সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ০৫:৪১

স্কুলে মোবাইল নিষেধাজ্ঞায় মিলছে না আশানুরূপ ফলাফল

স্কুলে মোবাইল নিষেধাজ্ঞায় মিলছে না আশানুরূপ ফলাফল

স্কুলে মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ করলেই শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক পারফরমেন্স, ভালো গ্রেড ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নতি হবে- এমন কোন সরাসরি প্রভাব পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে ইউনিভার্সিটি অব বার্মিংহামের সাম্প্রতিক এক গবেষণা।

গবেষণা ফলাফলে দেখা গেছে, মোবাইল নিষিদ্ধ স্কুল এবং যেসব স্কুলে মোবাইলের অনুমতি রয়েছে- এই দুই ধরনের স্কুলে শিক্ষার্থীদের ঘুম, শ্রেণীকক্ষের আচরণ, শারীরিক কার্যক্রম বা মোবাইল ব্যবহারের মোট সময়ের কোনো উল্লেখযোগ্য পার্থক্য নেই।

বরং দীর্ঘ সময় ধরে স্মার্টফোন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সময় ব্যয় করায় মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি, কম শারীরিক কার্যক্রম, খারাপ ঘুম, লো গ্রেড এবং শ্রেণীকক্ষে বিশৃঙ্খল আচরণের সাথে সম্পর্কিত।

গবেষকরা জানিয়েছে, ‘দ্যা ল্যানসেট’ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাটি ইংল্যান্ডের ৩০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১ হাজার ২২৭ শিক্ষার্থীর মধ্যে একটি জরিপ করা হয়। যেখানে তুলনামূলক ভাবে মোবাইল নিষিদ্ধ এবং অনুমোদিত স্কুলের শিক্ষার্থীদের আচরণ ও শিক্ষাগত পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করা হয়।

জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, মোবাইল নিষিদ্ধ স্কুল ও মোবাইল অনুমোদিত স্কুলে শিক্ষার্থীদের ঘুম, শ্রেণীকক্ষের আচরণ, শারীরিক কার্যক্রম বা মোবাইল ব্যবহারের মোট সময়ের কোনো উল্লেখযোগ্য পার্থক্য নেই। বরং স্মার্ট ফোন ব্যবহারের দীর্ঘ সময় মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি, কম শারীরিক সক্রিয়তা, লো গ্রেড এবং শ্রেণীকক্ষে বেশি বিশৃঙ্খল আচরণের সঙ্গে সম্পর্কিত।

গবেষণা দলের প্রধান লেখক ড. ভিক্টোরিয়া গুডইয়ার বলেন, আমরা মোবাইল নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে নই, তবে শুধু নিষেধাজ্ঞা দিলেই সমস্যার সমাধান হবে না। বরং শিক্ষার্থীদের ফোন ব্যবহারের সময় কমানোর উপায় বের করতে হবে। তবে এ গবেষণার ফলাফলের বিষয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ভিন্ন মত পোষণ করেছে।

ওয়েলসের ইয়্সগোল অ্যাবারকনওয়াই স্কুলের কর্তৃপক্ষ জানান, মোবাইল ফোন জমা করার ব্যবস্থা চালু করার পর স্কুলে মারামারি ও অনাকাঙ্ক্ষিত ভিডিও ধারণের প্রবণতা কমেছে।

আবার অনেক শিক্ষার্থী বলছে, মোবাইল নিষিদ্ধ থাকায় বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সুযোগ বেড়েছে।

এ বিষয়ে বার্মিংহামের হোলি ট্রিনিটি ক্যাথলিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক কলিন ক্রেহান মনে করেন, শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ও নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ তৈরি করাই মোবাইল ব্যবহারের সঠিক সমাধান।

আবার কিছু শিক্ষক মনে করেন, শিক্ষার্থীরা স্কুলে মোবাইল না পেলেও বাইরে অতিরিক্ত সময় ব্যবহার করছে, যা সমস্যার মূল কারণ।

ব্রিটিশ সরকার মোবাইল ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আরোপের জন্য ইতিমধ্যেই নীতিমালা দিয়েছে, তবে বাধ্যতামূলক কোনো আইন কার্যকর করা হয়নি। এদিকে, গবেষণার ফলাফল বিশ্লেষণ করে সরকার নতুন গবেষণা পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছে, যার নেতৃত্বে রয়েছে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়।

অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছরের নিচে স্মার্ট ফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়েছে। ব্রিটেনেও একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হবে কি না- তা পর্যবেক্ষণ করছে সরকার।

এ গবেষণায় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, শুধুমাত্র স্কুলে মোবাইল নিষিদ্ধ করলেই শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগত উন্নতি বা মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত হবে না। বরং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার মাধ্যমে স্মার্ট ফোন ব্যবহারের সময় কমানো এবং নিরাপদ ডিজিটাল অভ্যাস গড়ে তোলার দিকে নজর দেওয়া জরুরি।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024