শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: যুক্তরাজ্য সরকারের কাছে খবর রয়েছে বাংলাদেশে আরও বড় ধরনের হামলা হতে পারে। ওই হামলার টার্গেট হতে পারে বিদেশিরা। এরমধ্যে তাদের দেশের নাগরিকরাও রয়েছে। যুক্তরাজ্য এ ব্যাপারে সতর্কবার্তাও দিয়েছে।
অথচ সরকার, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং গোয়েন্দাদের কাছে এ বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। তারা এখনও জানে না যে যুক্তরাজ্যের আশঙ্কা ঠিক কবে কখন কোথায় সত্যি হবে। এমন খবরের পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও গোয়েন্দারা এই ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করছে। পাশাপাশি যুক্তরাজ্য সরকারের কাছে হামলার আশঙ্কার কি খবর রয়েছে তাও বিভিন্নভাবে জানার চেষ্টা করছে।
গোয়েন্দাদের একটি ঊর্ধ্বতন সূত্র জানায়, বিভিন্ন দেশের ও সরকারের তরফ থেকে হামলার আশঙ্কার কথা বলা হচ্ছে। তবে এই ব্যাপারে তারা সুনির্দিষ্ট করে তথ্য দিতে পারছে না। তারা সুনির্দিষ্ট তথ্য দিলে আমাদের সুবিধা হবে। এই ব্যাপারে আরও কাজ করা সহজ হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বিদেশিরা আশঙ্কার খবর প্রকাশ করে। কিন্তু সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারে না। আমরা তাদের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট খবর পেতে চাই। সেই খবর পেলে আমাদের কাজ করতে সুবিধা হবে।
এদিকে, ব্রিটিশ সরকার এক সতর্কবার্তায় বলেছে, বাংলাদেশে আরও সন্ত্রাসী হামলার বড় হুমকি রয়েছে। এতে বিদেশিরা, বিশেষ করে পশ্চিমারা সরাসরি টার্গেটে পরিণত হতে পারেন। তাই তাদেরকে বড় ধরনের জনসমাবেশ হয় এমন সব স্থানে কম কম যেতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের বাংলাদেশের যেকোনো স্থানে চলাচল করতে হবে সতর্কতার সঙ্গে। বিমানবন্দর ব্যবহারেও সতর্ক থাকতে হবে।
যুক্তরাজ্যের তরফ থেকে বাংলাদেশের বিমানবন্দরের নিরাপত্তা সম্পূর্ণ নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছে যুক্তরাজ্য। সেখানে সতর্কবাতায় হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের নিরাপত্তার প্রসঙ্গও টেনে আনা হয়েছে। বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় যা যা করা দরকার তা সব করা হয়নি। অনেক কিছুই ঘাটতি রয়েছে। যদিও এখানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করছে ব্রিটিশ সরকার। তাদের পরামর্শ মোতাবেক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন দিক নির্দেশনাও দিয়েছেন।
সিভিল এভিয়েশন সূত্র জানায়, বিমানবন্দরের নিরাপত্তাও ক্যাটাগরি এতে উন্নীত না হওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রও বাংলাদেশের কোনো ফ্লাইট তার দেশে পরিচালনা করতে দিবে না। সরকার অনেক দিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ঢাকা থেকে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দিবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছে। কি কি শর্ত এই জন্য পূরণ করতে হবে সেটাও বলেছে।
এর অনেকাংশ বাস্তবায়িত হলেও এখনও অনেক কাজ বাকি। এই কারণে তারা সন্তুষ্ট না হওয়া পর্যন্ত ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দিবে না। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ও বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে একাধিকবার সতর্ক করেছে সরকারকে। হামলার আশঙ্কাও প্রকাশ করেছে। এই জন্য সতর্কবার্তাও তার দেশের নাগরিকের জন্য জারি করেছে।
২ আগস্ট ব্রিটিশ সরকারের ওয়েবসাইটে বাংলাদেশে ভ্রমণে ব্রিটিশ নাগরিকদের জন্য সতর্কবার্তা দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয় এ সতর্কতা আপডেট করা হয়েছে। তা বিদ্যমান থাকবে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন সম্প্রতি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিদর্শন করেছেন। সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য যে সব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এর প্রশংসা করে বলেছেন, আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। ক্রমান্বয়ে তা করা হচ্ছে।
এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বিদেশি নাগরিকদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমরা তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছি। তারা যখন যে ধরনের অনুরোধ করছেন নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য তা আমরা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে ব্যবস্থা নিচ্ছি।