রমজানে আমাদেরকে একেবারেই নতুন রুটিনে খাবার খেতে হয়। মেনুতেও চলে আসে বৈচিত্র্য। তবে খাদ্যাভাসে একটু খেয়াল রাখতে হবে। একটু সচেতনতা খুঁটিনাটি নানান সমস্যা থেকে দূরে রাখবে। রমজানে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে খাদ্যাভাসে পরিবর্তন বা অবহেলার কারণে সমস্যা দেখা দেয়। মূলত যেসব সমস্যা হতে পারে : কোষ্ঠ কাঠিন্য : অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খাওয়া, পানি কম খাওয়া এবং মেনুতে আঁশযুক্ত খাবার না রাখায় এ সমস্যা দেখা দেয়।
হজমে সমস্যা এবং পেট ফাঁপা : অতিরিক্ত খাদ্যগ্রহণ, বেশি ভাজা পোড়া, মশলাযুক্ত এবং চর্বিযুক্ত খাদ্যগ্রহন, সফট ড্রিঙ্কস পান করার কারণে এ সমস্যা হতে পারে। মাথাব্যাথা : যাদের কফি এবং ধূমপানের অভ্যাস আছে তারা অনেকসময় সারাদিনের রোজায় মাথাব্যাথায় আক্রান্ত হতে পারেন। সেইসাথে পরিমিত ঘুম না হলে এবং ক্ষুধায় কাতর হয়েও মাথাব্যাথায় আক্রান্ত হতে পারেন। এর থেকে প্রতিকারের জন্য রোজার এক-দুই সপ্তাহ আগে থেকেই কফি পানের পরিমাণ কমিয়ে দিতে হবে। আর এই সুযোগে যদি সম্পূর্ণভাবে ধূমপান ত্যাগ করা যায় তাহলেই সবচেয়ে ভালো হয়।
পেপটিক আলসার, গ্যাস্ট্রিক, বুকজ্বালা : সারাদিন অভুক্ত থাকার ফলে অনেকের এসিডিটি হয়ে এই সমস্যাগুলো হতে পারে। অতিরিক্ত তেল মশলা যুক্ত খাবার, কফি এবং সফট ড্রিঙ্কস এই অবস্থাকে আরও বাড়িয়ে দেয়। পাকস্থলীর এসিড নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেক ওষুধ আছে। যারা এসিডিটির সমস্যায় ভুগছেন এবং পেপটিক আলসারের রোগীরা অবশ্যই রমজানের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
সমস্যাগুলোর পর এবার যেনে নিন খাদ্যাভ্যাস কেমন হওয়া উচিত : সারাদিন রোজা রেখে ইফতারিতে অনেকেই অতিরিক্ত খেয়ে ফেলেন। স্বাস্থ্যের ক্ষতি এড়ানোর জন্যই ইফতারিতে অতিরিক্ত খাদ্যগ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ সারাদিন অভুক্ত থাকার পর হঠাৎ করে অনেক খাবার একসঙ্গে খেলে পরিপাকযন্ত্রে গোলমাল দেখা দিতে পারে। ইফতারিতে অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার এবং ভাজাপোড়া খাবার কম থেতে হবে। এতে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
এছাড়াও ইফতারিতে এই ধরনের খাদ্যগ্রহণ স্বাস্থ্যসম্মত নয়। রোজায় লবণ পরিমাণ মত খেতে চেষ্টা করবেন, কারণ লবণ বেশি খেলে আপনার পানির তৃষ্ণা বেশি লাগবে। আর সারাদিনে যেহেতু আপনি পানি পান করতে পারবেন না, তাই আপনার শরীরে পানিশূন্যতা বেড়ে যেতে পারে। সারাদিন রোজা রাখার কারণে আপনার অতিরিক্ত পানির চাহিদা মেটাতে কখনোই চিনি দিয়ে গোলানো শরবত অথবা সফট ড্রিঙ্কসের উপর বেশি নির্ভর করবেন না। ঘরে তৈরী শরবত এবং ফলের রস পরিমাণ মত গ্রহন করুন, তবে সফট ড্রিঙ্কস আর কৃত্রিম জুস না খাওয়ার সর্বোত্তম চেষ্টা করবেন।
প্রতি ইফতারে এবং সেহরিতে যথেষ্ট ফল এবং শাক সবজি যাতে থাকে সেই দিকে লক্ষ্য রাখুন। সারাদিনের রোজায় শরীরে পানির যে অভাব তৈরী হয় তা থেকে বের হয়ে আসার জন্য প্রতি রাতে অন্তত ছয় থেকে আট গ্লাস পানি পান করার চেষ্টা করুন। অনেকেই অলসতা করে সেহরি না খেয়েই রোজা রাখেন। এটি কখনোই করবেন না। সেহরি না খেয়ে রোজা রাখতে গেলে আপনি যথেষ্ট দুর্বল হয়ে পড়বেন যা কখনোই কাম্য নয়।
Leave a Reply