শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০২:১৪

জিএসপি নিয়ে কঠোর অবস্থানে ওবামা প্রশাসন

জিএসপি নিয়ে কঠোর অবস্থানে ওবামা প্রশাসন

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য প্রবেশে জিএসপি সুবিধা বাতিল করে নেওয়া সিদ্ধান্তের পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বাংলাদেশের ওপর কঠোর হচ্ছেন শিরোনামে সম্পাদকীয় লিখেছে নিউইয়র্ক টাইমস। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট নাজুক তুলে ধরে কঠোর অবস্থানের যেতে বাধ্য ওবামা প্রশাসন এরকমই যুক্তি তলে ধরে এই সম্পাদকীয় প্রকাশ করলো প্রভাবশালী মার্কিন পত্রিকাটি।

নিউইয়র্ক টাইমস মনে করছে, এই সিদ্ধান্ত দেশটির ৪০ লাখ গার্মেন্টস শ্রমিকের জন্য সঠিক পদক্ষেপ নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে। আর এই সুগম পথ সুষ্টির লক্ষে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে কাজের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে চাপ প্রয়োগের অংশ হিসেবেই এই সিদ্ধান্ত। বাংলাদেশের দ্রুত বিকাশমান তৈরি পোশাক শিল্পে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অগ্নিকাণ্ড, ভবন ধস ও অন্যান্য প্রতিরোধযোগ্য শিল্পদুর্ঘটনায় শত শত প্রাণহানি ঘটেছে। এপ্রিলে রাজধানী ঢাকার বাইরে ভবন ধসে কয়েকটি গার্মেন্টস কারখানার ১১ শ’র বেশি শ্রমিকের প্রাণহানি এবং গত নভেম্বরে অপর একটি পোশাক কারখানায় আগুনে দগ্ধ হয়ে ১১০ জনেরও বেশি শ্রমিক নিহত হয়। যা বিশেষভাবে উল্লেখ্য করা হয় এই বিশেষ সম্পাদকীয়তে।

নিউইয়র্ক টাইমসে আরো বলা হয়, পোশাক শিল্পের ক্ষমতাধর মালিকদের কাছে অপছন্দের হবে এমন নীতি পরিবর্তন শেখ হাসিনার মতো নেতৃত্বরা আনতে চান না। যখন লাখ লাখ দরিদ্র শ্রমিকের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়ে তখন আমেরিকা ও ইউরোপের নেতাদের কাছেও কিছু ব্যবস্থা রয়েছে যার প্রয়োগের মাধ্যমে এমন চাপ সৃষ্টি করা যায়।

সম্পদকীয়তে বিশেষভাবে তুলে ধরে বলা হয়, জেনারেলাইজড সিস্টেমস অব প্রেফারেন্সেস (জিএসপি)’র আওতায় যুক্তরাষ্ট্র অনেক দরিদ্র দেশ থেকে পণ্য আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়। কিন্তু এই সুযোগ সীমিত পণ্যের জন্য এবং বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে এই সুবিধা পায় না। আর এ কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রফতানি করে বাংলাদেশ বছরে ৪৯০ কোটি ডলার আয় করতে পারছে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশ জিএসপি সুবিধা পায় তামাক, ক্রীড়াসামগ্রী ও সিরামিক পণ্য রপ্তানিতে। ফলে এই সুবিধা স্থগিত করাতে বাংলাদেশের গার্মেন্ট শ্রমিকরা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।

যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ইউরোপ বেশি সংখ্যক পণ্যে বাংলাদেশকে রপ্তানি সুবিধা দেয় এ কথা উল্লেখ করে নিউইয়র্ক টাইমসের সম্পাদকীয়তে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে যে, ওবামা প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বাংলাদেশের প্রতি তাদের দেওয়া সুবিধাগুলো বাতিলে উৎসাহিত করতে পারে।  বাংলাদেশি তৈরি পোশাক বিনাশুল্কে প্রবেশের সুবিধা দিয়ে আসছে ইউরোপ। যে কারণে হাসিনা সরকারের ওপর তাদের উল্লেখযোগ্য প্রভাবও রয়েছে। সন্দেহতীত যে, বাণিজ্য সুবিধা প্রত্যাহার এমনসব শিল্পকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে যেগুলো তৈরি পোশাকে কাজের নিন্মমান ও পরিবেশের জন্য দায়ী নয়। কিন্তু বাংলাদেশের মতো দেশগুলো যখন একের পর এক তার শ্রমিকের অধিকার ও জীবন রক্ষায় ব্যর্থতার পরিচয় দেয় তখন পশ্চিমা সরকারগুলো এমন সুবিধা বন্ধ করে দেওয়ারও অধিকার রাখে।

নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, তাদের পক্ষ থেকেও আমেরিকান ও ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোকে আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে তারা সরবরাহকারী কারখানাগুলোর কাজের পরিবেশ উন্নত করতে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু মূল দায়িত্ব বাংলাদেশের নেতৃত্বের ওপরই বর্তায়। হাসিনা সরকার বারবারই বলেছে, কারখানাগুলোতে পরিদর্শন বাড়ানো হবে এবং শ্রমিকদের ইউনিয়ন গঠন সহজতর করা হবে। কিন্তু এগুলো সঠিকভাবে পালনের পর্যাপ্ত উদ্যোগ তিনি নেননি। সম্প্রতি সরকার শ্রম আইনে সেসব পরিবর্তনের প্রস্তাব এনেছে তাতে, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলগুলোতে ইউনিয়ন করার অনুমতি নেই। এইসব জোনে অনেক বড় বড় কারখানা রয়েছে।

 




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024