শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকরে চূড়ান্ত মহড়া সম্পন্ন হয়েছে।
যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর করতে সরকারের নির্বাহী আদেশ পৌঁছেছে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর জেলার নাশির আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শনিবার বিকালের দিকে সরকারের আদেশ আমাদের হাতে পৌঁছেছে।
শনিবার বিকেলে অতিরিক্ত আইজি প্রিজন কর্নেল ইকবাল কবির কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলারের কাছে নির্বাহী আদেশের কপি হস্তান্তর করেন। শনিবার দুপুর ১টা ৪০ মিনিটের দিকে কশিমপুর কারাগারে যান কর্নেল ইকবাল কবির।
এদিকে, মীর কাশেমের সঙ্গে শেষ সাক্ষাৎ করতে তার পরিবারের সদস্যরা কারাগারে গেছেন। এর আগে শনিবার সকাল কারা কর্তৃপক্ষ পরিবারের সদস্যদের তার সঙ্গে দেখা করার জন্য ডাকে বলে জানান মীর কাসেমের মেয়ে সুমাইয়া রাবেয়া।
কারাগার সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বিকেলে ৬টি গাড়িতে করে ৪৬ জন লোক মীর কাসেমের সঙ্গে দেখা করতে কারাগারে পৌঁছেছেন। তাদের মধ্যে তিনটি শিশুও রয়েছে।
শনিবার দুপুরে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর ফাঁসির মঞ্চে তৃতীয় দফা ও শেষবারের মতো মহড়া সম্পন্ন করা হয়।
এ জন্য তিন জল্লাদকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তারা হলেন জল্লাদ দীন ইসলাম, শাহজাহান ও শাহীন। কারা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকরে তিন জল্লাদের পাশাপাশি অপেক্ষমাণ তালিকায় রয়েছেন আরো দুই জল্লাদ। তবে ফাঁসি কে কার্যকর করবেন তা ফাঁসির আগ মুহূর্তেই ঠিক করা হবে।
এদের যে জল্লাদ শাহজাহানের নেতৃত্বে ফাঁসি কার্যকরের সম্ভাবনাই বেশি। বৃহস্পতি ও শুক্রবারের ফাঁসি কার্যকরের মহড়ায় তারা তিনজনই উপস্থিত ছিলেন। এসময় কারারক্ষীদের একটি দল উপস্থিত ছিল।
আজ বিকেলে মীর কাসেম আলীর পরিবারের সদস্যরা ৬টি গাড়িতে করে ৪৬ জন লোক মীর কাসেমের সঙ্গে দেখা করতে কারাগারে পৌঁছেছেন। তাদের মধ্যে তিনটি শিশুও রয়েছে। ভেতরে ঢোকার জন্য প্রথমে ২৫ জন অনুমিত পান।
পর্যায়ক্রমে পরিবারের ৪০ জনের বেশি সদস্য কারাগারে প্রবেশ করেন। সাক্ষাৎ শেষে সন্ধ্যা ৬ টা ৪০ মিনিটে বের হন তারা।
এর আগে শুক্রবার দুপুরে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন না করার সিদ্ধান্ত জানানোর পর ফাঁসি কার্যকরের প্রস্তুতি চলে।
উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ করলে তা গত মঙ্গলবার খারিজ করে দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ।
বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমান।