শীর্ষবিন্দু নিউজ: মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে দিয়ে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে গ্যাস পাইপলাইন নেয়ার পুরনো উদ্যোগটি ফিরিয়ে আনছে ভারত সরকার। বর্তমানে ঢাকার সঙ্গে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের’ সূত্র ধরে ২০০৪-০৫ সালের সেই প্রকল্প আবারো ফিরিয়ে আনার কথা ভাবছে নয়া দিল্লি। তাছাড়া এতে ট্রানজিট ফি হিসেবে বাংলাদেশেরও অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে। এর আগে বাংলাদেশ সরকারকে রাজি করাতে ব্যর্থ হয়ে ২০০৪-০৫ সালে প্রকল্পটি বাদ দেয় ভারত।
মিয়ানমারের রাজধানী নাইপিদোতে চলমান ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের পূর্ব এশিয়া সম্মেলনে ভারতের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রী আনন্দ শর্মা। এ সফরেই ওই প্রকল্প নিয়ে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আলোচনা করার কথা রয়েছে তার। মিয়ানমারের আরাকানে দুটি গুরুত্বপূর্ণ গ্যাস ব্লকের ইজারা রয়েছে ভারতীয় কোম্পানি ইসারের হাতে। ভারত মনে করছে, ওই দুটি ক্ষেত্র থেকে যে পরিমাণ গ্যাস পাওয়া সম্ভব, তাতে পাইপ লাইন বসানোর বিষয়টি অর্থনৈতিকভাবেও লাভজনক হতে পারে।
অগভীর সাগরে ইসারের নিয়ন্ত্রণে থাকা মিয়ানমারের ‘এ টু’ ব্লকে ১৩ ট্রিলিয়ন ঘণফুট গ্যাসের মজুদ আছে বলে ধারণা করা হয়। আর কেজি-ডি সিক্স ব্লকে আছে ১০ দশমিক ০৩ ট্রিলিয়ন গ্যাস। ওই দুটি ক্ষেত্রের ২০ শতাংশ গ্যাস পাওয়ার জন্য ইতোমধ্যে ইসারের সঙ্গে যোগাযোগও শুরু করেছে ভারতের রাষ্ট্রায়াত্ত কোম্পানি ইন্ডিয়ান অয়েল ও অয়েল ইন্ডিয়া। আর তা সম্ভব হলে দক্ষিণ ভারতে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের কেজি-ডি সিক্স গ্যাসক্ষেত্রের চেয়েও বেশি সরবরাহ নিশ্চিত হবে ভারতের জন্য। ইন্ডিয়ান অয়েল ও অয়েল ইন্ডিয়ার পরামর্শকের দায়িত্ব থাকা এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দুটি কোম্পানিই এসারের বিষয়টি বিবেচনা করে দেখছে।
এদিকে বাংলাদেশের সম্মতি না পেয়ে উত্তর পূর্বাঞ্চল দিয়ে ঘুরিয়ে পাইপ লাইন নিয়ে মিয়ানমারের ক্ষেত্র থেকে পশ্চিমবঙ্গে গ্যাস নেয়ার কথাও ভেবেছিল ভারত সরকার। তবে বাণিজ্যিকভাবে তা সুবিধাজনক না হওয়ায় সেই পরিকল্পনা আর এগোয়নি। অবশ্য নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগও এক্ষেত্রে একটি কারণ। প্রায় দুই বছর অপেক্ষার পর ভারত সরকারের সাড়া না পেয়ে চীনের ইউনান-আরাকান পাইপলাইনের বিষয়ে সম্মতি দেয় মিয়ানমার। আরাকানের উপকূলীয় শহর কিয়াউকপিউ থেকে শুরু হয়ে ইউনান প্রদেশে শেষ হবে এ পাইপ লাইন।
Leave a Reply