম এ মালেককে।
ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নেতাকর্মীরা এম এ মালেককে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রবাসে আন্দোলন চাঁঙ্গা করবার ব্যাপারে দিচ্ছেন ষ্টাটাসও। এ ব্যাপারে এম এ মালেক জানান, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক গণমাধ্যমেও অনেক শুভাকাঙ্খী আমাকে সভাপতি হিসেবে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই – সম্প্রতি দেশনায়ক তারেক রহমান যুক্তরাজ্য বিএনপির ভবিষ্যত নেতৃত্বে কাদের আসা উচিত এ ব্যাপারে তৃণমুল নেতৃবৃন্দের বক্তব্য শুনেছেন। কমিটি এখনও ঘোষিত হয়নি, তাই আমি এখনও সভাপতি হইনি। মালেক বলেন, তৃণমূলের নেতাদের সাথে তারেক রহমানের এবারের বৈঠকে উঠে আসা মতামতের প্রেক্ষিতে নতুন কমিটি আসবে। এখানে যদি বিএনপি চেয়াপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়াপার্সন তারেক রহমান আমাকে যোগ্য করেন তাহলে আমাকে পদায়ন করবেন। এটা সম্পূর্ণ হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তের বিষয়। আর কোন পদ না পেলেও আমি আজীবন বিএনপির জন্য আমার কাজ অব্যাহত রাখবো।
এদিকে, সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। বর্তমান সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমেদ পদটি ধরে রাখতে চাইলেও এ পদের জন্য জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন আশি’র দশকের ছাত্রদল নেতা শরীফুজ্জামান চৌধুরী তপন ও বর্তমান প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ চৌধুরী। আরোও আলোচনায় আছেন বিএনপি নেতা প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন, নসরুল্লাহ খান জুনায়েদ ও যুবদলের আহŸায়ক দেওয়ান মোকাদ্দেম হোসেন চৌধুরী নিয়াজ। তবে শেষ মুহুর্তে তারেক রহমানের মানবাধিকার বিষয়ক উপদেষ্টা ব্যারিষ্টার আব্দুস সালাম যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। আর ত্যাগী বিএনপি নেতা কামাল উদ্দিনের পাশাপাশি প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদের দাবিদার সাবেক ছাত্রনেতা ও বর্তমান যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাহির রায়হান চৌধুরী পাবেল, বর্তমান দপ্তর সম্পাদক ড. মুজিবুর রহমান মুজিব, আতিকুর রহমান চৌধুরী পাপ্পু।
সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আলোচনায় আছেন বিএনপি নেতা খসরুজ্জামান খসরু, আবেদ রাজা, বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন সেলিম, যুবদল নেতা আব্দুল বাছিত বাদশা, টিপু আহমেদ।
নেতাকর্মীরা মনে করেন যুক্তরাজ্যে তারেক রহমান যেহেতু গত কয়েক বছর ধরে সরাসরি রাজনীতি তদারকি করছেন সেক্ষেত্রে এবার সৎ, যোগ্য ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের আসন্ন কমিটিতে স্থান পাবার সম্ভাবনা বেশী। তবে সব কিছুই নির্ভর করছে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর। এখন শুধু দেখার পালা । তবে এজন্য অপেক্ষা করতে হবে এ মাসের শেষ পর্যন্ত।