মিনহাজ উদ্দিন: সিলেটের গোয়াইনঘাটে রাতারগুল সোয়াম ফরেস্টের আদলে যাত্রা শুরু করেছে জুগিরকান্দি সোয়াম ফরেস্ট।
উপজেলার ৫নং আলীরগাঁও ইউনিয়নের বেখরা এলাকায় অন্তর্ভুক্ত এই সোয়াম ফরেস্টটি পর্যটকদের কাছে নবরূপে আবির্ভূত হয়েছে। কাগজে কলমে জুগিরকান্দি হলেও ইতিহাস বিক্রীত করে কতিপয় স্থানীয় অতিউৎসাহী মহল এ বনের নাম মায়াবন দিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে এলাকাবাসীর তরফে। জলারবনটি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর প্রতিনিয়তই বাড়ছে পর্যটক দর্শনার্থীর সংখ্যা।
আয়তনে রাতারগুলের চেয়ে বড় জুগিরকান্দির এই জলারবনটি কল্প কথা এখন স্থানীয়, সিলেটসহ সারা দেশের পর্যটক, দর্শনার্থীসহ সবার মুখে মুখে। প্রায় ১ হাজার একর ভূমি জুড়ে বিস্তৃত এ জলারবনটি গোয়াইনঘাটের পর্যটন স্পটের সপ্তাশ্চর্য লোকেশনে পরিণত হচ্ছে। পরিবার পরিজন নিয়ে এখনো অনেকে ঘুরে বেড়াচ্ছেন হরেক জায়গায়।
জাফলং, বিছনাকান্দি, রাতারগুলের পাশাপাশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠা এ স্থানটির প্রতিও ঝুঁকে পড়ছেন অনেকে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এ বনটির নয়নাভিরাম নানা দৃশ্য। এখানেও রয়েছে রাতাগুলের আদলে হিজল, করচসহ নানা জলজ বৃক্ষরাজি। রয়েছে ডাহুক, কুড়া, পানকৌড়ি, বালিহাঁসসহ নানা পাখপাখালির সরব উপস্থিতি। শরতের বেলায় সাজানো আকাশের যেন মিতালি আঁকা স্পন্দন উঠেছে এখানে।
দিগন্তজুড়া এই জলারবনটি যেন হাতছানি দিয়ে পর্যটকদের ডাকছে। নীরব, নিস্তব্ধ-গহিন বনে প্রবেশ করলে চারদিক থেকে ঘিরে ধরে সবুজ প্রকৃতি। পাখপাখালির ডাকে বিমুগ্ধ হবেন যে কেউ। ইট পাথরের ব্যস্ততম শহর ছেড়ে আসা নাগরিকদের সহসা আপন মনে বরণ করছে এখানকার প্রকৃতির শীতল হাওয়া। প্রকৃতির কাছে এসে বিমোহিত হচ্ছেন অনেকেই। এখানে বেড়াতে আসা পর্যটকদের বেশির ভাগই উঠতি, তরুণ।
স্বচ্ছ্ব জলারাশির সাথে জলকেলিতেই যেন তারা সময় কাটাতে এসেছেন। নৌকায় হইহুল্লোড করে আপন মনে সুর তুলে গান গাইছেন অনেকেই। মনমাতানো নানা গানে মাতোয়ারা আগন্তুকরা। মনোলোভা এ লোকেশনের দৃশ্য সেলফি আর ছবি তুলে অনেকে সঙ্গে নিজেদের ওয়ালে আপলোড করে হালের ব্যস্ততম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজেদের আবৃত্ত করছেন।
ঢাকার কেরানীগঞ্জের পর্যটক শামীম খান জানান, আমরা ৪ জন বিছনাকান্দি গিয়েছিলাম, সেখান থেকেই জুগিরকান্দি জলারবনের খবর পেয়ে এখানে এসেছি। বনটি ঘুরে দেখে মনে হচ্ছে যেন আমি সাতক্ষীরার সেই আসল সুন্দরবনটির মাঝেই আছি। সবকিছুই অপরূপ। এখানকার নিরাপত্তাসহ এই বনে ভ্রমণের পরিবেশ খুবই ভালো লেগেছে।
আবদুল খালেক নামের হবিগঞ্জের একজন পর্যটক জানান, জাফলংসহ অপরাপর পর্যটন স্পটের মতো একদিন এই স্পটটি এগিয়ে যাবে। তবে সরকারি উদ্যোগ ও সকলের সহযোগিতা থাকলে এখানকার এই নবসৃষ্ট জলারবনটি বহুদূর এগিয়ে যাবে।