শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: ভারি বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় চীনে কমপক্ষে ২২৫ জন মারা গেছেন অথবা নিখোঁজ হয়েছেন। আটকা পড়েছে আড়াই লাখ মানুষ। এ ঘটনা ঘটেছে হুবেই প্রদেশে।
এ খবর দিয়ে বার্তা সংস্থা পিটিআই লিখেছে, বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে ৬ লাখ ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ। ১০টি শহর বন্যাকবলিত। সরকারি বার্তা সংস্থা সিনহুয়া বলেছে, উদ্ধার অভিযানে নামানো হয়েছে ৫ শতাধিক সেনা সদস্য, এক হাজার সাধারণ মানুষ ও ৬২টি স্পিডবোট। অন্যদিকে নদীগুলোর তীর রক্ষায় মোতায়েন করা হয়েছে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ।
শুধু হুবেই প্রদেশে কমপক্ষে ১১৪ জন মারা গেছেন। ১১১ জনের কোন খোঁজ নেই। স্থানীয় প্রশাসন উদ্ধার করেছে প্রায় ৩ লাখ ১০ হাজার মানুষকে। বন্যা ও ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট ভূমিধসে বিধ্বস্ত হয়েছে ৫২ হাজার ৯০০ বাড়ি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এক লাখ ৫৫ হাজার বাড়ি। নষ্ট হয়েছে ৭ লাখেরও বেশি হেক্টর জমির ফসল।
এতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১৬০০ কোটি ইউয়েন বা ২৪০ কোটি ডলার। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সিঙ্গতাই সিটির দাসিয়ান গ্রাম। বুধবার ভোরের দিকে ওই গ্রামটি অকস্মাৎ বন্যায় তলিয়ে যায়। এতে সেখানে কমপক্ষে ৮ জন মারা যান। নিখোঁজ হন একজন।
ওই গ্রামের বাসিন্দা ঝাং এরকিয়াং বলেছেন, রাত আড়াইটার দিকে আমি শুনতে পাই মানুষ বন্যা বন্যা বলে চিৎকার করছে। তাৎক্ষণিকভাবে আমার স্ত্রী ও সন্তানদের উঠিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসি। দেখি বাইরে বুক সমান পানি। এতে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ি। আমরা একটি গাছে উঠে বসি। কয়েক ঘন্টা সেখানেই কেটে যায়।
এরপর সকালে উদ্ধারকর্মীরা আমাদের উদ্ধার করেন। কিন্তু আমার মেয়ে ও ছেলেকে বন্যার পানি কেড়ে নিয়েছে। অনেক পরে আমরা তাদের মৃতদেহ খুঁজে পেয়েছি। রাজধানী বেইজিং থেকে সিঙ্গতাই ৪০০ কিলোমিটার দক্ষিণে। সেখানে গত ২৪ ঘন্টায় ভারি বর্ষণ হয়েছে। এতে বাধ্য হয়ে হাজার হাজার অধিবাসী রাস্তায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
তবে বন্যার পূর্বাভাস দেরিতে দেয়া হয়েছে বলে অনেকের অভিযোগ করেছে হংকংভিত্তিক সাউথ চায়না মনিং পোস্ট। রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিভিন্ন নদীর তীর উপচে কমপক্ষে ১২টি গ্রাম তলিয়ে দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোর মধ্যে অন্যতম দাসিয়ান। এখানে কমপক্ষে ৯ জন হয়তো মারা গেছেন বা হয় নিখোঁজ রয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে ৫টি শিশু।