শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: গত ১লা জুলাই থেকে বাংলাদেশে কার্গো করে মালামাল পাঠানো মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার পর আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে এর মূল্যবৃদ্ধির কথা জানিয়েছেন বৃটেনে বাংলাদেশী মালিকানাধীন কার্গো ব্যবসায়ীরা। মঙ্গলবার দুপুরে পূর্ব লন্ডনের একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ীরা এ কথা জানান।
দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করলেও দিনে দিনে কার্গোতে কেজি প্রতি মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে কার্গো পরিবহনের ম্যাটারিয়ালস, সাথে সাথে বিমান, কাস্টমস খাতে ফি বৃদ্ধি ও সর্বোপরি পাউন্ডের দরপতনের কারনে তারা এ মূল্যবৃদ্ধি করতে বাধ্য হয়েছেন। তারা জানিয়েছেন পূর্বের মূল্যের চেয়ে বর্তমানে ২৫-৩০ পেনি বাড়ানো হয়েছে। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকায় কার্গো প্রতি কেজি সাড়ে তিন পাউন্ড থেকে সাড়ে চার পান্ডন্ড করে নেয়।
এখানো তাদের চেয়ে আমরা কমদামে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। তারা সকল গ্রাহক ও কমিউনিটির সহযোগিতা কামনা করেন। এতে আরো জানানো নির্ধারিত ফিক্সড রিটেইল (খুচরা) দাম এর চার্ট নয়টি প্রধান কার্গো এজেন্টদের ঐক্যমতের ভিত্তিতে নির্ধারন করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় কার্গো সেবার মান নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যে কার্গো মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে ব্যবসায়ী ও বিমানের কর্মকর্তারা সম্পৃক্ত রয়েছেন। এই কমিটি নির্ধারিত ফিক্সডরিটেইল দাম নিয়ন্ত্রনে যে সকল প্রদক্ষেপ গ্রহন করেছে সেগুলি হচ্ছে:
কোনো কার্গো এজেন্ট নির্ধারিত ফিক্সড রিটেইল (খুচরা) দাম এর নিচে বা বাংলাদেশে প্রতি কেজি কার্গো বিক্রি করলে উক্ত এজেন্টকে বিমানের পরপর দুই ফ্লাইটে কার্গো পাঠানো বঞ্চিত করা হবে।
কোনো কার্গো সাব এজেন্ট নির্ধারিত ফিক্সড রিটেইল (খুচরা) দাম এর নিচে বাংলাদেশে প্রতি কেজি কার্গো বিক্রি করলে উক্ত সাব এজেন্টের প্রধান এজেন্টকে বিমানের পরপর দুই ফ্লাইটে কার্গো পাঠানো থেকে বঞ্চিত করা হবে।
সকল কার্গো এজেন্ট ও সাব এজেন্ট নির্ধারিত ফিক্সড রিটেইল (খুচরা) দাম এর এই চার্ট তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রদর্শন করতে হবে। কোনো কার্গোর এজেন্ট ও সাব এজেন্ট নির্ধারিত ফিক্সড দাম এর নিচে অন্য কোনো চার্ট তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে, অনলাইনে, মোবাইলে, প্রিন্ট ও বা টিভি মিডিয়াতে প্রচার বা প্রদর্শন করতে তার বিপক্ষে উপরে উল্লেখিত নিয়মানুযায়ী বিমানের ফ্লাইটে কার্গো পাঠানো থেকে বঞ্চিত করা হবে।
এতে আরো বলা হয় সর্বনিম্ন ৫ কেজি মালের কার্গো প্রেরনের জন্য মূল্যে ধরা হয়েছে ২৫ পাউন্ড। আর ৬ থেকে ১০ কেজিতে দিতে হবে ৩৫ পাউন্ড, ১১ থেকে ২৫ কেজিতে দিতে হবে সাড়ে ৩ পাউন্ড কেজি, ২৬ থেকে ৫০ কেজিতে দিতে হবে ৩ পাউন্ড ৩৫ পেনি, ৫১ থেকে ১০০ কেজিতে দিতে হবে ৩ পাউন্ড ২০ পেনি, ১০১ কেজির উপরে হলে দিতে হবে ৩ পাউন্ড ১০ পেনি করে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠন করেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জেএমজি কার্গোর এমডি মনির আহমদ। উপস্থিত ছিলেন ইউকে কার্গোর এমাদুর রহমান এমাদ, ইস্ট এন্ড লজিস্টিক এর দেওয়ান আব্দুল রব, জেএমজি হিথ্রো এর শামসাদুর রহমান রাহিন, শাহজালাল কার্গোর আশিক মিয়া, আলটিমেইট কার্গোর নুবেন্দু শাহা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় কমিউনিটির মানুষের সহযোগিতায় কারণেই আজকে বৃটেন থেকে বাংলাদেশমুখী কার্গো সেক্টরের বর্তমান সুদৃঢ় অবস্থান তৈরি হয়েছে। তারা বলেন, এক সময় বৃটেন থেকে বাংলাদেশ বিমান শুধু মাত্র যাত্রী পরিবহন করতো, সে সময়ে কার্গোর পরিবহনের হার একেবারেই শূন্যের কোঠায় ছিল। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে সবাই মিলে ব্রিটেনসহ ইউরোপে এখন বড় একটি কার্গোর বাজার সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলেন, আমরা সর্বদা সচেষ্ট ছিলাম স্বল্প খরচে সর্বোচ্চ সেবাটুকু কমিউনিটিকে দিতে। কিন্তু বাংলাদেশ বিমান, কাস্টমস ও পাউন্ডের দরপতনের কারনে এ মূল্যবৃদ্ধি করতে হয়েছে।