শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: চীনা প্রেসিডেন্ট সি জিনপিংয়ের সঙ্গে কি কথা হবে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’র। এদিকে তাকিয়ে আছে পুরো বৃটেন।
তিনি কি দক্ষিণ ইংল্যান্ডে দ্য হিঙ্কলে পয়েন্ট পারমাণবিক প্রকল্প মুলতবি করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করবেন! তিনি কি বৃটেনে চীনের কোটি কোটি পাউন্ড বিনিয়োগ করাতে সক্ষম হবেন!
এমন আলোচনা সবার মুখে মুখে। যদি তেরেসা মে ওই পারমাণবিক প্রকল্পে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেন তাহলে বৃটেনে চীনা বিনিয়োগ বৃদ্ধি পারে। এমনটা মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তেরেসা মে চীন সফরে গিয়েছেন। সেখানে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে চীনা প্রেসিডেন্ট সি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা রয়েছে তার।
তাতে চীনা অর্থায়নে বৃটেনের একটি পারমাণবিক প্রকল্প নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে। সেখানে কি সিদ্ধান্ত হয় তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যাবে না। ক্ষমতায় আসার পর প্রথম আগামীকাল রোববার জি ২০ আন্তর্জাতিক বৃহৎ সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন তেরেসা মে। গত জুনে ব্রেক্সিট ভোটের পর পদত্যাগ করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন।
এরপর ক্ষমতায় আসেন তেরেসা মে। তিনি ক্ষমতায় আসার পর এটাই হচ্ছে তার সবচেয়ে বড় কোন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দেয়া। বিশ্বের পঞ্চম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ বৃটেন। তাকে তিনি কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করেন সে দিকে চোখ থাকবে সবার। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এতে বলা হয়েছে, জি ২০ শীর্ষ সম্মেলনে তিনি বলার চেষ্টা করবেন, ব্রেক্সিট পরবর্তী বৃটেন ব্যবসার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এ দেশটি বৈশ্বিক মুক্ত বাণিজ্যের জন্য চ্যাম্পিয়ন। সোমবার চীনের প্রেসিডেন্ট সি জিনপিংয়ের সঙ্গে তার ৩০ মিনিটের একটি বৈঠক রয়েছে। এ সময়ে দু’দেশের মধ্যে ভবিষ্যত সম্পর্ক কি হবে তা নিয়ে আলোচনা হবে। একজন সরকারি কর্মকর্তা বলেছেন, দক্ষিণ ইংল্যান্ডে যে পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের কথা রয়েছে তাতে আর্থিক সহায়তা দেয়ার কথা চীনের।
এ প্রকল্পটিতে মোট খরচের পরিমাণ ২৪০০ কোটি ডলার। সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত হলেও এ প্রকল্পে চীনা বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত মুলতবি করেছে বৃটিশ সরকার। সি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে পারেন তেরেসা মে। ওই কর্মকর্তা বলেন, আমরা বলেছি, এ মাসেই একটি সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এটা এখনও পরিকল্পনায় রয়েছে। বিষয় আগামী দু’চারদিনে পোক্ত হবে না।
ওই প্রকল্পে চীনা বিনিয়োগ বিষয়টিকে তেরেসা মের জন্য একটি পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে। তেরেসা মে যখন জানতে পারেন এ প্রকল্প জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি হুমকি তখনই গত জুলাইয়ে তিনি বেইজিংকে হতাশ করে প্রকল্পটি মুলতবি করেন। জুলাইয়ে তেরেসা মে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে এ প্রকল্পে চীনা বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে কূটনৈতিক পর্যায়ে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে বৃটেনে।
ওই সময়ে দু’দেশের মধ্যকার সম্পর্ককে সি জিনপিং ‘স্বর্ণ যুগ’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন। এখন ওই পারমাণবিক প্রকল্পকে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার ক্ষেত্রে মূল ইস্যু হিসেবে দেখা হচ্ছে। যদি এ প্রকল্পে চীনকে সন্তুষ্ট করতে পারে বৃটেন তাহলে চীন থেকে শত শত কোটি ডলারের বিনিয়োগ বৃটেনে যাওয়ার পথ খুলে যেতে পারে। আরও দুটি পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের পথ উন্মুক্ত হতে পারে, যার সঙ্গে জড়িত চীন।
সরকারের ওই কর্মকর্তা বলেছেন, এ প্রকল্প নিয়ে চূড়ান্ত যে সিদ্ধান্তই নেয়া হোক সেটাকে তেরেসা মে’র ভবিষ্যত বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নীতি হিসেবে দেখা ঠিক হবে না। উল্লেখ্য, রোববার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে ও সোমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাত হওয়ার কথা রয়েছে তেরেসা মে’র।