ঢাকা: মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে ৫৫০ পাসপোর্ট চুরি যাওয়ার ঘটনা তদন্ত শেষে দেশে ফিরেছে তদন্ত দল। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের অতিরিক্ত সচিব পবন চৌধুরীকে প্রধান করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত দলটি মালয়েশিয়ায় এক সপ্তাহ অবস্থান শেষে শনিবার দেশে ফেরে। মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্র জানান, পবন চৌধুরীর তদন্ত দলে অন্তর্ভূক্ত ছিলেন বাংলাদেশ দূতাবাসের পলিটিক্যাল কাউন্সিলর সফিকুর রহমান।
দূতাবাসের এক কর্মকর্তা জানান, সৌদি আররে বাংলাদেশ মিশনে কর্মরত অবস্থায় পাসপোর্ট কেলেঙ্কারিতে জড়িত ছিলেন সফিকুর রহমান। সেই সময় অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় তাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে দীর্ঘ দিন তার পদায়ন স্থগিত করে রাখা হয়। বিতর্কিত সফিকুর রহমানকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসে পলিটিক্যাল কাউন্সিলর হিসেবে পদায়ন করার পাশাপাশি পবন চৌধুরীর তদন্ত দলে অন্তর্ভুক্ত করায় সঠিক তদন্ত প্রশ্নবিদ্ধ হবে বলে আশঙ্কা করছেন প্রবাসী বাংলাদেশি ও দূতাবাস কর্মকর্তারা।
এছাড়াও অভিযুক্ত কে এম আতিকুর রহমানকে হাইকমিশনার হিসেবে রেখেও সঠিক তদন্ত হয়নি বলে দাবি সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের। গত ফেব্রুয়ারির গোড়াতেই ৫৫০ পাসপোর্ট চুরির ঘটনা ফাঁস হলে ৪ ফেব্রুয়ারি মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাস প্রধান কে এম আতিকুর রহমান, কমোডোর আবুল বাশারকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির ৭ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার কথা ছিল।
পরবর্তী সময়ে কে এম আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধেও পাসপোর্ট কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়ায় ওই তদন্ত দলের উপর ভরসা না পেয়ে ১৮ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর দফতরের অতিরিক্ত সচিব পবন চৌধুরীকে প্রধান করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত দল পাঠানো হয় মালয়েশিয়ায়। পাসপোর্ট চুরিতে অন্যতম অভিযুক্ত বসির আহমদ গত ১০ ফেব্রুয়ারি কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে আত্মসমর্পণ করলে তাকে পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়। তদন্ত দল বসিরকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পাসপোর্ট চুরির দায়ে আরেক অভিযুক্ত মহসিনকে ধরেও ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কুয়ালালামপুর তদন্ত দলের বিরুদ্ধে। সূত্র জানায়, হাইকমিশনার আতিকুর রহমানের অধীনে গঠিত তদন্ত দল তার প্রিয়ভাজন মহসিনকে ছেড়ে দেয়।
অপর এক সূত্রে জানা গেছে, লোপাট হওয়া পাসপোর্টের সংখ্যা ৫৫০ থেকেও বাড়তে পারে। পাসপোর্ট কেলেঙ্কারির ঘটনায় প্রথম থেকেই স্টকের দায়িত্বে থাকা সূচনা রানী হালদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে আসছিলেন হাইকমিশনার। তবে সূচনা গত ২ জানুয়ারি ছুটিতে যাওয়ার পর এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ মিশনকে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের জবাব দেন নি বা কাজে যোগ না দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেন নি।
সূচনার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ছুটিতে যাওয়ার সময় নিয়ম বহির্ভূতভাবে চ্যান্সারি স্টকের চাবি রেখে যান কমার্শিয়াল উইং এর কর্মচারী মাহমুদুন্নবীর কাছে। গত জানুয়ারিতে দাঁতের চিকিৎসার জন্য ছুটিতে গিয়ে অভিযুক্ত সূচনা রানী হালদার এখনও কি কারণে কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগ দেন নি সে ব্যাপারে কিছুই বলছেন না আতিকুর রহমান।