মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০৩

সিলেটের দাড়িয়াপাড়ায় ৮০ বছর ধরে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ

সিলেটের দাড়িয়াপাড়ায় ৮০ বছর ধরে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ

জীবন পাল: প্রতিমা তৈরিই যাদের পেশা ও নেশা। শুরুর কথাটা না জানলেও, বংশপরম্পরায় যে চলে আসছে তা ঠিকই জানা শংকর পালের।

সিলেটের দাড়িয়াপাড়ার মেঘনা এলাকায় যার বসবাস। যেখানে ৭০ থেকে ৮০ বছর ধরে বংশ পরম্পরায় প্রতিমা তৈরির কাজ চলে আসছে বলে জানালেন এক রকম হতাশার আঙ্গিকেই। অত্যন্ত আগ্রহ সহকারেই শংকর পালের হতাশা আর অভিজ্ঞতার কথা জানা গেল। জানা গেল দূর্গা প্রতিমা তৈরির অতীত ও বর্তমানের কথা।

প্রায় ১৬ বছর ধরে দূর্গা প্রতিমা তৈরি করে যাচ্ছেন দাড়িয়াপাড়ার শংকর পাল ।বয়সের দিক থেকে যিনি ৪০ এর কোঠায় পা দিয়েছেন। যিনি সিলেট এলাকায় সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রতিমা তৈরির কাজ করে থাকেন। শুধু সিলেট নগরীই নয়, সিলেট নগরীর পাশাপাশি সিলেটের গোয়ালাবাজার, বালাগঞ্জ, গবিন্দগঞ্জ ও ছাতক এলাকার বিভিন্ন মন্ডপের প্রতিমার কাজও তিনি করে থাকেন।

এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। একই এলাকার পাশ্ববর্তী প্রতিমা তৈরির কারিগর দুলাল পালকে সাথে নিয়ে ৬০টি মন্ডপের প্রতিমা তৈরি করছেন। যার মধ্যে ৪০টি প্রতিমার কাজ করছেন শংকর। বাকি ২০টি কাজ করছেন প্রতিমা তৈরির কাজে ২০ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন প্রতিমা কারিগর চৈত্র মাস থেকে প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করে থাকেন বলে জানালেন শংকর ।

আজ থেকে ১৬ বছরের আগে শুরু করা প্রতিমা তৈরির কাজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগের দিনের দূর্গাপুজা আর এখনের দূর্গা পুজার মধ্যে যেমন আকাশ-পাতাল তফাৎ রয়েছে ঠিক তেমনি প্রতিমা তৈরির কাজের বেলাও। আগের কাজগুলো ছিল মান সম্মত, পরিপাটি ও গুছানো।

কেননা, তখনকার দিনে এখনকার মত এত পুজো হতনা। যেখানে এখন এক পাড়ায় একাধিক পুজো হয়ে থাকে। যার কারনে এখনের তুলনায় অনেকাংশেই দূর্গা প্রতিমা কম তৈরি হত। তাই কাজগুলো ছিল মান সম্মত। অনেক সময় নিয়ে একটি প্রতিমা তৈরি করা হত। তাছাড়া, এখন তো খড়-বাঁশ ছাটায় করতে পারলেই অনেকে কারিগর বনে যাচ্ছেন। যেখানে আগের দিনে কারিগরের সংখ্যা ছিল হাতেগোনা।

১৬ বছর আগে যেখানে মাত্র ১০-১২টি প্রতিমা তৈরির কাজ হত সেখানেই এখন হচ্ছে সিলেটের সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রতিমা তৈরির কাজ। তখনকার দিনে যেখানে কোয়ালিটির উপর নির্ভর করে একটি প্রতিমা তৈরির পারিশ্রমিক রাখা হত ৬ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা, সেখানে এখন সেই প্রতিমার পারিশ্রমিক নেওয়া হচ্ছে ২০ হাজার থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকা।

১ সপ্তাহ, ১৫দিন আবার ডিজাইনের উপর ভিক্তি করে কোন কোন প্রতিমা তৈরি করতে ১ মাস সময় লেগে যায় এমনটাই জানালেন কারিগররা।

প্রতিটি প্রতিমা তৈরির কারিগররা এই মূহুর্তে অনেক ব্যস্ততার সাথে দিন অতিবাহত করতে দেখা গেছে। কেননা, হাতে আর মাত্র ক’টা দিন। এর মধেই সকল প্রতিমার কাজ শেষ করতে হবে। পুজোর ১৫ দিন আগ থেকে চলে প্রতিমার চক্ষুদান। তাই কয়েকদিন ধরে শুরু হয়েছে প্রতিমাগুলোর চক্ষুদানের কাজ।

কারিগরদের সাথে কথা বলে জানা গেল, সাধারনত দূর্গাপুজার ২-৩ দিন আগে অর্থ্যাৎ চতুর্থী, পঞ্চমী ও ষষ্ঠীর দিন প্রতিমাগুলো হস্তান্তর করা হয়ে থাকে। তাছাড়া এর আগেও দূর-দূরাঞ্চলের মন্ডলগুলোর প্রতিমা হস্তান্তর করা হয়।




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024