শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: ২০১০ সালে ক্ষমতায় আসার পর বাজেট ও বেনিফিট কাট, স্টুডেন্ট ফি বৃদ্ধিসহ নানান কারণে ব্যাপক সমালোচিত ছিলেন তৎকালিন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামরন। অনার লিস্ট নিয়েও বিতর্কের উর্ধ্বে থাকতে পারলেন না সদ্য সাবেক বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামরন।
এবার পদত্যাগের আগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর রেখে যাওয়া একটি অনার লিস্ট নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। রেফারেন্ডামের পরে পদত্যাগের সময় একটি লিস্ট রেখে গেছেন তিনি। অনার লিষ্ট। রেজিগনেশন অনার লিষ্ট বলা হয় একে। এই লিস্টে থাকা নামগুলো এমবিই, ওবিই, স্যারসহ নানান উপাধিতে ভুষিত করার জন্যে রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাছে সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সুপারিশ হিসেবে গণ্য হবে।
লিস্ট বা তালিকাটি মিডিয়ায় প্রকাশিত হবার পর এতে থাকা নামগুলো নিয়ে নানান প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তালিকায় ৪৮ জন ব্যক্তির নাম নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এর মধ্যে আছেন টোরি পার্টির দাতা, ডেভিড ক্যামরনের ঘনিষ্ট বন্ধু, সহযোগি এবং তার স্ত্রীর এসিসটেন্স।
যাদের দেশ বা সমাজের জন্যে বিশেষ কোনো অবদান নেই। বরং কেউ কেউ টোরি পার্টিকে আর্থিক সহযোগিতা করেছেন, কেউ কেউ রিমেইন ক্যাম্পেইনে আর্থিক সহযোগিতা করেছেন, কেউ কেউ সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ট বন্ধু, রাজনৈতিক সহযোগি। এসব কারণে তাদের অনার লিস্টে নাম রাখা হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
স্ট্যান্ডার্ড পাবলিক লাইফ কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান স্যার আলেস্টায়ার গ্রাহাম, তালিকায় থাকা অনেক নামের মাধ্যমে এক ধরনের অভদ্রতার পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন। অন্যদিকে লেবার পার্টির ডেপুটি লিডার টম ওয়াটসন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী থেরেজা মের উচিত এই তালিকা স্টপ করা।
তবে প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে জড়িত হতে চান না বলে জানিয়েছেন টেন ডাউনিং স্ট্রীটের এক মূখপাত্র বলেছেন।
সানডে টাইমসে প্রকাশিত তালিকায় দেখা গেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাইটহুডের জন্যে তার কেবিনেটের ৫ সহকর্মীর নাম সুপারিশ করেছেন। এই ৫জনই হলেন রিমেইন ক্যাম্পেইনের পক্ষের বর্তমান চ্যান্সেলার ফিলিপ হ্যামন্ড, ডিফেন্স সেক্রেটারী মাইকেল ফলেন, প্যাট্টিক ম্যাকলাফলিন এবং ডেভিড লিডিংটন, সাবেক চ্যান্সেলার জর্জ অসবোর্নকে অনার করার সুপারিশ করেন তিনি। নাইটহুড উপাধির জন্যে টোরির অন্যতম দাতা ইয়ান টাওলার এবং এন্ড্রো কোকের নামও রয়েছে তালিকায়।
এছাড়া সিবিই অনারের জন্যে রিমেইন ক্যাম্পেইনার উইল স্ট্রসহ ২০ জন ডাউনিং স্ট্রীট স্টাফের নাম সুপারিশ করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামরনের রেজিগনেশন অনার লিস্টে। অন্যদিকে ওবিই উপাধির জন্যে ডেভিড ক্যামরনের স্ত্রী সামান্তা ক্যামরনের ডায়েরী এবং ফ্যাশন এডভাইসার ইসাবেল স্পীয়ারম্যান, সাবেক চ্যান্সেলার জর্জ অসবোর্নের সহযোগি থিও রোজারের নাম রয়েছে।
সব বিতর্ককে পেছনে ফেলে ২০১৫ সালের সাধারণ নির্বাচনে দলকে এককভাবে পুনরায় ক্ষমতায় নিয়ে আসেন তিনি। সর্বশেষ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে থাকা না থাকা নিয়ে ২৩ জুন অনুষ্ঠিত রেফারেন্ডামে লিভ ক্যাম্পেইন জয়ী হওয়ার পর ২৪শে জুন পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি। জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে থেরেজা মে কাছে ক্ষমতা সবঝে দিয়ে টেন ডাউনিং স্ট্রীট থেকে বিদায় নেন রেফারেন্ডামে রিমেইন ক্যাম্পেইনার ডেভিড ক্যামরন।