শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন সপ্তাহান্তে দেশটির রাস্ট বেল্ট (অনগ্রসর) এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালান। ফিলাডেলফিয়ায় নীল রঙের একটি বাসে করে তিনি দেশটির অনগ্রসর অঞ্চলটিতে সফর শুরু করেন। বাসটি পাড়ি দেয় ফিলাডেলফিয়া থেকে ওহাইয়ো পর্যন্ত এক হাজার কিলোমিটার।
ওই এলাকায় রিপাবলিকানদের সমর্থন বেশি। তাই ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তায় ধস নামিয়ে সমর্থন বাড়ানোই হিলারির এ সফরের লক্ষ্য। আর শ্রমজীবী ও শ্বেতাঙ্গ ভোটাররাই হিলারির টার্গেট। তার সফরসঙ্গী অন্যদের মধ্যে ছিলেন স্বামী বিল ক্লিনটন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে তার রানিং মেট টিম কেইন।
ভোটারদের উদ্দেশে হিলারি বলেন, নির্বাচিত হলে তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী বৃহত্তম কর্মসংস্থান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবেন। এ কর্মসূচিতে শিল্প ও অবকাঠামোই প্রাধান্য পাবে।
তবে ওই অঞ্চলে সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সময়ে করা নাফটা(নর্থ আমেরিকান ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট) চুক্তির কারণে উৎপাদন সংশ্লিষ্ট অনেক শ্রমিক চাকুরি হারান। ফলে শ্রমজীবীদের মাঝে এ নিয়ে ক্ষোভ আছে।
ওই অঞ্চলের শ্রম বিশেষজ্ঞ জন রুশো বলেন, নাফটার কারণে শ্রমিক শ্রেনীর অনেকেই চাকরি হারানোয় তারা ক্ষুব্ধ। ফলে হিলারির প্রতি তাদের এক ধরণের অবিশ্বাস রয়েছে।
রিপাবলিকান প্রার্থী ডেনাল্ড ট্রাম্প তাই ভোটারদের কাছে বিল ক্লিনটন ও তার বাণিজ্য চুক্তির সমালোচনা করেন এবং বলেন, হিলারির সময়েই একই রকম ঘটবে।
আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে ‘সুইং স্টেট’ ওহাইয়ো ও পেনসিলভেনিয়া রাজ্যের একটি কিংবা দুটিতেই জয় হোয়াইট হাউজ জেতার পেছনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ফলে এ দুটি রাজ্যে সমর্থন বাড়ানো হিলারির অন্যতম লক্ষ্য।
এদিকে হিলারির সমাবেশে শ্বেতাঙ্গ ভোটারদের উপস্থিতি বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প ফিলাডেলফিয়া কিংবা ক্লিভল্যান্ডের মতো বড়ো শহরগুলোতে হিলারির এগিয়ে যাওয়া মোকাবেলা করতে পারেন। কারণ এ অঞ্চলে আফ্রিকান-আমেরিকান ভোটারদের সাধারণ প্রবণতা ডেমোক্রেটিক দলের প্রতি।
হিলারি পিটসবুর্গের কাছে মনিসিনে যান শনিবার। মনিসিনের মেয়র লুইস মেভরাকিস(৭৯) একজন ডেমোক্র্যাট। তিনি কখনই রিপাবলিকানকে ভোট দেননি।
কিন্তু নভেম্বরের নির্বাচনে তিনি ট্রাম্পকে ভোট দেবেন কিনা জানতে চাইলে কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানান।
মেভরাকিস বলেন, আমি উভয় দল নিয়েই বীতশ্রদ্ধ। বিদেশীরা আমাদের ঘৃণা করে। এমনকি আমাদের সরকার বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার তাদের দেয়ার পরও তারা আমাদের ঘৃণা করে। আমাদের সরকার এমনকি নিজের লোকদেরও ঠিকমতো দেখভাল করতে পারেনা। যা খুবই মুর্খামি।
তিনি বলেন, দেশে এ মুহুর্তে বিপ্লব ঘটে যাচ্ছে। কিন্তু ওয়াশিংটন ডিসি’র নির্বোধরা এ কথা জানে না।
মেভরাকিস ধারণা করছেন, এ অঞ্চলে আগের যে কোন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের চেয়ে ট্রাম্প বেশি পরিমাণে ডেমোক্র্যাটদের ভোট পেতে যাচ্ছেন।