শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: বঙ্গোপসাগরে আঁতিপাতি করে খুঁজেও মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের নিখোঁজ উড়োজাহাজটির কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। রহস্যের জাল ছড়িয়ে গত ১২ দিন ধরে নিখোঁজ ওই বিমানটির সন্ধানে বাংলাদেশ উপকূলে অভিযান চালানোর পর বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানানো হয়।
২৩৯ আরোহী নিয়ে গত ৮ মার্চ প্রথম প্রহরে আকস্মিকভাবে রাডার থেকে উধাও হয়ে যায় বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজটি। কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিং যাওয়ার পথে ৩৫ হাজার ফুট উঁচুতে আকাশে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হওয়ার পর এটি দিক বদলে ভারত মহাসাগরের দিকে সরে যায় বলে ইঙ্গিত মিলেছে। তার ভিত্তিতেই মালয়েশিয়া সরকারের অনুরোধে পরিসর বাড়িয়ে বঙ্গোপসাগরেও অনুসন্ধান চালানো হয়, যাতে নৌবাহিনীর দুটি ফ্রিগেট ও দুটি বিমান অংশ নেয়।
এই অভিযানের বিস্তারিত তুলে ধরে নৌসদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীর পরিচালক (নৌঅপারেশনস) কমডোর এস এম হাকিম বলেন, ইতোমধ্যে আমরা ছয়টি ব্লক তন্ন তন্ন করে খুঁজেছি, কিন্তু এমন কোনো সূত্র কোথাও পাইনি যাতে বলা যায় যে বিমানটি এদিকে উড়ে এসেছে। তিনি জানান, বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশের সীমানাকে আটটি ব্লগে ভাগ করে নিখোঁজ বিমানের সন্ধানে অনুসন্ধান চলছে। সাগরের ৮৭ হাজার ৫৯ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে নৌবাহিনীর দুটি ফ্রিগেট এবং দুটি মেরিটাইম উড়োজাহাজ দিয়ে অনুসন্ধান চালানো হয়।
বৃহস্পতিবারের মধ্যে বাকি দুটো ব্লকে অনুসন্ধান শেষ হয়ে যাবে, তবে সরকারের পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত আমাদের অনুসন্ধানী জাহাজগুলো সাগরে থাকবে। বিমানটি নিখোঁজ হওয়ার ছয় দিন পর বঙ্গোপসাগরে অভিযান শুরু করে নৌবাহিনীর ফ্রিগেট বিএনএস ওমর ফারুক। পরদিন যোগ দেয় আরেকটি ফ্রিগেট বিএনএস বঙ্গবন্ধু ও নৌবাহিনীর দুটি মেরিটাইম পেট্রোল উড়োজাহাজ। মঙ্গলবার বিএনএস ওমর ফারুকের বদলে যুদ্ধজাহাজ সমুদ্রজয় অভিযানে নামে।
অভিযানের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে কমডোর হাকিম বলেন, আমরা সাগরে চলাচল করা ট্রলার ও জেলে নৌকাগুলো থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করেছি। এছাড়া সাগরের বিভিন্ন অংশে নৌবাহিনীর প্রায় ২০টি জাহাজ বিভিন্ন কারণে মোতায়েন রয়েছে, তাদের সাথেও কথা বলা হয়েছে। সাধারণত সাগরের কোনো অংশে উড়োজাহাজ পতিত হলে নানা ধরনের সূত্র বা চিহ্ণ পাওয়া যায়, যাতে করে পরবর্তীতে উদ্ধার অভিযান চালানো হয়। আমরা এক্ষেত্রে কিছুই পাইনি।
মালয়েশিয়ার উড়োজাহাজটির কোনো সন্ধান পাওয়া না গেলেও বিভিন্ন ধরনের তথ্য প্রকাশিত হওয়ার পর এনিয়ে রহস্য ডালপালা মেলেছে। মাঝরাতে বিমানটি যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হওয়ার পর সকালে একটি উড়োজাহাজকে খুব নিচ দিয়ে উড়ে যেতে দেখার দাবি করেছেন মালদ্বীপ উপকূলের একদল বাসিন্দা। বিমানটি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর দিক বদলে নিচে নেমে এসেছিল বলেও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে। এদিকে থাইল্যান্ড বুধবার জানিয়েছে, মালয়েশিয়ার বিমানটি নিখোঁজ হওয়ার কিছু সময় পর তাদের রাডারে অপরিচিত একটি উড়োজাহাজের অস্তিত্ব ধরা পড়েছিল।