শীর্ষবিন্দু নিউজ: বেসরকারি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল ইনডিপেন্ডেন্ট টিভির ‘কেমন মেয়র চাই’ সরাসরি সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেন, নিজেদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ খন্ডন করেন এবং নাগরিকদের লিখিত প্রশ্নের জবাব দেন মেয়রপ্রার্থীরা । রোববার রাত ১১ টায় নগরীর রিকাবীবাজারস্থ সিলেট অডিটোরিয়ামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ইনডিপেন্ডেন্ট টিভির বার্তা প্রধান খালেদ মহিউদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মেয়রপ্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, মামলা ও সম্পত্তি ইত্যাদি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। দুর্নীতির মামলা সম্পর্কে আরিফুল বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী একই রকম মামলার আসামী ছিলেন। কামরানের বিরুদ্ধেও মামলা ছিলো। দেশে রাজনীতি ধ্বংস করার জন্য শীর্ষ রাজনীতিবীদের এরকম মামলা দেওয়া হয়ছিলো। আদালত থেকে তিনি বেকসুর খালাস পেয়েছেন।
জলাবদ্ধতা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে কামরান বলেন, সিলেট একটি বৃষ্টিবহুল এলাকা। ছড়া উপড়ে পানি সড়কে উঠে যায়। আবার আরিফুল হক বলেন, ছড়া ও খালগুলো দখলমুক্ত করা হলে এই জলাবদ্ধতা থাকত না। দুই মেয়র প্রার্থী এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় সুযোগ থাকে না যে কারা পেছনে হাটছেন। আর এই সুযোগে তাদের প্রচারণায় হয়ত মাঝে মধ্যে এক-দুইজন সন্ত্রাসী ঢুকে পড়তে পারে। তবে তারা কেউই সন্ত্রাসী লালন করেন না, সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে সমর্থনও করেন না বলে স্পষ্ট জানালেন দুই মেয়র প্রার্থী।
আরিফুল হক চৌধুরী সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়ে বলেন, যেভাবে প্রকাশ্যে অস্ত্রধারী ও সন্ত্রাসীরা ঘুরে বেড়াচ্ছে-এ অবস্থায় নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করা জরুরী দরকার বলে মনে করেন।। অপরদিকে, সিলেটে এখনও সেনা মোতায়েনের মত কোন পরিস্থিতি নেই বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান।
মহাজোটের শরীক দল জাতীয় পার্টি কামরানের সঙ্গে নেই এমন প্রশ্নের জবাবে কামরান বলেন, জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে আছে ও প্রচারণা করছেন। অপরদিকে ইলিয়াস বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আরিফুল হক বলে, সিলেটে ইলিয়াস আর সাইফুর গ্রুপ বলতে কিছু নেই। দলের কেন্দ্রীয় নির্দেশে তারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। নির্বাচনী ইশতেহার বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে দুই প্রার্থীই বলেন, তারা ২/১ দিনের মধ্যে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করবেন। এদিকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত আরেক মেয়রপ্রার্থী ছালাহ উদ্দিন রিমনকে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা এখনও এসএসসি পরীক্ষার্থী বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তিনি পরীক্ষা দেবেন উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ।
অনুষ্ঠানে আরিফুল অভিযোগ করেন, গত পাঁচ বছর সিলেটে কোন দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়নি। অন্যদিকে কামরান ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টসহ অনেক উন্নয়ন হয়েছে বলে দাবি করেন। বদর উদ্দিন আহমদ কামরান মেয়র থাকাকালে সকল দলের প্রতি সমান আচরণ করেছেন বলে উল্লেখ করেন। অন্যদিকে আরিফুল এর বিরোধীতা করে বলেন, তার দল আওয়ামীলীগের মিছিল সমাবেশে পুলিশ বাঁধা দেয় না আর বিরোধীদল মিছিল সমাবেশ করলে পুলিশ তাতে বাঁধা দেয়। তাহলে কিভাবে তিনি দল নিরপেক্ষ ছিলেন। কামরান বলেন, বিরোধীদলের কর্মসূচি ও হরতাল চলাকালে তিনি বিরোধীদলের সঙ্গে কথা বলে সমঝোতার মাধ্যমে রাজনৈতিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করেছেন। যে রাস্তায় বিরোধী দল অবস্থান করতো-তিনি সে রাস্তায় মিছিল না করে অন্য রাস্তার দিকে মিছিল নিয়ে যেতেন।
আচারণ বিধি লঙ্গন করে নজরুল একাডেমীর একটি অনুষ্ঠানে যোগদান ও অর্থ ছাড় বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মেয়র কামরান বলেন, তিনি একজন সংস্কৃতিমনা মানুষ, এতে আচারণ বিধি লঙ্ঘিত হয়নি। হেফাজতে ইসলামের সিলেটের সমাবেশে খাদ্য পাঠানোর ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি তা অস্বীকার করেন। আরিফুলকেও এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, হেফাজতের প্রতি সরকার অন্যায় অবিচার করেছেন। তিনি হেফাজতের পক্ষে রয়েছেন বলে জানান ।
Leave a Reply