শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: বৃটেনে হেইট ক্রাইম বা ঘৃণাজনিত অপরাধের ভয়াবহতা দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গণভোটে ব্রেক্সিট বিজয়ের পর এই ধরনের অপরাধের ভয়াবহ বিস্তার ঘটেছে। এরই প্রেক্ষিতে ৩১ জুলাই রোববার বিকেলে লন্ডন ফর অল, নো প্লেস ফর হেইট শিরোনামে এক বিশাল বিক্ষোভ র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
এতে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র জন বিগসসহ বিভিন্ন কমিউনিটি ও ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। লন্ডন মেয়রের কার্যালয় সিটি হলের সম্মুখে আয়োজিত সমাবেশে খ্রিস্টান, ইহুদী ও মুসলিমসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বী নেতারা সকলের প্রতি এ আহবান জানান।
বিক্ষোভ সমাবেশে নির্বাহী মেয়র জন বিগস বলেন, ঘৃণাজনিত অপরাধ ও বিভক্তি সৃষ্টির রাজনীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর গর্বিত ইতিহাস রয়েছে টাওয়ার হ্যামলেটস তথা ইস্ট এন্ডের মানুষের।
এই বছরের শেষ দিকে টাওয়ার হ্যামলেটস ব্যাটল অব ক্যাবল স্ট্রিটের ৮০তম বার্ষিকী পালন করবে। যে ক্যাবল স্ট্রিটে ইস্ট লন্ডনের মানুষ ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে মিছিল করেছিলো। বর্ণবাদের বিরুদ্ধে সত্তর ও আশির দশকে কমিউনিটির মানুষের মধ্যে যে জাগরণ সৃষ্টি হয়েছিলো তা কাজে লাগিয়ে আমাদেরকে বর্তমান সময়ে ঘৃণা ও বর্ণবিদ্বেষ মোকাবেলা করতে হবে।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক গণভোটের আগে বর্ণবাদী সংগঠন বৃটেন ফার্স্টের টাওয়ার হ্যামলেটসে মার্চ করা চেষ্টা করেছিলো, কিন্তু বারার শান্তিপ্রিয় মানুষ তাদের সেই অপচেষ্টা রুখে দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, মেয়র হিসেবে টাওয়ার হ্যামলেটসকে সব ধরনের বর্ণবাদ ও ঘৃণাজনিত অপরাধ থেকে রক্ষা করতে তাঁর সর্বাত্নক চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। তিনি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেন, টাওয়ার হ্যামলেটসে ঘৃণার কোনো স্থান নেই, কোনোদিনও স্থান হবে না।
এ সময় অন্যান্য বক্তারা বলেন, ১৬ জুনের পর মাত্র চার সপ্তাহে বৃটেনে কমপক্ষে ৬ হাজার অপরাধের অভিযোগ রেকর্ড করেছে পুলিশ। আশংকাজনক এই অপরাধ প্রবণতা জনমনে আতংক সৃষ্টি করেছে।
বক্তারা আরো বলেন, লন্ডন হচ্ছে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের নিরাপদ আবাসস্থল। এখানে বর্ণবাদ কিংবা ঘৃণা ছড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। এই শহরের মানুষের শান্তি ও সম্প্রীতি অক্ষুন্ন রাখতে যেকোনো ধরনের বর্ণবাদী তৎপরতা রুখে দাঁড়াতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
লন্ডন থিওলজি সেন্টারের ডাইরেক্টর প্রিস্ট অ্যাঙ্গাস রিচির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র জন বিগস, সিটিজেন্স ইউকের নির্বাহী পরিচালক নেইল জেমসন প্রমুখ। এসময় ইস্ট লন্ডন মসজিদের নির্বাহী পরিচালক দেলওয়ার খান ও ট্রাস্টি মাহেরা রুবিসহ বাঙালি কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।