শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১১:০০

যুক্তরাজ্যে ই-ভিসা পদ্ধতি চালুতে বিড়ম্বনায় অভিবাসীরা

যুক্তরাজ্যে ই-ভিসা পদ্ধতি চালুতে বিড়ম্বনায় অভিবাসীরা

নানান ক্যাটাগরিতে ভিসা নিয়ে থাকা অভিবাসীদের তাদের অভিবাসন নথি আপগ্রেড করার জন্য তাগিদ দিচ্ছে হোম অফিস। সবাই যাতে অভিবাসন নথি আপগ্রেড করেন সেজন্য ভিসাধারীদের বার বার বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

ই-ভিসা প্রথম প্রয়োগ করা হয়েছিল ইইউ  সেটেলমেন্ট স্কিমের সময়, যেটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাগরিকদের জন্য যারা ব্রেক্সিটের আগে যুক্তরাজ্যে বসবাস করেছিল এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য করা হয়েছিল।

এবার নন-ব্রিটিশ অভিবাসীদের জন্য ই-ভিসা প্রক্রিয়া শুরু করেছে যুক্তরাজ্য সরকার। লাখ লাখ ভিসাধারী এর আওতায় রয়েছেন। এক্ষেত্রে শুধুই ই-ভিসায় নাগরিকের সকল তথ্য বহন করবে যা সফটওয়্যারের মধ্যে সংরক্ষিত থাকবে।

নতুন ডিজিটাল ভিসা যুক্তরাজ্যের বর্ডার এবং মাইগ্রেশন সিস্টেমকে ডিজিটাল করতে সরকারের একটি পরিকল্পনার অংশ। অনেক ফিজিক্যাল মাইগ্রেশন নথি যেমন বায়োমেট্রিক  রেসিডেন্স পারমিট বা বায়োমেট্রিক রেসিডেন্স কার্ড থাকা ব্যক্তিদের মাইগ্রেশন রাইটস প্রমাণ করে ই-ভিসায় রিপ্লেস করতে হবে।

বর্তমানে ভিসাধারীদের বহন করা সরকার ফিজিক্যাল বায়োমেট্রিক রেসিডেন্স পারমিট (ইজচ) প্রতিস্থাপন করার পরিকল্পনার কথা বেশ আগেই জানিয়ে দিয়েছিল এবং  ই-ভিসাতে কীভাবে আসতে হবে তারও ধারণা দেয়া হয়েছিল।

ভিসার ক্ষেত্রে ফিজিক্যাল  ডকুমেন্টের পরিবর্তে ই-ভিসা পদ্ধতিতে  বৃটেনে বসবাস, কাজ করার এবং সুবিধা দাবি করার অধিকারের প্রমাণ করবে।  আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত ফিজিক্যাল বায়োমেট্রিক রেসিডেন্স পারমিট (ইজচ)’র ব্যবহার বলবৎ থাকবে ২০২৫ সাল থেকে আর ফিজিক্যাল বায়োমেট্রিক রেসিডেন্স পারমিট থাকবে না।

হোম অফিস থেকে বলা হয়েছে বায়োমেট্রিক রেসিডেন্স পারমিট থেকে ই-ভিসায় আসতে হলে একটি নির্দিষ্ট ডিজিটাল লিংক দেয়া হবে। লিংক অনুযায়ীই-ভিসার  রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। ডিজিটাল লিংকের মাধ্যমে ই-ভিসায় আসতে হলে ব্যক্তিকে অবশ্যই কম্পিউটার এক্সপার্ট বা ডিজিটাল এক্সপার্ট হতে হবে নতুবা কার্যটি সম্পাদন করা সম্ভব নয়।

গবেষণায় দেখা গেছে দেশটিতে দুই লাখেরও ভিসাধারী নাগরিক আছেন যারা ডিজিটাল ব্যবহারের একেবারেই জিরো, তাহলে তারা কীভাবে ই-ভিসায় আসার কার্যটি সম্পাদন করবে? এনিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এ ছাড়া বিপাকে পড়ছেন এ রকম নাগরিকরা। এ ক্ষেত্রে শুধু  ফিজিক্যাল বায়োমেট্রিক রেসিডেন্স পারমিট-ই নয় একই সঙ্গে ভাড়া, কাজ এবং  বেনিফিট প্রভৃতিকে ডিজিটালে রিপ্লেস করা হবে।

তবে এরকম দুর্বল ব্যক্তিদের সাহায্য করতে হোম অফিস কয়েকটি সংস্থাকে  সহায়তা করার জন্য ৪ মিলিয়ন পাউন্ড বরাদ্দ করেছে যারা কারো সহায়তা ছাড়াই ই-ভিসাতে স্থানান্তর হতে পারবেন।

ওদিকে পদ্ধতিটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ডিজিটাল অধিকার প্রচার সংস্থা-ওপেন রাইটস গ্রুপ নামের একটি সংগঠন। এ নিয়ে তারা একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

তারা বলছে, ই-ভিসার ডিজাইন, রোলআউট এবং বাস্তবায়নের ক্রটির কারণে যুক্তরাজ্যে থাকার অধিকার থাকা মানুষেরা এটি প্রমাণ করতে পারবে না। ডেটা ত্রুটি, সিস্টেম ক্র্যাশ এবং ইন্টারনেট সংযোগের স্থিতিশীলতার জন্য এটি অনেক সংবেদনশীল পদ্ধতি। ই-ভিসা স্কিমটি আরেকটি ব্যর্থ আইটি প্রকল্প যা যুক্তরাজ্যের হাজার হাজার মানুষের জীবন পরিবর্তনকারী হিসাবে পরিণতি হতে পারে।

অনেকেই বলছেন, এ রকম পরিবর্তন আরেকটি  “ডিজিটাল উইন্ডরাশ  কেলেঙ্কারি” সৃষ্টি করতে  পারে এবং সরকারকে ১ জানুয়ারি, ২০২৫ এ কার্যকর হওয়ার আগে এই প্রকল্পটি পুনর্বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করছে।

অনেক বিশেষজ্ঞরাও  কার্যকর হওয়ার আগে এই স্কিমটি বন্ধ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024