শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: জার্মানিতে পতিতাদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে নতুন আইন করেছেন সেদেশের রাজনীতিবিদরা। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
ওই আইনের অধীনে কোন পতিতা বা দেহপসারিণীর সঙ্গে কনডম ছাড়া শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনকে অবৈধ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এর পাশাপাশি আরও কিছু নতুন নিয়মকানুন অনুমোদন দিয়েছেন রাজনীতিকরা।
জার্মানির মহিলা ও পরিবার বিষয়ক মন্ত্রী মানুয়েলা শওয়েসিগ বলেছেন, নিষিদ্ধ পল্লীর মালিকদের ক্ষমতার কাছে যৌনকর্মীরা অসহায়। তাই নতুন এ আইনটি তাদেরকে শোষণ ও তাদের ওপর সহিংসতা বন্ধ হবে বলে আমরা আশা করছি। নারী ও পরিবার বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এলক ফারনার এর আগে এমন পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন, শেষ পর্যন্ত যেসব নারী ও পুরুষ যৌনকর্মীর পেশা বেছে নিয়েছেন তারা এতে সুরক্ষিত থাকবেন।
তবে সরকারের এমন পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে বিভিন্ন মানবাধিকার বিষয়ক গ্রুপ। তারা বলেছে, আমলাতান্ত্রিক এই জটিলতা যৌনকর্মী ও কর্তৃপক্ষের মধ্যে ব্যাপক আস্থার সঙ্কট সৃষ্টি করবে। তারা এতে পুলিশের কাজে কম সহায়তা করবে। যৌনকর্মীরা নির্যাতনের শিকার হলে তা পুলিশকে শেয়ার করবে না। জার্মানির বেসডি সেক্স ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছেন, এই আইন দিয়ে যৌনকর্মীদের সুরক্ষা দেয়া যাবে না।
নতুন আইন বলা হয়েছে, নিষিদ্ধ পল্লীর মালিকদেরকে নতুন এ আইনের দিকে খদ্দেরদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে। প্রচার চালাতে হবে যে, অনিরাপদ শারীরিক সম্পর্ক নিষিদ্ধ। নতুন এ আইনের উদ্দেশ্য হলো, জার্মানিতে দেহব্যবসার নিয়মকানুনকে আরও কঠোর করা। দেশটিতে এ ব্যবসাকে বৈধতা দেয়া হয়েছে ২০০২ সাল থেকে।
কিন্তু অব্যাহত মানব পাচার, নির্যাতন ও নানা অনিয়ম এ ব্যবসার ক্ষতি করছে। তাই নিষিদ্ধ পল্লীর সব মালিকের জন্য লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যাতে তারা আইনগত নুন্যতম মানদন্ড বজায় রাখে, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার মানদন্ড মেনে চলে।
যদি কেউ বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এ ব্যবসায় যেতে চান তাহলে তার ব্যবসায় কোন অসাধু চক্র, পাচারকারী ও অপরাধীরা জড়িত কিনা তা যাচাই করা হয়। এসব যাচাই বাছাইয়ের পর স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে নিবন্ধিত হতে হয়। নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ হলে দেয়া হয় একটি সনদ। এই সনদ প্রতি দু’ বছর পর পর নবায়ন করতে হয়। যেসব যৌনকর্মীর বয়স ২১ বছরের নিচে তাদের জন্য এমন সনদের বৈধতার মেয়াদ এক বছর।
প্রতি ছয় মাসে তাদেরকে সরকারি স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্তৃপক্ষ দ্বারা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হয়। দেহ ব্যবসার আইন লঙ্ঘন করলে ৮৬০ পাউন্ড থেকে ৪৩ হাজার পাউন্ট পর্যন্ত জরিমানার বিধান রয়েছে। একই সঙ্গে কর্তৃপক্ষ দেহব্যবসার সনদ প্রত্যাহার করতে পারে। দেহ ব্যবসা সংক্রান্ত নতুন আইনটি শুক্রবার পাস করেছে জার্মান পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষ বুন্দেসরাট। এই আইনটি এখন পাঠানো হবে প্রেসিডেন্ট জোয়াসিম গাউকের কাছে। তিনি এতে স্বাক্ষর করার সঙ্গে সঙ্গে ২০১৭ সালের ১লা জুলাই থেকে কার্যকর হবে এ আইন।