শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:০৫

জাতীয় সংসদে সংশোধন বিল অনুমোদিত

জাতীয় সংসদে সংশোধন বিল অনুমোদিত

 

যে কোন সাজাপ্রাপ্ত ব্যাক্তির বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ রেখে ব্যক্তির পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধের বিচারে সংগঠনের বিচারের বিধান রেখে ৬০ দিনের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তির বাধ্যবাধকতা বেধে দিয়ে সংসদে আর্ন্তজাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) (সংশোধন) বিল-২০১৩’ পাস হয়েছে।

উল্লেখ, মানববিরোধী অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত আসামী আব্দুল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন সাজা হলে ওই রায়ের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আপিলের সুযোগ না থাকার বিষয়টি আলোচনায় আসে। এর মধ্যে দেশব্যাপী গণজাগরণের মুখে সরকার আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেয়।যা রোববার সংসদে সর্বসম্মতভাবে তা পাস হয়।

রবিবার জাতীয় সংসদের বৈঠকে বিল পাসের জন্য উত্থাপন করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. ফজলে রাব্বি মিয়া। এ সময় স্পিকার আব্দুল হামিদের সভাপতিত্বে সংসদের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। দফা-১ এর উপদফা (২) এর পরিবর্তে দফা-২ প্রতিস্থাপিত হওয়ায় বিলটি ১৪ জুলাই-২০০৯ তারিখে কার্যকর হয়েছে গণ্য হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বিলে ট্রাইব্যুনালের বিচারের ক্ষেত্রে উভয় পক্ষের ন্যায় বিচার নিশ্চিতের লক্ষ্যে আইনের সুযোগের সমতা নিশ্চিতের বিধান রাখা হয়েছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার যুদ্ধাপরাধসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে সরকার বা যে কোন সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিকে দন্ডিত ব্যক্তি কর্তৃক আপিল দায়েরের সমান সুযোগের প্রস্তাব দিয়ে বিলটির রিপোর্ট সংসদে উত্থাপিত হয়।

যেকোন রায়ের বিরুদ্ধে সরকার, বাদী ও বিবাদীর আপিল করার সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব করে রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই আইন ২০০৯ সালের ১৪ জুলাই থেকে কার্যকর হয়েছে বলে ধরা হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ ত্বরান্বিত করতে গত বুধবার বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ। পরে এ টি পরীক্ষা করে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। বিলে ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে সরকার, দন্ডিত ব্যক্তি ও যেকোনো সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির সুপ্রিম কোর্টে আপিলের সুযোগ রাখা হয়েছিল।

তবে এক্ষেত্রে সংসদীয় কমিটি সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির আপিলের সুযোগ রাখার বিধান বাতিল করে সরকারপক্ষ, বাদী ও বিবাদীপক্ষের আপিলের সুযোগ রেখে প্রতিবেদন তৈরি করেছে। বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী বিভিন্ন অপরাধ বিচারের উদ্দেশ্যে ১৯৭৩ সালে ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনাল) এ্যাক্ট-১৯৭৩’ প্রণয়ন করা হয়েছে। বর্তমানে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার উক্ত আইনের অধীনে সংগঠিত অপরাধ বিচার করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ।

উক্ত আইনের অধীনে ট্রাইব্যুনালে গঠনক্রমে যুদ্ধাপরাধসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের বিচার কাজ চলমান রয়েছে। ধারা ২১ এর উপধারা (১) অনুযায়ী দন্ডিত ব্যক্তি কর্তৃক যে কোন দন্ডাদেশ এবং ধারা ২১ এর উপধারা (২) অনুযায়ী খালাস আদেশের বিরুদ্ধে সরকার কর্তৃক সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল দায়েরের বিধান রাখা হয়েছে। সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সব নাগরিকের আইনের সমান আশ্রয় লাভের যে অধিকার দেওয়া হয়েছে, ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার ক্ষেত্রে ২১(২) ধারায় তা প্রতিফলিত হয়নি। সে জন্য ট্রাইব্যুনালের বিচারের ক্ষেত্রে উভয় পক্ষের ন্যায় বিচার নিশ্চিতকরণে আইনে সমান সুযোগ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এ কারণেই ২১(২) ধারা সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

দন্ডিত ব্যক্তির আপিলের জন্য ২১(১) উপধারায় ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী অভিযুক্ত ব্যক্তি দ্রুত বিচার লাভের অধিকারী। তাই সংশোধনীতে আপিল নিষ্পত্তির মেয়াদ নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। বিদ্যমান আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন- ১৯৭৩ অনুযায়ী সরকার শুধু আসামির খালাসের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবে। আর আসামিপক্ষ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবে। বিলের উদ্দেশ্যে আরো বলা হয়, বিবেচ্য বিলটি আইনে পরিণত হলে যুদ্ধাপরাধসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে সরকার ও অন্য কোন সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিকে দন্ডিত ব্যক্তি কর্তৃক আপিল দায়েরের সমান সুযোগ অর্জনের অধিকার দেয়াসহ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আপিল মামলা নিষ্পত্তি হবে বলে আশ করা হয়েছে।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024