একাত্তরের মৃক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রায় হবে যে কোনো দিন। মঙ্গলবার এ মামলায় পক্ষে-বিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর রায় অপেক্ষমান রাখেন।সাঈদীর মামলায় এর আগেও একবার যুক্তি তর্ক উপস্থাপন হলেও ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠনের কারণে আদালত যুক্তিতর্কের অংশটি আবার শোনে। ট্রাইব্যুনালের নিয়ম অনুযায়ী, আদালত এখন সুবিধামতো সময়ে যে কোনো দিন এ মামলার রায় ঘোষণা করতে পারে। তবে সবার সুবিধার জন্য রায়ের দুয়েকদিন আগে তারিখ জানিয়ে দেয়া হবে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আটক জামায়াত নেতাদের মধ্যে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধেই সবার আগে অভিযোগ গঠন হয়। তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনসহ মোট ২৮ জন রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষ্য দেন। এছাড়া তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেয়া ১৫ সাক্ষীর জবানবন্দি ট্রাইব্যুনাল সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণ করে। আসামিপক্ষে ১৭ জনের সাফাই সাক্ষ্য শেষ হয় গত ২৩ অক্টোবর। মুক্তিযুদ্ধের সময় পিরোজপুরে হত্যা, লুণ্ঠন, নির্যাতনসহ বিভিন্ন অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন গ্রেপ্তার করা হয় সাবেক সংসদ সদস্য সাঈদীকে। পরের বছর ১৪ই জুলাই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। একাত্তরে ৩ হাজারেরও বেশি নিরস্ত্র ব্যক্তিকে হত্যা বা হত্যায় সহযোগিতা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, ভাংচুর ও ধর্মান্তরে বাধ্য করাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ২০টি ঘটনায় গত বছর ৩ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে সাঈদীর বিচার শুরু হয়।
এর আগে গত বছরের ৬ ডিসেম্বর মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম শেষে যেকোনো দিন রায় ঘোষণা হবে মর্মে আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় গত বছরের ৭ ডিসেম্বর। এরপর স্কাইপ কেলেঙ্কারির কারণে ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান পদ থেকে বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম পদত্যাগ করেন এবং বিচারপতি এটিএম ফজলে কবির নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হন। ট্রাইব্যুনালে চেয়্যারম্যান বদল হবার প্রেক্ষাপটে মাওলানা সাঈদীর মামলায় যুক্তিতর্ক পুনরায় শুনানির আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। রাষ্ট্রপক্ষকে দু’দিন এবং আসামিপক্ষের জন্য তিন দিন বরাদ্দ করা হয় যুক্তি উপস্থাপনের জন্য। সে হিসেবে রাষ্ট্রপক্ষ প্রথমে দু’দিন যুক্তি উপস্থাপন করে। এরপর আসামিপক্ষ প্রায় ছয় দিনের মতো সময় নেয় যুক্তি উপস্থাপনের জন্য। আসামিপক্ষের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক গতকাল সাড়ে তিনটায় যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন।
সাঈদী ছাড়াও জামায়াতের সাবেক ও বর্তমান আমিরসহ সাত শীর্ষ নেতা এবং বিএনপির দুই নেতার বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায়ে গত ২১ জানুয়ারি জামায়াতে ইসলামীর সাবেক রুকন আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির আদেশ হয়।
এছাড়াও জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার মামলাও শুনানি শেষে রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে।
Leave a Reply