দুনিয়া জুড়ে ডেস্ক: সুইজারল্যান্ডে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রদান আইন আরও কড়া করে উদ্বাস্তুর স্রোতে বাঁধ দেয়ার চেষ্টা করছে সরকার। সুইজারল্যান্ডে একটি গণভোটে ভোটদাতাদের ৭৮ শতাংশের বেশি সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ সমর্থন করেছে। গত রোববার এই ভোট গ্রহন শেষে সুইস সরকার এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বলে জানা যায়।
২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আইন পরিবর্তন করে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রদান প্রক্রিয়ায় রদবদল করে সুইস সরকার। এবার একটি গণভোটের মাধ্যমে সরকারের সেই প্রচেষ্টাকে বিপুল সমর্থন জানাল সুইস জনগণ। সবচেয়ে বড় পরিবর্তন বোধ হয় এই যে, বাধ্যতামূলক সামরিক সেবা থেকে পলায়নকে আর রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার কারণ হিসেবে গণ্য করা হবে না। বিশেষ করে ইরিত্রিয়া থেকে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীরা আসছিল ঠিক এই কারণ দেখিয়ে। সেখানে সব সক্ষম পুরুষ ও মহিলাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য অতি কম বেতনের সামরিক সেবাতে নিযুক্ত করা চলে। গত বছর ইরিত্রিয়া থেকেই সবচেয়ে বেশি রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী সুইজারল্যান্ডে এসেছে।
দ্বিতীয়ত, সুইজারল্যান্ড ছিল ইউরোপের মধ্যে একমাত্র দেশ, বিদেশে যাদের দূতাবাসে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করা চলত। সে সুযোগও তুলে নেয়া হয়েছে। নতুন আইনে যেসব রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী ‘ট্রাবলমেকার’ বলে পরিগণ্য, তাদের স্পেশাল সেন্টারে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অপরদিকে পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলিত হওয়ার সুযোগ শুধু স্ত্রী কিংবা স্বামী এবং পুত্রকন্যায় সীমিত করা হয়েছে। সুইসদের রক্ষণশীল ও সংখ্যাগুরু অংশের ধারণা যে, তাদের দেশে যারা রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করে, তাদের দশজনের মধ্যে নয়জনই আসে অর্থনৈতিক উন্নতির আশায়। সুইসদের বিরুদ্ধে বহিরাগত বিদ্বেষের অভিযোগ করার আগে এটাও মনে রাখা দরকার যে, ৫২ লাখ সুইস ভোটারের মধ্যে ৪০ শতাংশেরও কম ভোটার এই গণভোটে অংশগ্রহণ করেছেন, যার একটা কারণ, সুইজারল্যান্ডে প্রায়ই নানা ধরনের গণভোটের আয়োজন করা হয়ে থাকে।
অপরদিকে এও সত্য যে, সুইজারল্যান্ডের প্রতি ৩৩২ জন নাগরিকপিছু একজন করে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী রয়েছে। অর্থাৎ জনসংখ্যার অনুপাতে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রদানে সুইজারল্যান্ড শুধু মাল্টা, সুইডেন ও লুক্সেমবুর্গের চেয়ে পিছিয়ে। জনসংখ্যার অনুপাতে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীর পরিসংখ্যানে ইউরোপীয় গড় হলো ৬২৫ জন বাসিন্দা পিছু একজন রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী।
Leave a Reply