শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: ব্রিটেনে আসা শিক্ষার্থীরা আরও কিছু কড়াকড়ি সম্মূখিন হবেন। ব্রিটেনের নতুন সরকার স্টডেন্ট ভিসায় আরো শর্ত আরো করতে যাচ্ছে।
সদ্য প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন হওয়া থেরেসা মে ছয় বছর যাবৎ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থেকে ব্রিটিশ ভিসানীতিতে নজিরবিহীন সব কড়াকড়ি আরোপ করেন। সেই থেরেসা মে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ঠিক পরের দিনই শিক্ষার্থী ভিসায় নতুন কড়াকড়ির ঘোষণা এল।
এতে করে বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাজের সুযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ করার পাশাপাশি তাঁদের ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধির সুযোগ সীমিত করা হয়েছে। এছাড়া বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্নাতকোত্তর কোর্সের মেয়াদ আরও সীমিত করে দেওয়া হয়েছে।
এসব কড়াকড়ি আনার বিষয়ে বেশ আগেই আলোচনা শোনা গিয়েছিল। সর্বশেষ গত ১৪ জুলাই বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের হোম অফিসের ওয়েবসাইটে এসব নিয়ম কার্যকরের ঘোষণা আসে।
ঘোষিত নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এত দিন সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত (পাবলিক ফান্ডেড) কলেজগুলোতে ভর্তি হলে বিদেশি শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে ১০ ঘণ্টা করে কাজ করার সুযোগ পেতেন। নতুন নিয়মে সেই সুযোগ রহিত করা হয়েছে। আগস্ট থেকে এই নিয়ম কার্যকর হবে। এ কারণে শুধু ইউনিভার্সিটি এবং সরাসরি ইউনিভার্সিটির অধীন কলেজে (অ্যামবেডেড কলেজ) পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের জন্য কেবল সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা কাজের সুযোগ অবশিষ্ট রইল।
কলেজে পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের জন্য আরেকটি বড় পরিবর্তন হলো, নতুন কোনো কোর্সে ভর্তির জন্য তাঁরা যুক্তরাজ্যে থেকে ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করতে পারবেন না। কোর্স সম্পন্ন হলেই তাঁদের নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে। নতুন কোর্সের জন্য নতুন করে আবেদন করে তাঁদের পুনরায় যুক্তরাজ্যে আসতে হবে। এই নিয়মটি কার্যকর হবে নভেম্বর থেকে। স্নাতকোত্তর কোর্সের (ফার্দার এডুকেশন লেভেল) জন্য এত দিন সর্বোচ্চ তিন বছর নির্দিষ্ট ছিল। তা কমিয়ে নতুন নিয়মে দুই বছর করা হয়েছে।
এর ফলে স্নাতক সম্পন্ন করার পর কোনো বিদেশি শিক্ষার্থী স্নাতকোত্তর কোর্সের জন্য দুই বছরের বেশি ভিসা পাবে না। কলেজ ও ইউনিভার্সিটিতে পড়া সব বিদেশি শিক্ষার্থীর জন্য নভেম্বর থেকে এই নিয়মটি কার্যকর হবে। ইউনিভার্সিটিতে পড়তে আসা শিক্ষার্থীরা এক কোর্স সম্পন্ন করে সমপর্যায়ের কোর্সের জন্য পুনরায় ভর্তি হতে পারবেন না।
পেশাগত দক্ষতার জন্য জরুরি প্রমাণ করতে পারলেই কেবল তাঁরা সেটি করতে পারবেন। এছাড়া বিদেশি শিক্ষার্থীদের ডিফেডেন্ড হয়ে যাঁরা যুক্তরাজ্যে আসেন (সাধারণত স্বামী বা স্ত্রী), তাঁদের কাজের ক্ষেত্রে এত দিন কোনো বিধিনিষেধ না থাকলেও আসছে নভেম্বর থেকে তাঁরা কেবল দক্ষ বলে বিবেচিত হয় (স্কিলড ওয়ার্ক), এমন কাজই করতে পারবেন। যে কারণে ইইউর বাইরের শিক্ষার্থীদের আকর্ষণ করতে তাদের জন্য ভিসানীতি সহজ করাও প্রত্যাশা করা হচ্ছিল। কিন্তু সরকারি নীতি বাস্তবে সেই প্রত্যাশার বিপরীতে যাত্রা করেছে।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত গণভোটে যুক্তরাজ্য ইইউ ছাড়ার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ধারণা করা হচ্ছিল যে যুক্তরাজ্যে ইইউভুক্ত দেশের শিক্ষার্থীদের আগমন কমবে এবং ইইউর বাইরের দেশের শিক্ষার্থীদের এনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষতি পোষাতে হবে।