শীর্ষবিন্দু নিউজ: দেশের সর্ববৃহৎ মুসলমানদের দাওয়াতি বৃহত্তম জমায়েত তাবলিগ জামাতের তিন দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমা আজ শুক্রবার শুরু হচ্ছে। পাঁচ স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থার মধ্য দিয়ে গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে আজ বাদ ফজর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে বিশ্ব মুসলিমের অন্যতম বৃহৎ এ ধর্মীয় জমায়েত। আগামী রোববার দুপুরে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ইজতেমার প্রথম পর্ব।
দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে ৩১ জানুয়ারি। ইজতেমায় অংশ নিতে গত বুধবার থেকেই মুসল্লিরা তুরাগতীরে আসতে শুরু করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার মুসল্লিদের ঢল আরও বাড়তে থাকে। ইজতেমায় অংশ নিতে ট্রেন, নৌকা, বাসসহ বিভিন্ন যানবাহনে হাজারো মুসল্লি ইজতেমা মাঠে সমবেত হচ্ছেন। তাঁরা জামাতবদ্ধ হয়ে দলে দলে ইজতেমা মাঠের নির্ধারিত স্থানে (খিত্তায়) প্রয়োজনীয় মালামাল ও ব্যাগ নিয়ে অবস্থান করছেন। গতকাল মুসল্লিদের উদ্দেশে প্রস্তুতিমূলক বয়ান করেন দিল্লির মাওলানা ফারুক হোসেন। তিনি ইজতেমায় আসা মুসল্লিদের তিন দিন অবস্থানের নিয়মকানুনের বয়ান করেন।
গতকাল সকালে ইজতেমাস্থলের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে টঙ্গীর টেলিফোন শিল্প সংস্থা (টেশিস) মাঠে পুলিশের এক ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি এস এম মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান, গাজীপুর জেলার পুলিশ সুপার আবদুল বাতেনসহ পুলিশের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আবদুল বাতেন জানান, ইজতেমা মাঠের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য র্যাব-পুলিশসহ এবার ১০ হাজারের মতো নিরাপত্তাকর্মী কাজ করবেন। টঙ্গী ব্রিজ থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তা, মন্নু গেট থেকে কামারপাড়া পর্যন্ত এবং তুরাগ নদসহ পুরো এলাকাকে পাঁচটি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি সেক্টরে একজন করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের পদমর্যাদার কর্মকর্তার নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাজ করবেন।
প্রতিবছরের মতো এবারও ইজতেমা ময়দানে শতাধিক দেশের বিদেশি মুসল্লি আসবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইজতেমা আয়োজক কমিটির মুরব্বি মাওলানা ফরিদ আহমেদ জানান, বিশ্বের অন্তত ১৩০টি দেশের ৩০-৪০ হাজার বিদেশি মেহমান এবারের ইজতেমা ময়দানে অংশ নেবেন। গতকাল দুপুর পর্যন্ত প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার বিদেশি মেহমান এসেছেন।
ইজতেমায় মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে সরকারের বিশেষ ব্যবস্থায় ২১টি ট্রেন ও ৩০০টি বিআরটিসির বাস চলাচল করবে। টঙ্গী রেল জংশনের স্টেশনমাস্টার হালিমুজ্জামান জানান, ইজতেমায় আসা মুসল্লিদের সুবিধার্থে ২৩ জানুয়ারি থেকেই জামালপুর থেকে টঙ্গী এবং আখাউড়া থেকে টঙ্গী দুটি ট্রেন চলাচল করবে। তবে আখেরি মোনাজাতের দিন ২১টি ট্রেন থাকবে, এমনকি প্রতিটি আন্তনগর ট্রেন টঙ্গী রেল জংশনে থামবে।
গতকাল সকাল ১০টার দিকে টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে সিভিল সার্জনের মিলনায়তনে স্থানীয় হোটেল ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মো. সিফায়েতুল্লাহ মতবিনিময় করেছেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে গাজীপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ সুবাস চন্দ্র সাহা, জেলা সিভিল সার্জন মো. শাহ আলম শরীফসহ এ বিভাগের বিভিন্ন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। ইজতেমার সময় হোটেল, রেস্তোরাঁ তথা খাবার দোকানের মালিক-কর্মচারীদের খাবারের মূল্য না বাড়ানো, পরিচ্ছন্ন পরিবেশ, বাসি-পচা খাবার পরিবেশন না করার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়।