বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ কবি কালাম আজাদ বলেছেন, যুগে যুগে বসন্ত প্রভাবিত করেছে কবি মনকেও। বসন্ত নিয়ে কবিতা লিখেছেন অনেকেই। বসন্ত আসার সাথে সাথে প্রকৃতিতে বয়ে চলে দক্ষিণা হাওয়ার মাতাল সমীরণ, বাতাসে পাতা ঝরার শব্দ, সেই সাথে গাছে গাছে নতুন পাতা আর ফুলের সমারোহ। গাছের আড়ালে লুকিয়ে থাকা কোকিলের কুহু তান আবেগী মনকে করে তোলে উদাস। শীতের খোলসে চুপসে থাকা কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া যেন অলৌকিক স্পর্শে জেগে উঠে। পলাশ, শিমুল গাছে লাগে বসন্তের ছোঁয়া।
ছড়াকেন্দ্র- সিলেট ও সৃজনশীল প্রকাশনা সংস্থা পাণ্ডুলিপি প্রকাশন-এর যৌথ আয়োজনে ২৪ ফেব্রুয়ারি সোমবার বিকাল ৪টায় ধোপাদিঘীরপার ওয়াকওয়ে প্রাঙ্গন বসন্তের আড্ডা ও কবিতা পাঠের আয়োজন করা হয়।
ছড়াকেন্দ্র- সিলেট-এর সভাপতি কবি দুলাল শর্মা চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও কবি সাংবাদিক হেলাল নির্ঝর এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন সিলেটের প্রবীণ সাংবাদিক আফতাব চৌধুরী, বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক দৈনিক সিলেট সংলাপ সম্পাদক মুহাম্মদ ফয়জুর রহমান, বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক ও কবি বেলাল আহমদ চৌধুরী, ছয়ফুল আলম পারুল, কবি জাহানারা জায়গীরদার, কবি সৈয়দা হাসনা, কবি শামীমা আক্তার ঝিনু, খানম,কবি ও ছড়াকার শাহাদাত বখত শাহেদ, কবি ও প্রভাষক মাফুজা খানম, রোটারিয়ান তানিয়া আহমেদ, সংগীত শিল্পী মাসুম আহমেদ, কবি কামাল আহমদ, কবি রিপন আহমদ, কুবাদ বখত চৌধুরী রুবেল, কবি ও সাংবাদিক জালাল জয় ও সাংবাদিক ফুল মিয়া প্রমুখ।
বসন্ত আড্ডা ও কবিতা পাঠের আসরে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পাণ্ডুলিপি প্রকাশন- এর কর্ণধার লেখক ও প্রকাশক বায়েজীদ মাহমুদ ফয়সল।
সাংবাদিক আফতাব চৌধুরী বলেন, বসন্ত! প্রেম আর আবেগের নাম। শীতের হিম হিম জড়তায় মানুষ আর প্রকৃতি যখন জুবুথুবু হয়ে থাকে, গাছপালা, আকাশ মাঠঘাট যখন কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকে তখন বসন্তের আগমনে সবকিছু জেগে ওঠে। নতুন করে প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরে পায় সবাই। শুরু হয় বসন্তের গুণগান। এমন মোহময় রূপ বাংলায় কেবল বসন্তেই আসে।
দৈনিক সিলেট সংলাপ সম্পাদক মুহাম্মদ ফয়জুর রহমান বলেন, বসন্ত আগমনের সঙ্গে সঙ্গে আমরাও মেতে উঠি। পৃথিবীজুড়ে বসন্তকে ঋতুরাজ বলা হয়। রং, রূপ আর প্রাচুর্যে অন্য সব ঋতু থেকে আলাদা হওয়ার কারণেই বসন্ত ঋতুরাজ। আর সব ঋতুর চেয়ে বসন্ত একটু আলাদা, একটু আদুরে। বসন্তের রং রূপ অন্য ঋতুর চেয়ে ভিন্ন। লাল টকটকে পলাশ, শিমুল প্রকৃতিতে যেন আগুন ঝরায়। বসন্ত আগমনের সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতির অভূত পরিবর্তন ঘটে। ঢেকে থাকা ফুলের রেণু জেগে ওঠে। ফুলের ঘ্রাণে ছুটে আসে পাখিরা। গায়কের কণ্ঠে সুর ওঠে। সে সুর ছড়িয়ে পরে আমাদের প্রাণে। মুখ খুলে গেয়ে উঠি ’বসন্ত বাতাসে সই গো, বসন্ত বাতাসে…’।
কবি বেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, হয়তোবা সব ফুল এখনো ফোটেনি, হয়তো সব কোকিল এখনো ডাকেনি, হয়তো কোনো প্রেমিক হৃদয় আজও তার প্রেমিকাকে খুঁজে পায়নি তবুও সময়ের পরিক্রমায়, কালের নিয়মে বসন্ত এসেছে। ঋতুরাজের আগমন ঘটেছে। বসন্তের মাঝে এই প্রাণের হিল্লোল, এই উন্মাতাল সুর এসব কি কবির চোখ এড়াতে পারে। তাই বসন্তকে নিয়ে কখনো গান, কখনো কবিতা লেখা হয়েছে যুগে যুগে। বৃক্ষ প্রেমিক কবিগুরু বারবার প্রকৃতির শ্রেষ্ঠ ঋতু, প্রকৃতির রানিকে চিনছেন আপন ঢঙে। উন্মাতাল করা, আবেগে ভাসিয়ে দেওয়া ঋতু বসন্তের আগমনে বাঙালির অধীর আগ্রহের অবসান ঘটেছে।
Leave a Reply