মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:১৯

বিদেশীদের হাতে কার্গো সার্ভিস তুলে দেয়ায় কেভিনের বিরুদ্বে বিমান স্টাফদের অবস্থান

বিদেশীদের হাতে কার্গো সার্ভিস তুলে দেয়ায় কেভিনের বিরুদ্বে বিমান স্টাফদের অবস্থান

 

 

 

 

 

 

 

 

 

শীর্ষবিন্দু নিউজ: নানা সমস্যায় জর্জরিত রাস্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কার্গো হ্যান্ডেলিং বিভাগকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রুপান্তরিত করতে বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার ঊদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এরই প্রতিবাদে আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ চলছিল বৃহস্পতিবার।

জানা গেছে, গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং লিজ দেওয়ার অংশ হিসেবে কেভিন স্টিল বিমানের ওয়েবসাইটে এরই মধ্যে আরএফআই (রিকোয়েস্ট ফর ইনফরমেশন) আহ্বান করেছেন। দরপত্র (আরএফপি-রিকোয়েস্ট ফর প্রপোজাল) এর আহ্বানের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবেই এটি করা হয়েছে। এরপরই দরপত্র আহ্বান করা হবে। আরএফআই’র মাধ্যমে তথ্য নিয়েই পরবর্তীতে দরপত্র আহ্বান করা হবে। আরএফআই’র যোগ্যতা হিসেবে ৫টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কার্গো হ্যান্ডেলিং কাজের অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়েছে। ২৩ জুলাই সকাল ১০টার মধ্যে কুরিয়ার অথবা ই-মেইলের মাধ্যমে আবেদন করতে বলা হয়েছে।

এ ঘটনার প্রতিবাদেই বেলা ১১টার দিকে বিমানের প্রধান কার্যালয় বলাকা ভবনে বিক্ষোভ শুরুর পরপরই হাজির হন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কেভিন স্টিল। সমাবেশে উপস্থিত হয়েই কেভিন হ্যান্ড মাইক নিয়ে কর্মীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু ঘটনার মোড় নেয় উল্টো।  আন্দোলনকারীদের কথা না শুনে তিনি বিমানের নতুন উদ্যোগ সম্পর্কে বোঝাতে শুরু করেন। এ সময় কর্মীরা এমডির বিরুদ্ধে শ্লোগান দিতে থাকে। এ পর্যায়ে কেভিন নিজেই কিছুটা রুষ্ট হয়ে আবারো বক্তব্য দিতে উদ্যত হন। শুরু হয় মুহুর্মূহু শ্লোগান। তারা এমডিকে সমাবেশ থেকে চলে যেতে বলেন।

এ ঘটনার পরপর পুলিশ চলে আসে। পুলিশ দেখে আরো ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন আন্দোলনকারীরা। শেষ পর্যন্ত বিমানের কয়েকজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা কেভিনকে এক প্রকার টেনে জোর করে সমাবেশস্থল থেকে নিয়ে যান। এরপর আন্দোলনকারীরা শান্ত হন। এতে জাতীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্সে সকাল থেকেই উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করে। পরে বেলা একটার দিকে শ্রমিকদের সমাবেশ শেষ হয়। সমাবেশ শেষে কর্মীরা কেভিনের সঙ্গে দেখা করেন। তবে কেভিনের সঙ্গে এই সাক্ষাতে কোনো ইতিবাচক ফলাফল আসেনি।

প্রতিবাদ সমাবেশে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সিবিএ সভাপতি মুশিকুর রহমান বলেন, কার্গো হ্যান্ডেলিং বিভাগকে বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্র বন্ধ না হলে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন শ্রমিক-কর্মচারীরা। যদি বিমানের চেয়ারম্যান আশ্বস্ত করেন তাহলে আমরা আন্দোলনে যাবো না। নতুবা কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে সংস্থার লাভজনক কার্গো হ্যান্ডেলিং বিভাগকে বিদেশিদের হাতে তুলে সব প্রক্রিয়া বন্ধ করবো। সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সিবিএর সহ-সভাপতি আব্দুর রহমান মুন্সী, সাধারণ সম্পাদক মুনতাসার রহমান, দফতর সম্পাদক হারুন অর রশিদসহ আরো অনেকে। আন্দোলনকারীরা বলছেন, বিমানকে চিরতরে পঙ্গু করে দিতেই এ উদ্যোগ নিয়েছেন কেভিন স্টিল।

বিমান গোপন সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ জুন অত্যন্ত গোপনীয়ভাবে কার্গো হ্যান্ডেলিং বিভাগকে বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার কাজ শুরু করা হয়। কার্গো ও গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং বিভাগ থেকে বিমান বছরে ৪০০ কোটি টাকার বেশি আয় করে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এ বিভাগে বিমানের আর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় শত শত কোটি টাকা আয় করা এই বিভাগটি বারবার বিদেশিরা নেওয়ার পাঁয়তারা করেছে। বিগত বিএনপি সরকারের আমলে দুবাইভিত্তিক একটি কোম্পানিও এক মন্ত্রীর মাধ্যমে কার্গো ও গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ের কাজ নিতে চেষ্টা করেছিল। পরে বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর তা ভেস্তে যায়। বর্তমান সরকারের আমলেও একজন প্রভাবশালী ব্যবসায়ী কাজটি নিতে তৎপরতা শুরু করেন। ঘটনাটি বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানার পর তারা পিছিয়ে যান। বিমানের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন আহমেদ বিভিন্ন সময়ে বাধার সম্মুখিন হওয়ার পর এবার কেভিন স্টিলের মাধ্যমে কাজটি অন্যদের দেওয়ার পাঁয়তারা করছেন বলে অভিযোগ করেছন বিমানের শ্রমিক-কর্মচারীরা।

 

 




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024