বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রফেসর ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি কিডনিসহ বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। সোমবার সকাল ১০টা ৪০ মিনিটের ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। মরহুমের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ অক্টোবর ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের শরীরে অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর কিডনিতে জটিলতা দেখা দিলে গত ৪ নভেম্বর তাঁর অবস্থার অবনতি হয় এবং তাঁকে বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে তাঁকে কৃত্রিমভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস দেয়া হচ্ছিল। এর আগে ২০০৬ সালে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে তাঁর বাইপাস সার্জারি হয়। ২০০২ সালে চারদলীয় জোট সরকারের রাষ্ট্রপতি পদ থেকে ড. একিউএম বদরুদ্দৌজা চৌধুরী সরে দাঁড়ালে এ পদে নির্বাচিত হন প্রফেসর ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ। ২০০৬ সালে জোট সরকার ক্ষমতা ছাড়ার পর অমীমাংসিত ও উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতির দায়িত্বের পাশাপাশি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্বও নেন তিনি। এরপর রাজনৈতিক সংঘাত আরো বেড়ে গেলে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেন ইয়াজউদ্দিন। পরদিন সরে দাঁড়ান প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে। এরপর টানা দুই বছর সেনা সমর্থিত একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দেশ শাসন করে। অষ্টম সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর ২০০৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বর্তমান রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ইয়াজউদ্দিন ১৯৯৫ সালে একুশে পদক লাভ করেন।
ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৩১ সালে মুন্সিগঞ্জ জেলার নারায়ণগঞ্জ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মৌলভি মুহাম্মদ ইব্রাহিম। অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের স্ত্রী অধ্যাপিকা আনোয়ারা বেগম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষিকা। তিনি ঐ বিভাগের প্রধান ওশামসুন্নাহার হলের প্রভোস্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ এবং আনোয়ারা বেগমের এক মেয়ে এবং ইমতিয়াজ আহমেদ বাবু-সহ দুই ছেলে রয়েছে। আনোয়ারা বেগম বর্তমানে অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হিসাবে কর্মরত আছেন।বর্তমান রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমান ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলাজনিত কারণে ২৪ আগস্ট, ২০০৪ সালে প্রয়াত হন। তাঁর মৃত্যুর ফলে ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম বর্তমানে বাংলাদেশের ফার্স্ট লেডি হিসেবে বহাল রয়েছেন।
Leave a Reply