ইসলাম থেকে ডেস্ক: বছর ঘুরে আবারো ত্যাগের মহীমায় মুসলিম সমাজে পশু কোরবানির পবিত্র দিন ঈদুল আজহা উপণীত হয়েছে। ইতোমধ্যে স্বাধ্যমত পশু কিনেছেন অনেকেই। এখন শুধু সেই মহান দিনক্ষণের অপেক্ষা। কিন্তু দিনক্ষণ এলেইতো হবে না, জানতে হবে পশু কোরবানির সব সহিহ নিয়ম সম্পর্কে।
সহিহ বিধান মতে, উট দাঁড়ানো অবস্থায় এর ‘হলক্বূম’ বা কণ্ঠনালীর গোড়ায় কোরবানির নিয়তে ‘বিসমিল্লা-হি আল্লাহু আকবার’ বলে অস্ত্রাঘাতের মাধ্যমে রক্ত প্রবাহিত করে ‘নহর’ করতে হয় এবং গরু বা ছাগলের মাথা দক্ষিণ দিকে রেখে বাম কাতে ফেলে জবাই করতে হয়। (সুবুলুস সালাম, ৪/১৭৭ পৃঃ; মির‘আত ২/৩৫১; ঐ, ৫/৭৫ প্রভৃতি।)
অর্থাৎ কোরবানি দাতা ধারালো ছুরি নিয়ে ক্বিবলামুখি হয়ে দোয়া পড়ে নিজ হাতে খুব জলদি জবাইয়ের কাজ সমাধা করবেন, যেন পশুর কষ্ট কম হয়। এ সময় রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজের ডান পা দিয়ে পশুর ঘাড় চেপে ধরতেন। জবাইকারী বাম হাত দিয়ে পশুর চোয়াল চেপে ধরতে পারেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজ হাতে পশু জবাই করেছেন। অন্যকে দিয়েও কোরবানির পশু জবাই করানো জায়েজ আছে।
তবে এই গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতটি নিজ হাতে করা অথবা জবাইয়ের সময় স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করা বা পাশে থাকা উত্তম। ১০, ১১, ১২ যিলহাজ তিনদিনের রাত-দিন যে কোনো সময় কোরবানি করা যাবে। (ফিক্বহুস সুন্নাহ ২/৩০ পৃষ্ঠা)
জবাইকালীন যে দোয়া পড়বেন:
• বিসমিল্লা-হি আল্লা-হু আকবার (অর্থ: আল্লাহর নামে, আল্লাহ মহান)
• বিসমিল্লা-হি আল্লা-হুম্মা তাক্বাববাল মিন্নি ওয়া মিন আহলে বায়তি (আল্লাহর নামে, হে আল্লাহ! তুমি কবুল কর আমার ও আমার পরিবারের পক্ষ হতে)।
এখানে কোরবানি অন্যের হলে তার নাম মুখে বলবেন অথবা মনে মনে নিয়ত করে বলবেন ‘বিসমিল্লা-হি আল্লা-হুম্মা তাক্বাববাল মিন ফুলান ওয়া মিন আহলে বায়তিহি’ (…ব্যক্তির ও তার পরিবারের পক্ষ হতে)। এই সময় নবীর উপর দরূদ পাঠ করা মাকরূহ’। [মির‘আত ২/৩৫০ পৃ.; ঐ, ৫/৭৪ পৃ.]
• ‘বিসমিল্লা-হি আল্লা-হু আকবার, আল্লা-হুম্মা তাক্বাববাল মিন্নি কামা তাক্বাববালতা মিন ইবরাহিমা খালিলিকা’ (…হে আল্লাহ! তুমি আমার পক্ষ হতে কবুল কর যেমন কবুল করেছ তোমার দোস্ত ইব্রাহিমের পক্ষ থেকে)। (মাজমু‘ ফাতাওয়া ইবনে তায়মিয়াহ)
• যদি দোয়া ভুলে যান বা ভুল হওয়ার ভয় থাকে, তবে শুধু ‘বিসমিল্লাহ’ বলে মনে মনে কোরবানির নিয়ত করলেই যথেষ্ট। (ইবনু কুদামা, আল-মুগনি)
• উপরোক্ত দোয়াগুলোর সাথে অন্য দোয়াও রয়েছে। যেমন- ‘ইন্নি ওয়াজ্জাহ্তু ওয়াজহিয়া লিল্লাযি ফাত্বারাস সামাওয়াতি ওয়াল আরযা ‘আলা মিল্লাতি ইব্রাহিমা হানিফাঁও ওয়া মা আনা মিনাল মুশরিকিন। ইন্না সালাতি ওয়া নুসুকি ওয়া মাহইয়ায়া ওয়া মামাতি লিল্লা-হি রবিবল আলামিন। লা শারিকা লাহু ওয়া বিযালিকা উমিরতু ওয়া আনা মিনাল মুসলিমিন। আল্লাহুম্মা মিনকা ওয়া লাকা; (মিন্নি ওয়া মিন আহলে বায়তি) বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’।
(বায়হাক্বী ৯/২৮৭; আবু ইয়া‘লা, মির‘আত ৫/৯২; সনদ হাসান, ইরওয়া ৪/৩৫১)