২০২২ সালের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে মঙ্গলবার প্রায় ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা ব্যয় এই প্রকল্প অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি- একনেক।
বহুল আলোচিত এই প্রকল্প মেট্রো রেল প্রকল্প নামে পরিচিত, যা উত্তরা থেকে শুরু হয়ে মিরপুর-ফার্মগেইট হয়ে মতিঝিল পর্যন্ত যাবে। তিন পর্যায়ে আগামী ২০২৪ সালে এই প্রকল্প শেষ হবে।তবে সরকার আশা করছে, নির্ধারিত সময়ের দুই বছর আগে শেষ হবে প্রকল্পের কাজ। ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন আনতে এ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। সংসদ ভবনের পাশে সড়ক ভবনের জমি রয়েছে, তার ওপর দিয়ে এটা যাবে। এতে লুই কানের মূল নকশায় কোন প্রভাব ফেলবে না।
আগারগাঁওয়ে এনইসি সম্মেলনে কক্ষে এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খোন্দকারসহ কমিটির সদস্যরা।
সভা শেষে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য আব্দুল মান্নান হাওলাদার সাংবাদিকদের জানান, জাপানি সহায়তায় এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। জাইকা দেবে ১৬ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা। বাকি ৫ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা সরকার স্থানীয়ভাবে যোগান দেবে।
ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থা বিশ্বের অন্য নগরগুলোর মতো করে গড়ে তুলতে বেশ আগেই মেট্রোরেল চালুর কথা শুরু হয়। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় এই নিয়ে সমীক্ষা শুরু হয় এবং বর্তমান সরকার আমলে তা এগিয়ে চলে।
তবে প্রথম নকশায় বিজয় সরণী রুট নিয়ে বিমানবাহিনীর আপত্তির কারণে ঝুলে যায় এই প্রকল্পটি। দীর্ঘসূত্রতা নিয়ে অসন্তোষ দেখায় প্রকল্পে অর্থযোগানদাতা সংস্থা জাইকা।
পরে বিজয় সরণী রুট বাদ দিয়ে সংশোধিত নকশা অনুমোদনের পর গত ২ ডিসেম্বর জাইকা অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে এই প্রকল্পে অর্থায়নের সম্মতি দেয়।
পরিকল্পনা কমিশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলবে তিন ধাপে। প্রথমে পল্লবী থেকে সোনারগাঁও হোটেল পর্যন্ত (১১ কিলোমিটার) ২০১৯ সালের মধ্যে; দ্বিতীয় পর্যায়ে সোনারগাঁও হোটেল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত (৪ দশমিক ৪০ কিলোমিটার) ২০২০ সালের মধ্যে; তৃতীয় পর্যায়ে পল্লবী থেকে উত্তরা পর্যন্ত (৪ দশমিক ৭ কিলোমিটার) ২০২২ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন হবে।
প্রকল্পের জন্য ২২ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। ১৬টি স্টেশন ও একটি ডিপো নির্মাণসহ যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, পুনর্বাসন, পরামর্শক সেবা ইত্যাদিও রয়েছে প্রকল্পের আওতায়।
‘ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প’ শিরোনামে মেট্রোরেল প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে একনেকে। যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সড়ক বিভাগের উদ্যোগে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)।
আধুনিক নগর উপযোগী পরিবহন ব্যবস্থার পরিকল্পনা ও উন্নয়নের জন্য এর আগে গঠন করা হয়েছিল ডিটিসিএ।
২০০৮ সালে জাইকার একটি সমীক্ষার ভিত্তিতে এমআরটি লাইন- ৬ (উত্তরা-পল্লবী-বাংলাদেশ ব্যাংক) এর মেট্রো রেল রুট নির্ধারণ হয়।
Leave a Reply