শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:০০

তাজরিনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় চুক্তি বাতিল করছে ওয়ালমার্ট

তাজরিনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় চুক্তি বাতিল করছে ওয়ালমার্ট

আশুলিয়ায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তৈরি পোশাক ক্রেতা ওয়াল মার্ট দূরত্ব বজায় রাখছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিষ্ঠানটির জন্য আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে তাজরিন ফ্যাশনে পোশাক তৈরি হতো। কিন্তু ওয়াল মার্ট বলেছে, ওই কারখানায় তাদের জন্য পোশাক তৈরির কথা তাদের জানা নেই। তারা আরও বলেছে, তাজরিন ফ্যাশন লিমিটেড নামের কারখানা তাদের জন্য পোশাক তৈরির জন্য অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান নয়। তবে কেউ সাব-কনটাক্টে সেখানে কাজ করিয়ে নিলে সেটা সরাসরি ওয়াল মার্টের নীতির বিরুদ্ধাচরণ। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের এই সবচেয়ে বড় ক্রেতা প্রতিষ্ঠান বলেছে, আমরা সরবরাহকারীর সঙ্গে সব সম্পর্ক আজ থেকে ছিন্ন করলাম। এর কারণ, তারা আমাদের মারাত্মক সমস্যায় ফেলছে। আমরা বাংলাদেশে নিরাপত্তা বিষয়ক শিক্ষার মান উন্নত করতে এবং প্রশিক্ষণের বিষয়ে কাজ করব। শনিবার রাতে তাজরিন ফ্যাশনে অগ্নিকাণ্ড ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে এক ভয়াবহ অধ্যায়। এতে ফুটে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের ক্রেতাদেও জন্য কি অমানবিক পরিস্থিতিতে গার্মেন্টস শ্রমিকরা পোশাক উৎপাদন করেন। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে গত ৬ বছওে অগ্নিকাণ্ডে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩০০ মানুষ। তাজরিন ফ্যাশনে অগ্নিকাণ্ড থেকে যারা বেঁচে গেছেন তারা বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ফলে জরুরি ভিত্তিতে বহির্গমনের পথ ছিল না। বের হওয়ার পথ ছিল তালাবদ্ধ। আগুন নিভানোর জন্য রাখা ফায়ার এক্সটিঙ্গুইশার কাজ করে নি। যখন ফায়ার এলার্ম বেজে ওঠে তখনও শ্রমিকদের তাদের কাজে যোগ দিতে বলা হয়। এর ফলে শ্রমিকরা আটকা পড়ে এবং তারা আট তলা থেকে লাফিয়ে পড়তে থাকে। কারণ, ওই গার্মেন্টস থেকে জরুরি ভিত্তিতে বের হওয়ার কোন পথ ছিল না। এর প্রতিবাদে সোমবার সাভারে প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক বিক্ষোভ করেন। তারা এ সময় শ্রমিক নিহতের বিচার দাবি করেন। একই সঙ্গে তারা গার্মেন্টসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানোর দাবি তোলেন। এদিন প্রায় ২০০ গার্মেন্টস কারষানা বন্ধ রাখা হয় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার পর। বিক্ষোভকারীরা মহাসড়কে অবস্থান নেয়। তারা এ সময় বিভিন্ন কারখানায় ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। ভাংচুর করে গাড়ি। শ্রমিক নেতারা আশা করেন, সর্বশেষ যে দুর্ঘটনা ঘটল এতে গার্মেন্টস শিল্পে পরিবর্তনআসবে। বাংলাদেশ গার্মেন্ট ওয়ার্কার্স ফেডারেশন-এর সাধারণ সম্পাদক তাহমিনা রহমান বলেন, যে সব গার্মেন্টসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই সরকারের উচিত তাদেরকে কঠোর শাস্তির বিধান করা। তিনি বলেন, মালিকরা থেকে যান ধরাছোঁয়ার বাইরে। ফলে তারা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার তোয়াক্কা রাখেন না। এ জন্য মালিকদের দায়ী করতে হবে এবং তাদের জেলে পাঠাতে হবে। ওয়াল মার্ট বলেনি, কেন তারা তাজরিন ফ্যাক্টরি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তবে ২০১২ গ্লোবাল রেসপনসিবিলিটি রিপোর্টে ওয়াল মার্ট বলেছে, তারা ২০১১ সালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকার কারণে বাংলাদেশের ৪৯টি ফ্যাক্টরির সঙ্গে কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। এক্ষেত্রে তাজরিন ফ্যাক্টরিকে ‘উচ্চ ঝুঁকি’র র‌্যাংকিংয়ে রাখা হয়। তা করা হয় ২০১১ সালের এক অডিটের সময়। কিন্তু ২০১১ সালের আগস্টে ওই র‌্যাংকিং কমিয়ে ‘মিডিয়াম ঝুঁকি’র তালিকায় ফেলা হয় তাজরিনকে। ফলে তাজরিনের সঙ্গে ওয়াল মার্টের কোন কার্যাদেশ ছিল কিনা তা ঠিকমতো তারা বলতে পারে নি অগ্নিকাণ্ডের একদিন পরে। তবে সোমবার তারা তাদের বক্তব্য পরিষ্কার করেছে।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024