শরীর স্বাস্থ্য ডেস্ক: এই প্রশ্নটা প্রায় সকলেই করে থাকেন। কিন্তু সঠিক উত্তরটা কয়জনেরই বা জানা থাকে বলুন।
অনেকেই বলেন, ভাত খাস না রে মোটা হয়ে যাবি! একবারও কি তারা ঠিক তথ্যটা জানার কষ্ট করেন? মনে তো হয় না। আসুন আমরা সেই আদি কাল থেকে চলে আসা এই ধরণার পোস্টমর্টেম করে দেখি আদৌ ভাতের সঙ্গে শরীরের ওজন বাড়ার কোনও সম্পর্ক আছে কিনা।
সারা বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ নানা ভাবে ভাত খেয়ে থাকেন। বিশেষত, এশিয়া মহাদেশে প্রতিদিন ভাত খাওয়া লোকের সংখ্যা সবথেকে বেশি। আর বাংলাদেশ ও ভারতের কথা তো ছেড়েই দিলাম!
বাংলাদেশে ভাতের সঙ্গে নানা পদের সমাহারে ভোজন রসিকদের রসনা তৃপ্ত হয়ে থাকে। ভারতের উত্তরের বেশ কিছু রাজ্যে এখনও সেভাবে ভাতের জনপ্রিয়তা না থাকলেও দক্ষিণ ভারতের মানুষদের প্রথম পছন্দ ভাত, তারপর একে একে জায়গা পায় বাকি পদগুলি।
প্রসঙ্গত, একথা অস্বীকার করার নয় যে ভাতের একাধিক গুণ রয়েছে। যেমন ধরুন, আমাদের শক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভাতের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। এত উপকারে লাগার পরেও ভাতকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছেন অনেকে। তাদের অভিযোগ শরীরে অতিরিক্ত মেদ বৃদ্ধিতে ভাতেরও ভূমিকা রয়েছে।
একথা কি সত্যি? চলুন জেনে নেওয়া সে সম্পর্কে।
ভাতের মধ্যে কী রয়েছে? এতে রয়েছে ফ্যাট, প্রোটিন, ভিটামিন এবং মিনারেল। শুধু তাই নয় চালের বেশিরভাগটা জুড়েই রাজত্ব করছে কার্বোহাইড্রেট। তাই তো ডায়াটেশিয়ানরা ভাতকে মূলত কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার হিসেবে বিবেচিত করে থাকেন।
আর একথা তো সকলেরই জানা যে আমাদের শরীরের কমর্ক্ষমতা বাড়াতে কার্বোহাইড্রটের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই তো যারা সারা দিন ব্যাপী কর্মচঞ্চল থাকতে চান তাদের জন্য ভাত খাওয়াটা জরুরি।
তবে একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়েছে যে, কিছু ধরনের কার্বোহাইড্রেট বাস্তবিকই মেদ বাড়ায়। যেমন- সাধারণ চালের ভাত বেশি খেলে ওজন বাড়ার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু ব্রাউন রাইস খেলে অতটা ওজন বাড়ে না।
শুধু তাই নয়, সাদা ভাতের তুলনায় ব্রাউন রাইসে ফাইবার এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট অনেক বেশি পরিমাণে থাকে। ফলে নিয়মিত লাল চালের ভাত খেলে ওজন বাড়ার সম্ভবনা থাকে না বললেই চলে।
প্রসঙ্গত, কোনও ধরনের ভাতেই ফ্যাটের পরিমাণ বেশি থাকে না। তাই শুধুমাত্র ভাত খেয়ে কেউ মোটা হয়ে যান না। ভাতের সঙ্গে অন্য রিস্ক ফ্যাক্টরগুলি যুক্ত হলে, তবেই মোটা হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। আর এ কারণেই বিশেষজ্ঞরা সব সময় অল্প পরিমাণে ভাত খাওয়ার পরমার্শ দেন।
সুতরাং সবশেষে একথাই বলতেই হয় যে, সাদা ভাতের পরিবর্তে লাল চালের ভাত খান। আর যদি সাদা ভাত খেতেই হয়, তাহলে তা খান পরিমিত হারে। একথা ভুলে যাবেন না যে মাত্রাতিরিক্ত কোনও জিনিসই শরীরের জন্য ভাল নয়।