ত.র. সজীব: অ্যাপল এবং স্যামসাং যেন প্রযুক্তি বিশ্বের চিরায়ত এক দ্বান্দ্বিক সম্পর্কে যুক্ত হয়ে গেছে। কোনোভাবেই একটি প্রতিষ্ঠান অন্যটির সাথে ঝামেলা ছাড়া চলতেই পারছে না। আর তাতে করে উভয় প্রতিষ্ঠানই একে অপরের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ একের পর এক উত্থাপন করেই চলেছে।
চলমান নানা মামলায় এর আগে চূড়ান্ত এক বিজয় লাভ করে অ্যাপল। আদালত স্যামসাংয়ের বেশ কয়েকটি ডিভাইসে অ্যাপল′র বিভিন্ন ফিচার ইচ্ছাকৃতভাবে নকল করার অভিযোগে সত্যতা খুঁজে পায়। তাতে করে ১০৫ কোটি ডলার জরিমানাও করা হয় স্যামসাংয়ের বিরুদ্ধে। মামলায় জয়লাভ করেও ক্ষান্ত হয়নি অ্যাপল। যেসব স্যামসাং পণ্যে অ্যাপল′র প্যাটেন্ট ভঙ্গের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, সেগুলোকে স্থায়ীভাবে বিক্রি নিষিদ্ধ করার আবেদন জানায় তারা।
তবে শেষ পর্যন্ত অ্যাপল′র এই দাবীতে কর্ণপাত করেনি আদালত এবং অ্যাপল′র এই দাবীকে খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। এই মামলার বিচারক জানিয়েছেন, স্যামসাংয়ের এসব পণ্যের কারণে অ্যাপল′র ব্যবসায় ক্ষতি হচ্ছে, এমন ঘটনার পর্যাপ্ত প্রমাণ পায়নি আদালত।
যার কারণে অ্যাপল′র দাবীতে সায় দেওয়া সম্ভব হয়নি আদালতের। এ প্রসঙ্গে ডিস্ট্রিক জাজ লুসি কোহ বলেন, ‘যে ফোন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তাতে প্রচুর পরিমাণে ফিচার রয়েছে। আর অ্যাপল′র প্যাটেন্ট ভঙ্গ করে, এমন প্যাটেন্টের সংখ্যা সামান্যই। যদিও অ্যাপল কিছু নির্দিষ্ট ফিচারকে কেবল তাদের করেই পেতে চায়, তবে তার ভিত্তিতে গোটা একটি ডিভাইসের বিক্রি নিষিদ্ধ করা সম্ভব নয়।’ আগস্টে স্যামসাং-অ্যাপল মামলায় অ্যাপলকে জয়ী ঘোষণা করায় অনেকেই এই যুদ্ধের অবসান দেখেছিলেন। তবে এর পরেও যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে বিভিন্ন দেশের আদালতে ছিল বিভিন্ন মামলা। এর অনেকগুলোতেই রায় গেছে অ্যাপল′র বিরুদ্ধে।
যুক্তরাজ্যে একটি মামলায় স্যামসাংয়ের ডিভাইস অ্যাপল′র প্যাটেন্ট ভঙ্গ করেনি বলেই রায় হয়। মটোরোলার বিরুদ্ধে আনা একটি মামলাতেও রায় যায় অ্যাপল′র বিপক্ষে। পরবর্তীতে অ্যাপল এবং এইচটিসির মধ্যে প্যাটেন্ট শেয়ারিংয়ের একটি চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়। সবমিলিয়ে আগস্টের রায়ের পর থেকে শুরু করে অ্যাপলকে মামলায় পরাজয় বরণ করেই পথ চলতে হচ্ছে। সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রে স্যামসাং পণ্য বিক্রি নিষিদ্ধ করার আবেদন খারিজ করায় সেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকল।
Leave a Reply