মান্ডেলার নাতি মান্ডলা তার আত্মীয়দের বিরুদ্ধে প্রতিশোধপরায়ণতা ও নেলসন ম্যান্ডেলার উত্তরাধিকার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করার পর দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী অবিসংবাদিত নেতার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্ব আরো প্রকট হয়েছে। এই দ্বন্দ্বের একদিকে আছেন ম্যান্ডেলার নাতি মান্ডলা ও অপরদিকে মেয়ে মাকাজিউয়ে ও বর্তমান স্ত্রী গ্রাশা মাচেল। মৃত্যুর পর ম্যান্ডেলার কবর কোথায় হবে, তাই নিয়েই এ দ্বন্দ্ব বলে জানিয়েছে বিবিসি অনলাইন।
ম্যান্ডেলার বড় সন্তান পুত্র থেমবেকিলে ১৯৬৯ সালে এক গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান, দ্বিতীয় পুত্র ম্যাকগাথো ২০০৫ সালে এইডস জনিত রোগে মারা যান আর কন্যা মাকাজিউয়ে ১৯৪৮ সালে বাচ্চা অবস্থায় মারা যান। গত সপ্তাহে ম্যান্ডেলা কন্যা মাকাজিউয়ে ও স্ত্রী মিচেলসহ পারিবারের কয়েকজন সদস্য আদালতে অভিযোগ দায়ের করে বলেন, মান্ডলা বেআইনিভাবে ম্যান্ডেলার তিন সন্তানের দেহাবশেষ ভেজোতে নিয়ে সমাহিত করেছেন।
আদালতের আদেশে মান্ডেলার তিন সন্তানের দেহাবশেষ তার গ্রামের বাড়ি কুনুর পারিবারিক কবরস্থানে পুনঃদাফন করার পর এক প্রতিক্রিয়ায় মান্ডলা এসব অভিযোগ করেন।
ভেজো গ্রামের প্রধান মান্ডলা ২০১১ সালে তার বাবা ম্যাকগাথো, চাচা মাদিবা থেমবেকিলে ও ফুফু মাকাজিউয়ের (দুই কন্যার একই নাম) দেহাবশেষ কুনুর পারিবারিক কবরস্থান থেকে তুলে ভোজোতে নিয়ে সমাহিত করেছিলেন। ২০০৭ সালে ম্যান্ডেলার প্রভাবেই তিনি ভেজো গ্রাম প্রধান হয়েছিলেন।
এ বিষয়ে শুনানির পর আদালত ম্যান্ডেলার তিন সন্তানের দেহাবশেষ আবার কুনুতে ফিরিয়ে নেয়ার আদেশ দেন। বুধবার পুলিশ ভেজো থেকে ম্যান্ডেলার তিন সন্তানের দেহাবশেষ তুলে ভিসেরা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয় দেহাবশেষগুলো ম্যান্ডেলার সন্তানদেরই, এরপর কুনুতে নিয়ে পুনঃরায় তাদের সমাহিত করা হয়। মামলায় হারার পর দেয়া প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় মান্ডলা বলেছেন, দেহাবশেষগুলো আস্থায়ীভাবে ভেজোতে নিয়ে আসা হয়েছিল, ম্যান্ডেলার মনোভাব জানার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হতো।
ম্যান্ডেলার আর্থিক সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের লড়াইয়ের সঙ্গে আদালতে দাখিল করা অভিযোগের সম্পর্ক আছে বলে দাবি করেন তিনি। অপরদিকে দাদা ম্যান্ডেলাকে ভেজোতে সমাহিত করার আকাঙ্খা থেকেই মান্ডলা অন্যান্য আত্মীয়দের দেহাবশেষ ভেজোতে নিয়ে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন মাকাজিউয়ে। ম্যান্ডেলা নিজে যেখানে বড় হয়েছেন সেই কুনুতেই সমাহিত হতে চান বলে দাবি করেন তিনি। এদিকে, প্রিটোরিয়ার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯৪ বছর বয়সী ম্যান্ডেলার অবস্থা গুরুতর ও অপরিবর্তিত রয়েছে বলে নতুন খবরে জানানো হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, গত কিছুদিন ধরে সবার ব্যক্তিগত আক্রমণের লক্ষ্য হয়েছি আমি। আমাকে পুঁজি করে কিছু মানুষ সাময়িক খ্যাতি ও মনযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করছে। এই মূহুর্তে আমার মনে হচ্ছে, যে কেউ এসে নিজেকে ম্যান্ডেলা পরিবারের সদস্য বলে দাবি করে পারিবারিক সিদ্ধান্ত কি হবে তা নিয়ে কথা বলতে শুরু করতে পারে। মাকাজিউয়ে পরিবারে বিভাজন সৃষ্টি ও ধ্বংস করার চেষ্টা করছেন বলেন তিনি।
Leave a Reply